Previous Lesson -- Next Lesson
ক) সনাক্তকরণ ও আশির্বাদ বচন (রোমীয় ১:১-৭)
রোমীয় ১:৭
রোম শহরে যে লোকদের আল্লাহ মহব্বত করেন এবং তাঁর নিজের বান্দা হবার জন্য ডেকেছেন তাদের সকলের কাছে, অর্থাত্ তোমাদেরই কাছে আমি এই চিঠি লিখছি৷ আমাদের পিতা আল্লাহ ও হযরত ঈসা মসিহ তোমাদের রহমত ও শান্তি দান করুন৷
সাহাবিদের আশির্বচন দিয়ে পৌল অধিকাংস পত্র লেখা শুরু করেন, সারমর্ম হলো ধর্মীয় জ্ঞানের বিষয় যা সাহাবি হিসেবে তার ক্ষমতার কেন্দ্রীভূত করণ এবং তিনি যত আশির্বাদ পেয়েছেন সে বিষয়ে বর্ণনাদান, এ সকলই তিনি তাঁর পাঠককুলকে ঢেলে দিয়েছেন৷ তাই আপনিও জ্ঞাত: রহমতের বর্শনের তলে ঢেলে দিন আর বিবেচনা করুন আপনার হৃদয়ে, আপনিও খোদার মধ্যে আসতে পেরে মহাধনি হতে পেরেছেন৷ সাহাবিদের আশির্বাদ আপনার হৃদয়ে ধরে রাখুন, এবং প্রত্যেকটি বাক্যে আনন্দিত হোন৷
সর্বপ্রথম তিনি যে বিষয় উপস্থাপন করতে চেয়েছেন তা হলো সম্পূর্ন রহমত, কেননা আপনি বিনষ্ট এবং ধ্বংসস্তুপ মাত্র৷ কিন্তু খোদা আপনাকে মহব্বত করেন, তিনি আপনার ধ্বংস চান না৷ তার একমাত্র পুত্রের কোরবানির ফলে খোদা আপনার পাপের বিচার না করে আপনাকে সুরক্ষা করেছেন৷ রহমত হলো খোদার মহব্বতের আইনানুগ রূপ৷ পূতপবিত্র ব্যক্তি নিয়ত আপনাকে ধার্মিক বলে বিবেচনা করেন, যদিও আপনি সম্পূর্ণ অযোগ্য ও অধার্মিক তবুও তিনি আপনাকে ধার্মিক বলে গণ্য করেন৷ খোদার সর্বপ্রকার আশির্বাদ কেবল আপনারই জন্য৷ আর আপনার প্রার্থনার জবাব হলো আপনার জন্য অনুকম্পা, কেননা অপনি এ সকল পাবার যোগ্য নন, কেবল খোদার গজব পাবার উপযুক্ত ছিলেন৷
যাহোক, খোদার প্রতি আমাদের অবস্থান বদলে গেছে মসিহের কোরবানির ফলে৷ পূর্বে খোদা এবং গুনাহগারদের মধ্যে ছিল শত্রুতা, কিন্তু এখন শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মসিহের সলিবে মৃতু্যর মধ্য দিয়ে পুনর্মিলনের ফলে৷ সর্বশক্তিমান পূতপবিত্র মাবুদ আমাদের কখনোই ধ্বংস করবেন না৷ মসিহের পুনরুত্থানের পরে তিনি সর্বপ্রথম যে বাক্যটি উচ্চারণ করেছেন তা হলো, 'তোমাদের ওপর শান্তি হোক'৷ শরীয়তের সকল দাবি-দাওয়া তিনি পরিপূর্ণ করেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে আর কোনো আপত্তি নেই খোদার কাছে, কেননা মসিহের পূতপবিত্র রক্ত আমাদের দায়মুক্ত করেছে৷ সত্যিকারের শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটা নতুন যুগের সুচনা হয়েছে, কেননা যাদের পূতপবিত্র করা হয়েছে তাদের হৃদয়ে উক্ত শান্তি বিরাজমান৷
যে কেউ মসিহের রহমত উপলব্ধি করে এবং খোদার সাথে শান্তিতে বসবাস করে, সেই বুঝতে পারে পরম সত্যটুকু, আর তা হলো, আমাদের পিতা সর্বশক্তিমান স্রষ্টা কোনো সন্ত্রাসী নন, যিনি জোর করে আমাদের ভক্তিশ্রদ্ধা আদায় করে ছাড়েন না, বরং তিনি হলেন আমাদের পিতা যিনি আমাদের মহব্বত করেন, আর আমাদের যত্ন নিয়ে থাকেন৷ তিনি আমাদের ত্যাগ করেন না, বরং সবসময় আমাদের বহন করে চলেন৷ ইঞ্জিল শরীফে 'খোদা আমাদের পিতা' এ বাক্যের চেয়ে অধিক সুন্দর আর বাক্য খুঁজে পাওয়া যাবে না৷ ধর্মতত্ত্বের এ মহাজ্ঞান খোদ মসিহ আমাদের জন্য বয়ে এনেছেন৷ খোদার পিতৃত্ত্বের পরিচয় ও ধারণা মসিহিয়াতের নতুন প্রকাশ৷ তাছাড়া, সলিবের প্রধান লক্ষ্য হলো আমাদের পূতপবিত্র করণ, সে কারণে আমাদের দত্তক পুত্র কন্যা হিসেবে গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে, এটা হবে দ্বিতীয় জন্ম, আর শশ্বত জীবন আমাদের মধ্যে থাকবে অনন্তকাল৷ খোদা কেবল আমাদেরই খোদা থাকবেন আর আমরা হবো তার সন্তান৷
আপনি কি ঈসা মসিহকে চেনেন? তাঁর মহত্ব ও বিনম্রতার বিষয় কি আপনি জানতে পেরেছেন? তাঁর ব্যক্তিত্ত্বে তিনি মানুষ এবং খোদা উভয়ই৷ তিনি তাঁর মহিমা প্রত্যাখ্যান করলেন, নিজেকে বিনম্র করলেন কেবল আমাদের নাজাতদানের জন্য যখন গোটা বিশ্ববাসির জন্য পাপের কাফফারা সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ করলেন, তখন তিনি তার পিতার কাছে ফিরে গেলেন৷ তিনি সেখানে পিতার ডান দিকে আছেন সমাসিন৷ তার সম্মান সর্বোচ্চ, তার কারণ একমাত্র তিনিই খোদার সাথে পতিত বিশ্বের সংযোগ স্থাপন করতে পেরেছেন৷ সে কারণে মসিহ খোদার প্রাধিকার লাভ করলেন৷ তিনি নিজেই প্রভু৷ তিনি কি আপনারও প্রভু? আপনার জীবনের ওপর দায়িত্ব কর্তব্য তিনি পালন করতে চান৷ তিনি আপনাকে পবিত্র করতে চান, আলাদা করতে চান এবং প্রেরণ করতে চান যেখানে তিনি খুশিমতো পাঠাতে পারেন৷
প্রার্থনা: হে বেহেশতি পিতা, মসিহের মাধ্যমে তুমি আমার পিতা হয়েছো৷ আমি বিনষ্ট এবং পতিত, তবুও তুমি আমাকে তোমার সন্তান হিসেবে বেছে নিয়েছো৷ আমি মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য, তোমার আরাধনা করি, তোমাকে ভালোবাসি, তোমার জন্য আমি আমার জীবন অর্পণ করি, আমার সকল শক্তি ও সময়, তোমার জন্য এবং তোমার পুত্রের জন্য অর্পণ করি৷ তুমি যেমন চাও তেমনি আমাকে গড়ে তোলো, যেন কোনো কারণে আমি তোমার লজ্জার কারণ হয়ে না দাঁড়াই৷ বরং তোমার পিতৃত্বের বিষয় আচার-আচরণে প্রকাশ করতে পারি৷ তোমাকে ধন্যবাদ জানাই, কেননা তুমি তোমার পুত্র ঈসা মসিহকে আমাদের মত গুনাহগারদের নাজাতদানের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছো৷ অনন্তকালের প্রশংসার মাধ্যমে তোমার আরাধনা করি৷
প্রশ্ন: