Previous Lesson -- Next Lesson
৬. মসিহের মাধ্যেমেই মানুষ অপরাধ, পাপ, মৃতু্যর কবল থেকে পায় মুক্তি (রোমীয় ৮:১-১১)
রোমীয় ৮:৩-৮
৩. মানুষের গুনাহ-স্বভাবের দরুন শরীয়ত শক্তিহীন হয়ে পড়েছিল, আর সেজন্য শরীয়ত যা করতে পারে নি আল্লাহ নিজে তা করেছেন৷ তিনি গুনাহ দূর করবার জন্য নিজের নিষ্পাপ পুত্রকে মানুষের অবয়বে পাঠিয়ে দিলেন এবং তাঁর পুত্রের মৃতু্যর মধ্য দিয়ে গুনাহের বিচার করে পাপের শক্তিকে বাতিল করে দিলেন৷ ৪. তিনি তা করলেন যেন গুনাহ-স্বভাবের অধীনে না চলে পাকরূহের অধীনে চলবার দরুন আমাদের মধ্যে শরীয়তের দাবি-দাওয়া পূর্ণ হয়৷ ৫. যারা গুনাহ-স্বভাবের অধীনে তাদের তাদের মন গুনাহ-স্বভাব যা চায় তাতে আগ্রহী; আর যারা পাক-রূহের অধীন তাদের মন পাকরূহ যা চান তাতে আগ্রহী৷ ৬. গুনাহ-স্বভাব যা চায় তাতে আগ্রহী হবার ফল হল মৃতু্য, আর পাকরূহ যা চান তাতে আগ্রহী হবার ফল হল জীবন ও শান্তি৷ ৭. যে মন গুনাহ-স্বভাব যা চায় তাতে আগ্রহী, সেই মন আল্লাহর বিরুদ্ধে, কারণ তা আল্লাহর শরীয়ত মানতে চায় না, মানতে পারেও না৷ ৮. কাজেই যারা গুনাহ-স্বভাবের অধীন তারা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে পারে না৷
মসিহ এক নতুন নিয়ম প্রতিষ্ঠা করেছেন, কেননা শারীরিক কামনা ও পাপের কবল থেকে ব্যক্তিকে মুক্ত করা সম্ভব ছিল না৷ খোদার পুত্রের মানবরূপে ধারণ করার সময় থেকে উক্ত চুক্তির সময় হলো শুরু৷ দুর্বল মানুষের ওপর রুহানি বিজয় হলো কার্যক্রমের প্রথম ধাপ, মসিহ তাঁর শরীরকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন পাকরূহের দ্বারা যিনি তাঁর মধ্যে সদা করেন বসবাস৷ ফলে মন্দ আত্মার দেয়া অভিযোগ আর কার্যকর রইলো না৷ মসিহের পূতপবিত্র জীবন হলো পাপের বিরুদ্ধে দোষারোপ, আবদ্ধকরণ ও দমন৷
মসিহ সদা-সর্বদা পূতপবিত্র জীবন যাপন করেছেন, তাঁর বেহেশতি পিতার রূহ পাপে তার শরীরে শক্তি অকার্যকর মৃত করে দিয়েছে, যে আত্মা তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে পিতামহদের কাছ থেকে লাভ করেছিলেন৷ তাই তিনি ভ্রান্তি-মুক্ত পাপ-মুক্ত জীবন করেছেন পরিচালনা, আর তাঁর দয়া ও প্রেমে শরীয়তের সবকটা দাবি-দাওয়া তিনি করেছেন পরিপূর্ণ৷ তাঁর জীবনের চূড়ান্ত পর্যায় হলো, যখন তিনি আমাদের পাপভার নিজ স্বন্ধে, নিজ দেহে বহন করলেন, তাঁর মৃতু্যর মাধ্যমে আমাদের আবৃত করলেন খোদার পবিত্রতায়৷ আমাদের তাত্তি্বক অথবা প্রথাগত বিশ্বাসের দ্বারা ন্যায়বান হিসেবে গণ্য করার এ ঐশি বিষয়টিকে বুঝতে পারি না, তবে তা বাস্তব জীবনে ইতোমধ্যে হয়ে গেছে বাস্তবায়িত৷ খোদার ধার্মিকতা ও তাঁর আইনানুগ মহব্বত যা প্রতিষ্ঠিত হয় সত্যালোকে৷ এই মহান প্রেম বিশ্বাসীদের হৃদয়ে ঢেলে দেয়া হয়েছে যেন তারা বলতে সক্ষম হয় 'মসিহ আমাদের মধ্যে বসবাস করেন', তিনি করছেন পরিচালনা, নির্দেশনা দিচ্ছেন ও অনুরোধ করছেন শরীয়ত পরিপূর্ণ করতে৷ একজন মসিহি আচরণে মাংসিক কামনা-বাসনর দ্বারা পাপের জীবনে ডুবে থাকতে পারে না, কিন্তু রুহানি প্রেরণা ও পরিকল্পনা মোতাবেক প্রশান্তি, আনন্দ ও ধন্যবাদের দ্বারা উত্ফুল্ল জীবন যাপন করেন৷
নীতিগত প্রশ্ন আপনাকেও করা হচ্ছে, আপনি কি পাকরূহের নিয়ন্ত্রিত লোক? মসিহ কি আপনার মধ্যে বসবাস করেন? বিশ্বের নাজাতদাতা কি আপনার হৃদয়ে কেন্দ্রীভূত আছেন? তাঁর সলিবের মৃতু্য কি আপনাকে ন্যায়বান করতে পেরেছে, যেন আপনি তার নবীন জীবনে হচ্ছেন পরিচালিত? বিশ্বাস কোনো অনুমান জল্পনা-কল্পনানয়, তা হলো জীবন্ত রুহানি পরাক্রম এবং পবিত্র ব্যক্তির মধ্যে খোদার উপস্থিতি৷
রুহানি ব্যক্তিকে চেনা যায় তার গভীর সংশ্লিষ্টতার ওপর৷ তিনি ক্ষমা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য থাকেন প্রস্তুত৷ আপনি কি শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী? খোদার সাথে পুনর্মিলনের বিষয় নিয়ে আপনি কি প্রচার করে থাকেন, আর তা সকলের কাছে যাতে অগণিত ব্যক্তিবর্গ হয়ে ওঠতে পারে নবজন্মপ্রাপ্ত, হতে পারে খোদার সন্তানে পরিণত, ফলে তার রুহানি জীবন প্রতিষ্ঠা পায় জাগতিক মনুষ্যত্বের মধ্যে আর তারাও যেন রুহানি জীবনের প্রতি হয়ে ওঠতে পারে আগ্রহী?
যাহোক, যারা খোদার রূহকে বাদ দিয়ে চলে তরা রয়ে যায় জাগতিক, দুর্বল, জাটিল চরিত্রের, চিন্তা চেতনায় অপরাধি, আচরণে থাকে ত্রিত্ত্বপাকের বিরুদ্ধে আর মাংসিক আকাঙ্খা অভিলামের মধ্যে থাকে সদাব্যস্ত৷ এমন লোক মৃতু্যর অধিকারী, রয়েছে তার জন্য বরাদ্য খোদার গজব এবং পরিশেষে বিচারের ভয়াবহতা৷ সর্বোপরি জাগতিক লোক খোদার শরীয়তের কাছে আত্মসমর্পণ করতে চায় না, সে হিংসাবশতঃ খোদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে চলে৷ সে, না খোদাকে সন্তুষ্ট করে, না তাঁকে মহব্বত করে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে অনুতপ্ত ও পরিবর্তিতত হয় ততক্ষণে সে মসিহকে বিশ্বাস করে না৷ যে মানুষের হৃদয়ে পাকরূহে উপস্থিতি নেই সে তো পরিষ্কার বিনষ্ট৷ সে ক্রমশঃ ধ্বংস থেকে ধ্বংসের পথে নামতে থাকে৷ অন্যভাবে বলতে গেলে, মহব্বতের রূহ থেকে যারাই দূরীকৃত তারা মসিহের নিজস্ব লোক নয়, সে পরিষ্কার শয়তানের দাসমাত্র৷
অন্যপক্ষে রুহানি ব্যক্তি থাকে সচেতন৷ খোদা তাকে যে শান্তি দিয়েছেন তা নিয়ে থাকেন সজাগ ব্যস্ত, তার শত্রুকেও করে মহব্বত, নিত্যদিন খোদার কাছ থেকে কামনা করে পরাক্রম, প্রতিরক্ষা এবং তার ইচ্ছা সর্বান্তকরণে পালনে থাকে আগ্রহী আর থাকে সকলকে মসিরেহ কাছে আকৃষ্ট করতে যিনি হলেন জীবন ও শান্তির একমাত্র উত্স৷ তারা যেন কেউই ধ্বংস না পায় বরং হতে পারে অনন্ত জীবনের অধিকারী৷ আপনি কি খোদার রূহের দ্বারা পরিপূর্ণ হয়েছেন, তাঁরা দ্বারা কি হচ্ছেন পরিচালিত, আর অহমিকা মুক্ত হয়ে তাঁর মহব্বতের বিষয় উপলব্ধি করতে পেরেছেন৷
প্রার্থনা: প্রভু মসিহ, প্রেমময় খোদা, আমাদের মন হলো অনপুযুক্ত, আমরা নিজেদের জ্ঞানে তোমার রূহকে চিনতে পারি না, বুঝতে পারি না আমাদের প্রতি তোমার প্রেমের বিশালতা৷ তোমার অফুরান রহমতে তোমার ধৈর্য আমাদের মধ্যে ঢেলে দিয়েছো, দিয়েছো তোমার চারিত্রিক বৈশিষ্ট আনন্দ ও আন্তরিকতার সাথে যেন আমরা তোমার প্রশংসা করতে পারি পিতা ও পাকরূহের৷ তোমার শান্তিতে আমাদের ধরে রাখো, যেন পাকরূহের পরাক্রমে আমরা তোমাকে অনুসরণ করে চলতে পারি৷ প্রজ্ঞা দাও, দাও ঐকান্তিকতা সকলকে আহ্বান করার জন্য যারা অদ্যাবধি পার্থিব ভাবধারায় করছে জীবন যাপন, তারা যেন তোমায় সমর্পিত হয়, হয়ে ওঠে পরিবর্তিত, নাজাত প্রাপ্ত ও ধার্মিক৷
প্রশ্ন: