Previous Lesson -- Next Lesson
৩. ঈসা মসিহ মৃতকে পুনুরুত্থিত করেন এবং দুনিয়ার বিচার করেন (যোহন ৫:২০-৩১)
যোহন ৫:২০-২৩
২০. পিতা পুত্রকে মহব্বত করেন এবং তিনি নিজে যাহা কিছু করেন সমস্তই পুত্রকে দেখান৷ তিনি এইগুলির চেয়ে আরও মহত্ মহত্ কাজ পুত্রকে দেখাইবেন, যেন পুত্রকে সেই সমস্ত কাজ করিতে দেখিয়া আপনারা আশ্চর্য হন৷ ২১. পিতা যেমন মৃতদের জীবন দিয়া উঠান ঠিক তেমনই পুত্রও যাহাকে ইচ্ছা করেন তাহাকে জীবন দেন৷ ২২. পিতা কাহারও বিচার করেন না, কিন্তু সমস্ত বিচারের ভার পুত্রকে দিয়াছেন, ২৩. যেন পিতাকে যেমন সকলে সম্মান করে তেমনই পুত্রকেও সম্মান করে৷ পুত্রকে যে সম্মান করে না, যিনি তাঁহাকে পাঠাইয়াছেন, সেই পিতাকেও সে সম্মান করে না৷
কেমন বিস্ময়কর কাজ এগুলো, যা মানুষের পক্ষে অসম্ভব কিন্তু ঈসা মসিহ সেগুলো সম্পাদন করতে পারেন৷ এ কাজগুলো সম্পাদন করতে পিতা পুত্রকে ভার অর্পণ করেছেন৷ এখানে আমরা দুটো গুনাবলি লক্ষ্য করতে পারি যা পাক-কিতাবে ঈসা মসিহের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছি৷ ইহুদিরা ব্যক্তিটিকে আশা করেছিল যে তাদের কাছে প্রতীক স্বরূপ হয়েছেল; মৃতদেরকে পুনুরুত্থিত করা এবং সত্যিকারভাবে বিচার করা৷ এ দুটো যখন এক জায়গায় ছিল ঈসা মসিহ সেইগুলোকে নিজের ওপর অর্পণ করলো৷ ঈসা মসিহ আগেই তার শত্রুদের উপস্থিতিতে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে তিনি জীবনের প্রভু যিনি বিচার করবেন, এমন কি যদিও তারা তাকে পাগল অথবা খোদা নিন্দুক হিসাবে আখ্যায়িত করেছিল৷ তারা তাকে মেরে ফেলবার সিদ্ধান্ত নিল৷ এই ঘোষণার পর ঈসা মসিহ তাদেরকে পরিবর্তন করতে চেয়েছিল এবং ঠিকভাবে চিন্তা করতে এবং আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হতে অনুপ্রাণিত করতে চেয়েছিলেন৷
আমাদের খোদা ধ্বংসকারী নন, কিন্তু জীবন দান করেন যিনি একজন পাপীর মৃতু্য কামনা করেন না কিন্তু তিনি চান খারাপ পথ থেকে ভালো জীবনে ফিরে আসতে৷ যে কেউ খোদাকে পরিত্যাগ করে সে তার রুহ, আত্মা এবং দেহকে বিনষ্ট করে৷ তত্সত্বেও যে কেউ ঈসা মসিহের কাছে আসে সে পুনরুজীবিত হয় এবং অনন্ত জীবনের অভিজ্ঞতা লাভ করে৷ ত্রাণকর্তা আপনার পুনজর্ীবন এবং জাগরণ কামনা করেন, আপনি কি তার কন্ঠস্বর লক্ষ্য করবেন? অথবা আপনি পাপ এবং অপরাধের জীবন (কর্মকাণ্ড) চালিয়ে যেতে থাকবেন?
অনন্তকাল থেকে বিশ্বব্রহ্মণ্ড সত্যের ওপর নির্মিত হয়েছে৷ এমনকি যদিও লোকেরা তাদের প্রভুর বিষয়ে অমনোযোগী ছিল, একজন অপরজনকে খুন এবং প্রতারণা করছে, তবুও সত্য আপরিবর্তনীয়৷
বিচারের দিন হলো একটি বিরাট হিসাবের দিন৷ ঘোর নীতিবিরোধী কাজ এবং বিশেষ করে বিধবাদের এবং দুর্বলদের ওপর দুর্ব্যবহারের জন্য বেহেশতি প্রতিশোধ নেমে আসবে৷ খোদা সমস্ত বিচারের ভার ঈসা মসিহের কাছে অর্পন করেছেন৷ তিনি সকল মানুষ, ভাষাভাষী এবং ধর্মের বিচার করবেন৷ ঈসা মসিহ একজন নিষ্পাপ মানুষ ছিলেন, তাই তিনি আমাদের মানবিক অবস্থা বোঝেন এবং আমাদের দুর্বলতাগুলি অনুভব করেন৷ তাঁর বিচার যথাযথ৷ যখন তিনি তাঁর মহিমা নিয়ে আবিভর্ুত হবেন, পৃথিবীতে সকল জাতির লোকেরা তখন বিলাপ করবে, কারণ তারা বিচারককে ইচ্ছাকৃতভাবে অগ্রাহ্য করেছে, তাকে ঘৃণা এবং প্রত্যাখ্যান করেছে৷ আপনি কি এটা উপলব্ধি করতে পারেন?
তখন সবাই পুত্রের সামনে নতজানু হবে৷ যারা পৃথিবীতে এবাদত করেনি তারা তাকে ভয়ের সাথে এবং কাঁপতে কাঁপতে সম্মান করবে৷ ঈসা মসিহই সকল ক্ষমতোা, ধন, জ্ঞান, শক্তি, সম্মান, গৌরব ও প্রশংসা পাইবার যোগ্য (প্রকাশিত কালাম ৫ : ১২)৷ তিনি দুনিয়াকে খোদার সাথে পুনরর্মিলিত করেছেন৷ তিনি ছিলেন নম্র মেষশাবক যিনি আমাদের জন্য কোরবানি হয়েছেন৷ খোদা এবং পুত্র প্রেম ও শক্তির সত্বায় একই রকম, শুধুমাত্র কার্যের মধ্যে নয়, কিন্তু যে সম্মান ও ভক্তি তাদের করা হয় তারও যোগ্য৷ এই কারণেই পৃথিবীতে থাকতে ঈসা মসিহ তাকে এবাদত করতে কাউকে নিষেধ করেননি৷ আমরা অবশ্যই পুত্রকে সম্মান করবো যেমন আমরা পিতাকে সম্মান করি৷ আমরা প্রার্থনার মধ্যে পুত্রকে সরাসরি সম্বোধন করতে পারি যেমন আমরা আমাদের বেহেশতি পিতাকে সম্বোধন করি৷
যারা ঈসা মসিহকে প্রত্যাখ্যান করে অথবা তাঁর মর্যাদাহানি করে তারা সকলে স্বয়ং পিতাকে প্রত্যাখ্যান করে৷ খোদা স্বাধীন একটি পুত্রকে মনোনীত করেন৷ আসল কারণটি হলো যে কারণে কেউ ঈসা মসিহের পুত্রত্বকে এবং তার এবাদতকে অস্বীকার করে সেটা হলো তাদের মন্দ চিন্তাধারা৷ তারা তাকে জানতে অনিচ্ছুক এবং তাই খোদাকে তার বাস্তবতার মধ্যে জানতে পারে না৷
যোহন ৫:২৪
২৪. আমি আপনাদের সত্যই বলিতেছি, আমার কথা যে শুনে এবং আমাকে যিনি পাঠাইয়াছেন তাঁহার কথা ঈমান আনে, সে তখনই অনন্ত জীবন পায়৷
জীবন-মৃতু্যর মধ্য দিয়ে শুরু হয় না কিন্তু তা পাক রূহ আপনার ওপর দুনিয়াতেই শুরু হয়৷ এই রুহ আপনার ওপর নেমে আসে কারণ আপনি পিতা এবং পুত্রকে বিশ্বাস করেন৷ ঈসা মসিহের বাক্যগুলির অর্থ সবাই উপলব্ধি করতে পারে না, এমনকি যদিও তারা একথা শুনেছে, তা পড়েছে এবং তার বিষয়বস্তুগুলো বিশ্লেষণ করেছে৷ তারা পুত্রের রহমতের ব্যাপারে কোনো কথা বলবে না অথবা রুহকে অনুস্বরণ করে চলবে না৷ সত্যিকার বিশ্বাস হলো ঈসা মসিহের ওপর আস্থা রাখা এবং তাঁর অনুগত হওয়া৷ ঈসা মসিহের সাথে এই বন্ধনের মধ্যে ঢুকলে আপনি ন্যায্যতা পেলেন, বিচার থেকে মুক্তি পেলেন কারণ আপনার কাজ নয কিন্তু এটা আপনার বিশ্বাস যা আপনাকে রক্ষা করে৷ যারা ঈসা মসিহের কোরবানির মধ্যে মধ্যে আশ্রয় নেয় তারা ঈসা মসিহের ভালোবাসার মধ্যে অবস্থান করে এবং তাদের পাপ সকল মুছিয়া যায় ও তাদের বিবেক বিশোধিত হয়৷ এটা আমাদেরকে খোদার দিকে এগোতে উত্সাহিত করে৷ কারণ নুতন জন্মের মধ্য দিয়ে খোদা আমাদের পিতা হয়েছেন৷ আমাদের পুনর্জন্ম হলো আমাদের ন্যায্যাতার ফল৷
আপনি কি ঈসা মসিহের মহান প্রতিশ্রুতির কথা উপলব্ধি করেছেন৷ আপনি মৃতু্য এবং ভীতি থেকে মুক্ত হয়েছেন৷ ঈসা মসিহের রহমতের মধ্য দিয়ে আপনি চিরস্থায়ীভাবে বেঁচে আছেন৷ আপনার ওপর খোদার ক্রোধ নেমে আসবে না৷
ঈসা মসিহের ওপর আপনার বিশ্বাস আপনাকে রূপান্তরিত করেছে, একটি পবিত্র চিরন্তন জীবন এখন আপনারই৷ ঈসা মসিহের সাথে আমাদের সংযোগ কেবল বুদ্ধিগত নয়, কিন্তু সেটি বাস্তব অস্তিত্বমান এবং অকৃত্রিম৷ ঈসা মসিহের মধ্যে থাকার চেয়ে আর কোনো পরম মুক্তি নেই৷ ২৪. পদকে মুখস্থ করুন এবং তার মদ্যে জীবনকে আবদ্ধ করুন এবং আমরা চিরন্তনভাবে মুখোমুখি একে অপরকে দেখতে পাব৷
প্রার্থনা: পিতা পুত্র এবং পাক-রুহ, আমরা তোমার এবাদত করি, কারণ তুমি আমাদের পাপ সকল ক্ষমা করেছ এবং আমাদেরকে ন্যায্যতা দিয়েছ৷ আমরা বিচারের মুখোমুখি হবো না কারণ তোমার ক্রোধ আমাদের ওপর থেকে তুলে নিয়েছ৷ আমরা তোমার এবাদত করি, কারণ তোমার জীবন আমাদের মধ্যে প্রবাহিত এবং আমাদের জন্য মৃতু্যকে বাতিল করেছ৷ তোমার জন্য আমরা চিরন্তন বেঁচে থাকি৷ তোমার মধ্যে আমাদেরকে অটল রাখ, তোমার নামে মহিমা কীর্তন করার জন্য৷
প্রশ্ন: