Previous Lesson -- Next Lesson
খ) লোকদের ভিতর এবং উচ্চ পরিষদের মধ্যে ঈসা মসিহের ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন অভিমতো (যোহন ৭:১৪-৬৩)
যোহন ৭:৪৬-৪৮
৪৫. যে কর্মচারীদের পাঠানো হইয়াছিল তাহারা প্রধান ঈমামদের ও ফরিশিদের নিকটে ফিরিয়া আসিল৷ তখন তাঁহারা তাহাদের জিজ্ঞাসা করিলেন, 'তাহাকে আন নাই কেন?' ৪৬. সেই কর্মচারীরা বলিল, 'লোকটি যেভাবে কথা বলে সেইভাবে আর কেহ কখনো কথা বলে নাই'৷ ৪৭. ইহাতে ফরিশিরা সেই কর্মচারীদের বলিলেন, 'তোমরা ও কি ঠকিয়া গেলে? ৪৮. নেতাদের মধ্যে বা ফরিশিদের মধ্যে কেহ কি তাঁহার ওপর ঈমান আনিয়াছে? মোটেই না৷
যখন ঈসা মসিহ এবাদতখানার মধ্যে লোকদেরকে শিক্ষা দিচ্ছিলেন, ফরিশিরা জড়ো হচ্ছিল এবং আশা করছিল যে তাদের কর্মচারীরা ঈসা মসিহকে গ্রেফতার করবে এবং তাদের কাছে নিয়ে আসবে৷ প্রধান ঈমামেরা এই কথাটি বহুবচনে ব্যবহৃত হয়, এমনকি যদিও একজন প্রধান ঈমাম সারাজীবন ধরে উচ্চ পরিষদের সভাপতি হিসেবে কাজ করে থাকেন৷ কিন্তু রোমীয় শাসকের এই লোকদেরকে সময়ে সময়ে বরখাস্ত করতো৷ এই কারণে ঈসা মসিহের সময়ে বেশ কিছু প্রধান ঈমামদেরকে রোমীয় শাসক পদচু্যত করে, যারা সবাই যাজকীয় পরিবারের অনর্্তভূক্ত! এই লোকেরা ছিল সন্দুকীয় এবং তারা মুক্ত চিন্তাধারায় চালিত হতো এবং ফরিশিদের আইন কানুনের ব্যপারে সহানুভূতিশীল ছিল না৷
ফরিশিরা পরিষদের মধ্যে ঈমামদের সাথে পাশাপাশি বসতো৷ আইনজ্ঞ হিসেবে তারা গ্রিক চিন্তাধারাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং বিশ্বাসের ভিত্তিতে আইন এবং তাদের কার্যাবলিকে তৈরি করেছিল৷ তারা ছিল কঠিন হৃদয়ের, তারা নিজেদের এবং অন্যদের জন্য কঠোর কুচ্ছ্রতাপূর্ণভাবে খোদাকে সম্মান করতো৷
ফরিশি এবং সন্দুকীয়রা উভয়েই ঈসা মসিহকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য রাগান্বিত হয়েছিল৷ সাহাবিরা তাকে রক্ষা করতে আসেনি অথবা লোকেরা তাকে পাহারাও দেয়নি কিন্তু তার কথা সবার মনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল এবং তাই তারা তাকে বাধা দিতে সাহস করেনি৷ যেহেতু তারা সচেতন ছিল যে তার মধ্যে খোদার ক্ষমতোা প্রবাহিত হচ্ছিল৷
এতে করে ফরিশিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছিল এবং এবাদতখানার রক্ষীদের বিরুদ্ধে চিত্কার করে বলেছিল, 'তোমরাও কি এই প্রবঞ্চকের সাথে যোগ দিয়েছ? পরিষদের কোনো সম্মানিত সদস্যই তার ওপর ঈমান আনে নাই৷ কোনো ন্যায়পরায়ণ বিশ্বাসী এই গালিলীয়কে অনুসরণ করবে না'৷
অনেকেই প্রকৃতপক্ষে ঈসা মসিহকে ভালোবাসতো, কিন্তু তারা ছিল সাধারণ লোক, ঘৃণিত, দুষ্ট অথবা অনৈতিক৷ তিনি টেবিলের উপরে বসেছিলেন এবং তাদেরকে তার উপস্থিতিতে সম্মান করেছিলেন৷ কিন্তু ধার্মিকেরা এই লোকদের অবজ্ঞা করতো এবং তাদেরকে অভিশপ্ত বলে মনে করতো৷ তারা তাদেরকে আইনজ্ঞের দৃষ্টিতে দেখতো৷ বাস্তবিক পক্ষে এমন অনেক ঘৃণিত লোকেরাই ঈসা মসিহকে অনুসরণ করতো তাদের কেউ কেউ বাপ্তিস্মদাতা যোহনের কাছে তাদের পাপসমূহকে স্বীকার করেছিল৷ তাই শাসকেরা লোকদেরকে ঘৃণা করতো, তবে ভুলে গিয়েছিল যে তারা একই ভাষায় কথা বলে এবং একই রীতিনীতির অন্তর্ভুক্ত ছিল৷ সমস্ত লোকেরা একটি একাত্মতা তৈরি করেছিল, যদিও তাদের ভিতরে বিরোধিতা এবং বিভক্তি ছিল৷
যোহন ৭:৫০-৫১
৫০. নিকদিম, যিনি আগে ঈসা মসিহের নিকটে গিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন এই সমস্ত ফরিশিদের মধ্যে একজন৷ ৫১. তিনি বলিলেন, 'কাহারও মুখের কথা না শুনিয়া এবং সে কি করিয়াছে তাহা না জানিয়া কাহাকেও শান্তি দিবার ব্যবস্থা কি আমাদের শরীয়তে রহিয়াছে?' ৫২. ফরিশিরা নিকদিমকে উত্তর দিলেন, 'তুমি ও কি গালিলের লোক? পাক-কিতাবে খুঁজিয়া দেখ, গালিলে কোনো নবীর জন্মগ্রহণ করিবার কথা নাই৷'
তাদের মধ্যে একজন উপস্থিত ছিল যে পরিষদের বিরোধিতার কারণে বিক্ষুব্ধ হয়েছিল৷ সে ছিল নিকদিম যে রাত্রে গোপনে ঈসা মসিহের কাছে আসতো৷ ঈসা মসিহ তাকে পুনর্জন্মের প্রয়োজনীয়তাকে দেখিয়েছিলেন৷ এই লোকটি তখনো ঈসা মসিহের প্রভাবের মধ্যে ছিল এবং তার পক্ষে মধ্যস্ততা করতে চেয়েছিল, প্রকাশ্যে বক্তব্য দেওয়া ব্যতীতই যে ঈস মসিহের পক্ষ নিয়েছিল৷ সে আদালতে আইনের রীতিনীতিকে ব্যবহার করেছিল যা ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে বিচারের রায় দিতে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল৷
যাইহোক, বিচারকেরা এই বিবেকবান লোকটির প্রতি সশব্দে হেসে উঠেছিল৷ এমন কি যদি আদালত বেশিরভাগ সময়ই আনুষ্ঠানিকভাবে চলতো, নির্দোষিকে প্রতারণাপূর্ণভাবে দণ্ডাদেশ দিত৷ ষড়যন্ত্রকারীরা অনুভব করলো যে প্রামানিক তথ্য সিদ্ধান্ত দেয় যে ঈসা মসিহ ছিল একজন ভণ্ড নবী, যেহেতু সে একজন গালিলীয়, এটি এমনই একটি অঞ্চল যা ইহুদিরা ঘৃণা করতো কারণ সেখানে আইন সিথিল ছিল৷ কোনো পাক-কিতাবই নির্দেশ করে না শেষ দিনগুলোতে কোনো প্রতিশ্রুত নাজাতদাতা বা নবী সেখান থেকে আসবে৷ ফরিশিরা বিশ্বাস করলো সে একজন ভণ্ড, যাতে করে তারা নিকদিমকে উপহাস করেছিল যে ঈসা মসিহকে তাদের সামনে উপস্থিত করতে চেয়েছিল এবং তাদেরকে জোর বাক্যে বুঝাতে চেয়েছিল যা নিকদিমকে তিনি আগেই বুঝিয়েছিলেন৷
প্রশ্ন: