Previous Lesson -- Next Lesson
১. সদ্দুকীদের একটি দল বাপ্তিস্মদাতার কাছে প্রশ্ন করছিলেন৷ (যোহন ১:১৯-২৮)
যোহন ১:১৯-২১
১৯ এটি হলো যোহনের সাক্ষাত্, যখন ইহুদি নেতারা জেরুজালেম শহর থেকে কয়েকজন ইমাম ও লেবীয়কে যোহনের নিকট এই কথা জিজ্ঞাসা করিতে পাঠাইলাম 'আপনি কে'? ২০ যোহন অস্বীকার করিলেন না বরং স্বীকার করিয়া বলিলেন 'আমি ঈসা মসিহ নই'৷ ২১ তখন তারা যোহনকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তবে কে? 'আপনি কি ইলিয়াস?' তিনি বলিলেন, 'না আমি ইলিয়াস নই'৷ তাহারা বলিলেন 'আপনি কি সেই নবী'? উত্তরে তিনি বলিলেন, 'না'৷
বাপ্তিস্মদাতাকে উদ্দেশ করিয়া জর্দান উপত্যকায় একটি পূর্ণজাগরণ ঘটিল৷ হাজার হাজার মানুষ জঙ্গলের রাস্তা দিয়া এবং উঁচু পাহাড়ের উপরে জড় হইল৷ তারা নিচে নামিয়া বাপ্তিস্মদাতার কন্ঠস্বর শোনার জন্য আসিল তাহাকে নতুন নবী হিসেবে জানতে পেরে এবং পাপ মোচনের জন্য তার কাছে বাপ্তিস্ম নিল৷ জনসাধারণ সাধারনত মূর্খ ছিল না, যেমন বোকারা চিন্তা করে, কিন্তু তাদের আগ্রহ ছিল বেহেস্তি নেতৃত্ব পাইবার জন্য৷ তাড়াতাড়ি তারা ক্ষমতা এবং কর্তৃত্বকে উপলব্ধি করতে পারতো, যারা এটার অধিকারী ছিল৷ তারা ধমর্ীয় আচার-অনুষ্ঠানের কথা শুনতে চাইতো না, কিন্তু খোদার সানি্নধ্যে আসতে চাইত৷
ইহুদিদের সর্বোচ্চ ধমর্ীয় আদালতের সদস্যরা যাদেরকে স্যানহেড্রিন বলা সদ্দুকী হয় তারা এই পুনরভু্যদয় সম্পর্কে জানতো৷ তারা ইমামদের কয়েকজনকে এবং কিছু বলিষ্ঠ সাহায্যকারীকে, যারা উত্সর্গের কসাই ছিল, তাদেরকে পাঠাল৷ তারা বাপ্তিস্মদাতাকে এই কথা জিজ্ঞাসা করতে পাঠাল, যদি সে খোদার নিন্দা করে তাহলে তাকে যেন পরিহার করা হয়৷
বাপ্তিস্মদাতা এবং প্রতিনিধিদের মধ্যে এই সভা ছিল আনুষ্ঠানিক এবং বিপদজ্জনক৷ প্রচারক যোহন এই মানুষদেরকে জেরুজালেমের ইহুদি বলে আখ্যা দিলেন৷ এই নামের সাথে তিনি তার সুসমাচারের একটি বিষয়বস্তু তুলে ধরেন৷ কারণ সেই সময় ইহুদিরা আইনের ব্যাপারে খুব কঠিন মনোভাব পোষণ করতো যা ছিল অন্ধগোঁড়ামি এবং ঈর্ষায় ভরা, এই কারণে জেরুজালেম হয়ে উঠেছিল ঈসা মসিহের রুহের বিরোধিতার কেন্দ্রবিন্দু৷ তৌরাতের সকল অনুসারী নয় কিন্তু একদল ইহুদি পুরোহিত বিশেষ করে ফরশিরা প্রত্যেকটি ধর্ম বিষয়ক অগ্রগতিকে শত্রু হিসেবে সর্তকভাবে পর্যবেক্ষণ করতো, যাতে করে তাদের নিজেদের পরিকল্পনা এবং নিয়ন্ত্রণ ভেস্তে না যায়৷ এই কারণেই তারা সিদ্ধান্ত নিল, তাদের প্রশ্ন দ্বারা বাপ্তিস্মদাতাকে ফাঁদে ফেলবার৷
যোহনের কাছে তাদের প্রথম প্রশ্ন ছিল 'তুমি কে'? যার পাশে অনেক মানুষ ঘিরে ছিল এবং যার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছিল৷ কে তোমাকে কথা বলবার অধিকার দিয়েছে? তুমি কি আইন এবং ধর্মশাস্ত্র অধ্যায়ন করেছ? তুমি কি নিজেকে খোদার দ্বারা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে মনে কর অথবা এমনকি তুমি নিজেকে ত্রাণকর্তা হিসেবে দেখ?
বাপ্তিস্মদাতা যোহন তাদের চালাকি বুঝতে পেরেছিলেন এবং তিনি কোনো মিথ্যা কথা বলেননি৷ তারা তাকে নিন্দা করতো এবং পাথর ছুড়ে মারতো এবং যদি সে বলতো 'আমি সেই ত্রাণকর্তা', মানুষেরা তাকে ত্যাগ করতো এবং আর কোন গুরুত্ব দিত না৷ ইব্রাহীমের বংশধরেরাও সেই সময় অনেক দুর্দশা ভোগ করতো এই লজ্জার মধ্য দিয়ে যে তারা রোমীয়দের উপনিবেশ ছিল৷ তারা একজন ত্রাণকর্তাকে প্রত্যাশা করতো, যে তাদেরকে রোমীয়দের গোলামি থেকে মুক্ত করবেন৷
বাপ্তিস্মদাতা প্রকাশ্যভাবে স্বীকার করেন যে তিনি ঈসা মসিহ নন অথবা খোদার পুত্রও নন৷ তিনি এমন কোন খেতাব গ্রহন করেননি যা পাকরুহের বিরুদ্ধে যায়৷ তিনি, বিনম্র এবং বিশ্বস্তভাবে মানুষদেরকে খোদার পথে আহ্বান করেন যাতে করে তার খোদার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সময়মতো তার বাণীর ব্যাপারে নিশ্চিত করেন৷
প্রথম আক্রমণের পরে প্রতিনিধিরা তার কাছে গেল এবং জিজ্ঞাসা করল 'আপনি কি ইলিয়াস'? এই নামটি উল্লেখ আছে মালাখির ৪ : ৫, যেখানে পবিত্র কিতাব বলে, ত্রাণকর্তার আগমণের পূর্বে একজন নবীর আবির্ভাব হবে, ক্ষমতা এবং সাহসিকতার মধ্য দিয়ে, যিনি নবী ইলিয়াসের মতো হবেন এবং যিনি বেহেস্ত থেকে তার শত্রুদের উপর অগি্ন নিক্ষেপ করবেন এবং খোদার অনুমতি নিয়ে একজন মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করবেন৷ প্রত্যেকেই এই নায়ককে তাদের জাতির নেতা হিসেবে গণ্য করেছিল৷ কিন্তু যোহন নিজেকে অবনমিত করে রেখেছিলেন, যদিও এটা সত্য যে, তিনি ছিলেন একজন প্রতিশ্রুত নবী, যার সম্পর্কে পরবতর্ী কলে ঈসা মসিহ সাক্ষ্য দিয়েছিলেন৷ (মথি ১১ : ১৪)
তখন ইমামরা তাকে জিজ্ঞাস করল সে কি সেই নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুত নবী কি-না, যার সম্পর্কে মুসা ভবিষ্যদ্বাণী, করেছিল সে তার মতোই, যাকে একটি নুতন এবং বড় ধরনের চুক্তিপত্র প্রদান করা হবে (দ্বিতীয় বিবরণ ১৮ : ১৫)৷ এই প্রশ্ন করবার কারণ তারা জানতে উত্সুক ছিল, কে তাকে একজন নবীর মতো কথা বলতে পাঠিয়েছে৷ সুতরাং তারা জেদ ধরলো এবং প্রশ্ন করতে লাগল, কে সে এবং তার কি কর্তৃত্ব আছে, এবং সে কি এ কথাগুলো প্রকাশিত কালাম হিসেবে বলছে না তার নিজের থেকে বলছে৷
মুসা নবীর বাপ্তিস্মদাতা পদমর্যাদা এবং তার ভূমিকার ক্ষেত্রে নিজেকে অস্বীকার করলো৷ তিনি খোদার হুকুম ছাড়া খোদার সাথে একটি নুতন চুক্তিনামা বিন্যাস করতে চাননি৷ অথবা তিনি তার জনগণকে নিয়ে সামরিক কায়দায় জয়ী হতে চাননি৷ তিনি প্রলোভনের মধ্যেও বিশ্বস্ত ছিলেন এবং আত্মগর্বিত হননি৷ একই সময়ে তিনি বুদ্ধিমান ছিলেন এবং একান্ত প্রয়োজনীয় কথা ছাড়া তার শত্রুদের কাছে কোন জবাব দেননি৷ এটা গুরুত্বপূর্ণ, যেন আমাদের জীবনে এই নীতিগুলোকে আমরা প্রয়োগ করি৷
প্রার্থনা : প্রভু ঈসা মসিহ, বাপ্তিস্মদাতা যোহনকে এই দুনিয়ায় পাঠাবার জন্য আমরা তোমাকে ধন্যবাদ দেই, যে কখনো গর্বিত হয়নি৷ আমাদেরকে আমাদের গর্বিত চিন্তাধারার জন্য ক্ষমা কর, যেন নিজেদেরকে অন্যদের থেকে বড় মনে না করি৷ আমাদেরকে বোঝচ্ছি যে, আমরা তোমার অযোগ্য দাস এবং কেবল তুমিই একাই মহত্৷
প্রশ্ন: