Previous Lesson -- Next Lesson
ঙ) মসিহের পঞ্জর বিদ্ধ করন৷ (যোহন ১৯:৩১-৩৭)
যোহন ১৯:৩১-৩৭
সেই দিনটা ছিল ঈদের আয়োজনের দিন৷ পরের দিন ছিল বিশ্রামবার, আর সেই বিশ্রামবারটা একটা বিশেষ দিন ছিল বলে ইহুদি নেতারা চেয়েছিলেন যেন সেই দিনেই লাশগুলো ক্রুশের উপরে না থাকে৷ এজন্য তাঁরা পীলাতের কাছে অনুরোধ করলেন যেন ক্রুশে যারা আছে তাদের পা ভেঙ্গে ক্রুশ থেকে তাদের সরিয়ে ফেলা হয়৷ তখন সৈন্যেরা এসে ঈসা মসিহের সঙ্গে যাদের ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল তাদের দু'জনের পা ভেঙ্গে দিল৷ পরে ঈসা মসিহের কাছে এসে সৈন্যেরা তাঁকে মৃত দেখে তাঁর পা ভাঙ্গল না৷ কিন্তু একজন সৈন্য তাঁর পাঁজরে বর্শা দিয়ে খোঁচা মারল, আর তখনই সেখান থেকে রক্ত আর পানি বের হয়ে আসলো৷ যিনি নিজের চোখে এটা দেখেছিলেন তিনিই সাৰ্য দিয়ে বলেছেন, আর তাঁর সাৰ্য সত্যি৷ তিনি জানেন যে, তিনি যা বলছেন তা সত্যি, যেন তোমরাও বিশ্বাস করতে পার৷ এই সব ঘটেছিল যাতে পাক-কিতাবের এই কথা পূর্ণ হয়, 'তাঁর একখানা হাড়ও ভাঙ্গা হবে না৷' আবার কিতাবের আর একটা কথা এই 'যাঁকে তারা বিঁধেছে তাঁর দিকে তারা তাকিয়ে দেখবে৷
শরীয়তপন্থীগণ মানুষের অনুভূতিকে গুরম্নত্ব না দিয়ে আইনের ওপর কঠোর অবস্থান নেয়৷ মুসানবীর নিয়ম মোতাবেক মৃতদের দেহ রাতের বেলায় অপসারণ করতে হবে৷ তাই এ মতবাদ প্রয়োগ করা হলো অত্র তিনজন সলিববিদ্ধ ব্যক্তিদের ৰেত্রে (সেখানে ঈসা মসিহ অন্যতম)৷ তাদের অনুষ্ঠান পালনের সময় বিকৃত চেহারা দেখার আগ্রহ ছিল না৷ দ্রম্নত শেষকৃত সম্পন্ন করার জন্য পীলাতকে অনুরোধ জানালো৷ যাতে তাদের পা ভেঙ্গে দিয়ে মৃতু্য ত্বরান্বিত করা যায়৷ সলিববিদ্ধ ব্যক্তি কখনোবা তৃতীয় দিনে পুনর্জাত হয়ে উঠতে পারে৷ হাতে পায়ে পেরেক বিদ্ধ করার ফলে সর্বৰেত্রে যথেষ্ঠ রক্ত ঝরার তেমন কারণ থাকে না, সে ভয়ে সৈন্যরা শরীরের কোথাও কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আঘাতে ভেঙ্গে দেয়৷
সৈন্যরা ঈসা মসিহের দেহের কাছে এসে দেখতে পেল তিনি ইতোমধ্যে মারা গেছেন৷ তার কোমল দেহ বেত্রাঘাতেই চরম দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং তার আত্মা জগতের পাপের শোকতাপ এবং পাপের গজবে নিসত্মেজ হয়ে পড়েছিল৷ ঈসা মসিহ নিজের ইচ্ছাতেই মৃতু্য বরণ করেন, যাতে আমাদেরকে খোদার সাথে যুক্ত করে দিতে পারেন৷ ধমর্ীয় কারণে নয় বরং ঈসা মসিহের মৃতু্য সুনিশ্চিতভাবে হয়েছে তা তাদের মুল বিষয় ছিল৷ কোনো এক সৈন্য বলস্নম দিয়ে তাঁর পাঁজর ছিদ্র করে দেখলেন আসলে তিনি মারা গেছেন কিনা৷ তখন রক্ত ও পানি বেরিয়ে আসলো৷ প্রমান হলো পূণ্য শুক্রবারের ছয় ঘটিকার পূর্বেই তিনি মারা গেছেন৷
এ ঘটনা তিনটি বিজয়ের কথা মসিহিদের কাছে প্রকাশ করে৷ প্রথমতঃ শয়তান ইহুদিদের তাড়িত করেছিল ঈসা মসিহের পা ভেঙ্গে দেবার জন্য, যাতে কেউ দাবি করতে না পারে ঈসা মসিহের কোরবানি ঐশি কোরবানি৷ নিসত্মার পর্বের কোরবানিকৃত মেষটি নিখুঁত হতে হবে, কোনো হাড় ভাঙ্গা চলবে না (হিজরত ১২ : ৪৬)৷ খোদা তাঁর পুত্রকে মৃতু্যর মধ্য দিয়েও রৰা করলেন, কেউই গোপনেও বলতে পারে নি তার মনোনয়ন ঐশি নয়৷
দ্বিতীয়দঃ ঈসা মসিহের পঞ্জরে বর্শদ্বারা আঘাত করার প্রমাণ হলো বহুপূর্বে জাকারিয়া নবীর ভবিষ্যদ্বানীর পূর্ণতা যাকরিয়া ১২ : ১০৷ যাকারিয়া ১১ : ১৩ যে বর্ণনা রয়েছে, তিনি কোরবানির মেষের মূল ৩০টি রৌপ্য মুদ্রার অধিক নয়৷ নগন্য মুল্যে ঈসা মসিহকে বিক্রি করা সত্ত্বেও খোদা তাঁর রম্নহ ও রহমত দিয়ে তাকে পুষ্ট করবেন, তাছাড়া দাউদের পরিবারে এবং জেরম্নজালেমের লোকজন প্রার্থনা করবেন যাতে তাদের অনত্মদৃষ্টি খুলে যায় এবং তাকে এবং তার বেহেশতি পিতাকে আসলে চিনে নিয়ে আপন আপন পাপের জন্য তওবা করতে পারে৷ তাদের অনত্মদর্ৃষ্টি না খোলা পর্যনত্ম খোদার প্রকৃত পরিচয় জানতে পারবে না, এবং তার প্রস্তুতকৃত নাজাত যা ঈসা মসিহের মাধ্যমে দত্ত হয়েছে তাও জানতে পারবে না৷ সলিবে বিদ্ধ ব্যক্তিই হলেন পাকরূহ লাভের একমাত্র উপায়৷ যেমন লিপিবদ্ধ আছে 'তারা যাকে হত্যা করেছে তার দিকেই তারা তাকাবে' অর্থাত্ তারই মুখাপেৰী হতে বাধ্য থাকবে৷
তৃতীয়তঃ তার সাহাবিগণ বিশ্বসত্মভাবে তার সাথে ছিলেন এবং সবকিছু অবলোকন করেছেন আর যা কিছু সলিব থেকে বলেছেন তাও তারা গুনতে পেরে দেখা সাৰী হতে পেরেছেন৷ সৈন্যদের ভয়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন নি, সম্ভাব্য মৃতু্যর অথবা ঈসা মসিহের মৃতু্য হতে যাচ্ছে দেখেও তিনি পালিয়ে যান নি৷ তার পঞ্জরে বর্শার খোচা দিতে দেখে তিনি বুঝতে পেরেছেন পিতা পুত্র ও পাকরূহের মহব্বতে গভীরতা গোটা বিশ্বের প্রতি কতটা রয়েছে৷ পিতা-পুত্র ও পাকরূহের ভিত্তিক আমাদের বিশ্বাস উত্পন্ন করে অননত্ম জীবন৷
প্রার্থনা: প্রভু ঈসা মসিহ, সকল প্রকার পাপের শক্তির ওপর তুমি বিজয় অর্জন করেছো৷ তুমি জীবনত্ম রাজা পাকরূহের সমন্বয়ে পিতার রাজ্যে রাজত্ব করে চলছো৷
প্রশ্ন: