Previous Lesson -- Next Lesson
খ) যাদের ওপর তাঁর করুনা রয়েছে তাদেরকেই খোদা বেঁছে নেন, যাকে চান তিনি তার হৃদয় কঠিন করে দেন (রোমীয় ৯:১৪-১৮)
রোমীয় ৯:১৪-১৮
১৪. তাহলে আমরা কি বলব আল্লাহ অন্যায় করেন? মোটেই না৷ ১৫. তিনি মূসাকে বলেছিলেন, আমার যাকে ইচ্ছা তাকে দয়া করব, যাকে ইচ্ছা তাকে মমতা করব৷ ১৬. এটা তাহলে কারও চেষ্টা বা ইচ্ছার ওপর ভরসা করে না, আল্লাহর দয়ার ওপরেই ভরসা করে৷ ১৭. পাককিতাবে আল্লাহ ফেরাউনকে এই কথা বলেছিলেন, আমি তোমাকে বাদশাহ করেছিযেন তোমার প্রতি আমার ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আমার কুদরত দেখাতে পারি এবং সমস্ত দুনয়াতে যেন আমার প্রচারিত হয়৷ ১৮. তাহলে দেখা যায়, আল্লাহ নিজের ইচ্ছামতো কাউকে দয়া করেন এবং কারও দিল কঠিন করেন৷
পয়দায়েশ খন্ডে ৩৩:১১ পদে আমরা দেখতে পাই খোদা মূসা নবীর কাছে যে বিষয় ঘোষণা দিয়েছেন তাতে আমরা খুঁজে পাই, খোদার প্রাধিকার রয়েছে কাউকে আর্শিবাদ দান করার আর তা অবিরত ধারায় তার ওপর বর্ষণ করার, সে হয়তো পাপ করেছে বা না করেছে৷ তাই এটা পরিষ্কার হলো, মানুষের কর্মের ওপর খোদার রহমতের বর্ষণ নির্ভর করে না, কিন্তু একমাত্র সর্বশক্তিমান মাবুদের করুনার ওপর তা নির্ভরশীল৷ মানুষের নাজাত হলো মানুষের গুণাবলি ছাড়াই তা দান করা হয়, কেননা খোদার রহমতের কোনো সীমাপরিসীমা নেই৷
এইক বক্তব্য আমরা দেখতে পাই হিজরত পুস্তকে ৯:১৬ পদে মিশরের বাদশাহ ফেরাউন যিনি মিশরীয় গর্বে গর্বিত ছিলেন, তাকে পবিত্র প্রভু বললেন, 'এ প্রতিজ্ঞা সত্ত্বেও তোমাকে প্রতিষ্ঠা করেছি, এ জন্য যেন আমার ক্ষমতা তোমার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করতে পারি, আর তোমার মধ্য দিয়ে আমার নাম গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে৷' এ ঐশি ঘোষণা পৌলকে অনুপ্রেরণা যোগালো, তিনি লিখলেন, 'তাই যার ওপর খুশি তিনি তার ওপর তাঁর করুনা প্রকাশ করেন, আর যাকে ইচ্ছা তার মন কঠিন করেন (রোমীয় ৯:১৮)
খোদার পবিত্রতার পক্ষে এমনটিই সঠিক৷ যাহোক, খোদা একনায়ক নন৷ তিনি চাচ্ছেন, সকলে নাজাত লাভ করুক, আর সত্যের জ্ঞানে পুষ্ট পরিচিত হয়ে উঠুক (রোমীয় ১১:৩২, ১ তীমথিয় ২:৪, ২পিতার ৩:৯)৷ কেউ যদি খোদার বিরুদ্ধ-আত্মার জন্য আপন হৃদয় খুলে দেয়, অথবা এমন পরিবার গোষ্টি বা সমাজ থেকে জন্মপ্রাপ্ত যারা মসিহের বিরুদ্ধে মতবাদ পোষণ করে, তবে বুঝা যায় খোদা উক্ত হানিকর নেতাকে তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নিন্দা করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন, খোদা কিন্তু তেমন অস্বীকারকারীর মধ্য দিয়েও তাঁর অনন্ত শক্তির পরিচয় তুলে ধরতে সক্ষম৷
পৌলের পত্রের উপরোক্ত আয়াত সমূহের আলোকে কেউবা মনে করেন ইসলাম এ অংশটি বেছে নিয়েছে যথা খোদা যাকে খুশি তাকে ভুল পথে পরিচালনা করেন আর যাকে খুশি তাকে সত্যের পথে হেদায়েত করেন, খোদার পবিত্রতার স্বার্থে সকল মানুষকে ভুল পথে পরিচালনা করতে পারেন, কেননা কেউই ধার্মিক বলে বিবেচ্য নয়৷ তথাপি, খোদা এমন আচরণ করেন না, অন্যান্য ধর্মে যেমন দেখা যায়, কারণ প্রত্যেকের উপর তাঁর করুনা রয়েছে, যে কেউ নিজের বিষয়ে মসিহকে গ্রহণ করেন, কেননা একমাত্র মসিহই আছেন যিনি কখনোই পাপ করেন নাই অর্থাত্ একমাত্র মসিহই হলেন বেগুনাহ৷
কিন্তু যে নিজেকে ইবলিসে সাথে যুক্ত করে রেখেছে, আর ইবলিস হলো মিথ্যার পিতা৷ খোদার চেয়ে টাকা অধিক গুরুত্ব দেয় ও ভালোবাসে, খোদার হাতে তাকে সম্পূর্ণ পতন দেখে আশ্চর্য হাবার কিছুই নেই, আর সে খোদার কালামের অর্থ তাত্পর্য বুঝতে সম্পূর্ণ অক্ষম, যে কথা মসিহ বলেছেন, তার সুসমাচারের মাধ্যমে ইউহোন্না (৮:৪৩-৪৫)৷ খোদা তাঁর সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে স্বাধীন, কিন্তু মানুষ দায়িত্ববোধে নিজেকে নিয়োগ করে তার সত্যিকার অনুতাপ ঘটেছে না মৌখিক লোক দেখানো অনুতাপ তার ওপরে৷
এ বিষয়ে পাঠকের কাছে বিশ্লেষণ করার জন্য আমরা মন্তব্য করতে চাই অবিশ্বাসীদের ওপর নয় কিন্তু রোমে বসবাসরত ইহুদিদের ওপর যাতে তাদের হৃদয়ের কাঠিন্যভাব দূরীভূত হয়৷ তিনি তাদের কাছে বিশ্লেষণ করেছেন, যদিও তারা মনোনীত জাতি তবুও তারা আপন হৃদয় মসিহের সুসমাচারের প্রতি বন্ধ রেখেছে৷ পৌলের এ পত্র সকলের কাছে দর্শণ হিসেবে কাজ করে না, কিন্তু ইহুদিদের কঠিন হৃদয়ের কাঠিন্য দূর করার জন্য এ পত্র লেখা৷
প্রার্থনা: হে বেহেশতি পিতা, আমরা তোমার আরাধনা করি, তুমি মসিহের মাধ্যমে আমাদের মতো পাপীদের বাছাই করেছো৷ আর তোমার সন্তান হবার অধিকার তুমি আমাদের দান করেছো, যদিও তোমার সন্তান হবার আদৌ যোগ্য নই আমরা৷ আমরা তোমার প্রশংসা ও গৌরব প্রকাশ করি তোমার অবিরত আশির্বাদ দানের জন্য, ধন্যবাদ দেই আমাদের হৃদয়ের গভীর থেকে, কেননা তুমি আমাদের হৃদয় কঠিন করোনি বা আমাদের করোনি প্রত্যাখ্যান, আমাদের পাহাড় সমান পাপ অপরাধ থাকা সত্ত্বেও, বিপরীতে তোমার পূতপবিত্র মহান চূড়ান্ত প্রেমে আমাদের কাছে টেনে নিয়েছো৷
প্রশ্ন:
- ৫৯. খোদার কাছে গ্রাহ্য হবার জন্য কেন কেউই যোগ্য নয়? কি কারণে আমরা খোদার কাছে মনোনীত হতে পারি?৬০. ফেরাউনের হৃদয় খোদা কঠিন করলেন কেন? ব্যক্তি গোষ্টি বা পরিবার কীভাবে খোদার বিপরীতে দাঁড়ায়?