Previous Lesson -- Next Lesson
৪. পাক-রূহ ইতিহাসের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সমুহ প্রকাশিত করেন (যোহন ১৬:৪-১৫)
যোহন ১৬:১২-১৩
১২. "তোমাদের নিকট আরও অনেক কথা আমার বলিবার আছে, এখন তোমরা সেইগুলি সহ্য করিতে পারিবে না৷ ১৩. কিন্তু সেই সত্যের রূহ যখন আসিবেন, তখন তিনি তোমাদের পথ দেখাইয়া পূর্ণ সত্যে লইয়া যাইবেন৷ তিনি নিজ হইতে কথা বলিবেন না, কিন্তু যাহা কিছু শুনেন তাহাই বলিবেন, আর যাহা কিছু ঘটিবে তাহাও তিনি তোমাদের জানাইবেন৷
ঈসা মসিহ জানেন এবং তিনি তার প্রিয় সাহাবিদেরকে বেহেশত এবং ভবিষ্যতের গুপ্ত বিষয়গুলি সমন্ধে বলতে চান, কিন্তু আত্মা এবং মন এই সত্যকে সম্পূর্ণভাবে বুঝতে অক্ষম৷ তাই আমরা যুক্তি দিয়ে উপলব্ধি করতে পারি না যে ঈসা মসিহ বেহেস্তে পিতার দক্ষিণ হস্তের উপর বসে আছে, অথচ একই সময় তিনি আমাদের হৃদয়ে অবস্থান করেন৷ একইভাবে আমরা উপলব্ধি করতে পারি না তিন সত্ত্বার মধ্যে খোদা এক৷ মানুষের মস্তিস্ক এটা বুঝতে অক্ষম, কিন্তু পাক-রূহ আমাদের এই দূর্বলতাকে সাহায্য করে এবং আমাদের মনকে আলোকিত করে৷ তিনি আমাদের কাছে ভবিষ্যতের রহস্যকে এবং আমাদের হৃদয়ের গোপন চিন্তাধারাকে প্রকাশিক করতে পারেন কারণ তিনি পবিত্র ত্রিত্বের নিগুঢ় বিষয় সম্পর্কে জানেন৷
ঈসা মসিহ পূর্বেই বলেছিলেন যে, সত্যের আত্মা আসবেন এবং তাদেরকে সকল সত্যের দিকে চালিত করবেন৷ সত্য কি? ঈসা মসিহ বহু বচনে ব্যবহৃত "সত্যগুলিকে" ব্যবহার করেননি, যেমন তিনি পার্থিব বিষয়ে তা বর্ণনা করেন, কিন্তু এক বচনে তিনি বলেছেন আমি-ই সত্য৷ রূহের আগমনের বিষয় প্রকাশিত বাক্য এই অর্থ বহন করে যে তিনি আমাদেরকে ঈসা মসিহের কার্য এবং অপরিহার্য্য বৈশিষ্টের পূর্ণতার দিকে চালিত করবেন৷ ঈসা মসিহ কেবল একজন মানুষই নন কিন্তু পিতা তার মধ্যে আছেন এবং তিনি পিতার মধ্যে আছেন৷ তাই সকল সত্যের দিকে পথ নির্দেশনার অর্থ হলো পিতার বিষয়ে জ্ঞান এবং আমাদেরকে তার ভালোবাসার মধ্যে থাকা এবং অনন্তকাল বেঁচে থাকা৷ সুসমাচারে উল্লেখিত সত্য এই বাক্যটি কেবলমাত্র কোন আইন সম্মত সত্য অথবা নীতিগতভাবে অকাট্য অথবা এমনকি নৈতিক সত্যনিষ্ঠাতাকে বুঝায় না, কিন্তু এর অর্থ আরও বিস্তৃত এবং সকল ঘটনাকে যা সাধারণ এবং বৈশিষ্ট সূচক তা অনর্্তভূক্ত করে৷ এইভাবে পাক-রূহ আমাদেরকে বেহেস্তী সত্যের দিকে চালিত করে যাতে আমরা ত্রিত্বের মধ্যে খোদাকে জানতে পারি এবং তার অলৌকিক ক্ষমতার অভিজ্ঞতা পাই৷
সেই সাথে পাক-রূহ একজন স্বাধীন সত্বা যিনি স্বইচ্ছায় কথা বলেন শোনেন, অথচ একই সময় তিনি পিতার ইচ্ছার পরিপন্থি কিছু করেন না৷ তিনি বিশেষ কোন চিন্তা ধারা নিয়ে আসেন না কিন্তু পিতা যা বলেছেন তাই আমাদের বলেন৷ পবিত্র ত্রিত্বের মধ্যে পারস্পরিক সম্মতি ব্যতিত আর কিছুই নেই যা ভালোবাসার স্বাধীনতার মধ্যে নিহিত৷ তিনি সাক্ষ্যের বিসয়ে বিশ্বস্থ যা তিনি খোদার পুত্রের কাছ থেকে প্রেরণ করেন৷ এইভাবে তিনি চান গোটা জামাতকে ঈসা মসিহের দেহের মত করে গড়ে তুলতে যাতে করে তা ঈসা মসিহের আগমনের সময় পূর্ণাঙ্গ থাকে৷
যোহন ১৬:১৪-১৫
১৪. সেই সত্যের রূহ আমারই মহিমা প্রকাশ করিবেন, কারণ তিনি যাহা আমার নিকট হইতে শুনিবেন তাহাই তোমাদের জানাইবেন৷ ১৫. পিতার যাহা আছে তাহা সমস্তই আমার৷ সেই জন্যই আমি বলিয়াছি, যাহা তিনি আমার নিকট হইতে শুনিবেন তাহাই তোমাদের জানাইবেন৷
পাক-রূহের কাজের পিছনে যে উদ্দেশ্য তা হলো, ঈসা মসিহকে গৌরবানি্নত করা৷ ঠিক যেমন ঈসা মসিহ নিজেকে অস্বীকার করেছিলেন এবং সকল সম্মান কেবলমাত্র পিতার কাছে সর্মপন করেছিলেন, তেমনি পকা রূহ-ও নিজেকে সম্মান দেন না কিন্তু ঈসা মসিহকে তার সকল কার্যাবলীর মধ্যে মহামান্বিত করেন৷ এটা আমাদের অভিজ্ঞতার বিষয়ে নিশ্চুপ থাকতে শিক্ষা দেয় এবং কেবলমাত্র নাজাতদাতা ঈসা মসিহকে গৌরাবানি্নত করতে শেখায়৷ এটা আমাদের ধর্মান্তকরণ নয় যা প্রাথমিকভাবে গুরুত্বপূর্ন৷ কিন্তু ঈসা মসিহের অমূল্য রক্তের মধ্য দিয়ে আমাদের পাপের ধৌতকরণ হলো বেশী গুরুত্বপূর্ণ৷ পাক-রূহের চালনা তার ক্ষমতা এবং উদ্দেশ্যর একটি লক্ষ্য আছে সেটা হলো ঈসা মসিহকে গৌরবানি্নত করা যিনি তার জন্য আমাদেরকে কিনেছেন৷ ঈসা মসিহের প্রেরিতদের সাক্ষ্যের মধ্য দিয়ে পাক-রূহ কার্যকরভাবে কাজ সম্পাদন করে, যখন তারা শ্রোতাদের কাছে ঈসা মসিহের সলিব বিদ্ধতা ও পুনুরুত্থানের কথা উপস্থাপন করে৷
পাক-রূহ নিজে থেকে কোন কাজ সম্পাদন করেন না, কিন্তু ঈসা মসিহ যে কথা বলতে এবং যে কাজ করতে শুরু করেন তা তিনি সম্পাদন করেন৷ তিনি সাহাবিদেরকে ঈসা মসিহের কথা স্মরণ করিয়ে দেন এবং তাদের মধ্যে বেহেস্তী জীবন বয়ে নিয়ে আসেন৷ তার আজ্ঞা পালন করতে তিনি তাদেরকে অনুপ্রেরণা দেন৷ দূরের থেকে আমরা পবিত্র ত্রিত্বের মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্ক দেখতে পাই৷
দুনিয়াতে তার কার্যকালের সময় ঈসা মসিহ বলেছেন, "পিতা আমার থেকে মহত্," কিন্তু তার বিদায়কালীন ভাষনে তিনি বলেছেন, "বেহেস্ত ও দুনিয়ার সকল কর্তৃত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছে," কারণ পিতার সাথে সহভাগীতার মধ্যে তিনি সকলই সৃষ্টি করেছেন৷ পিতা তার নিজের যেমন প্রতিটি পিতাই তার সন্তানদের৷
প্রার্থনা: প্রভূ ঈসা মসিহ, তুমি সলিবের উপর আমাদের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করেছ এবং আমাদের পাপের বোঝা সরিয়ে নিয়েছ৷ তোমার উপচিয়ে পড়া ভালোবাসার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ দেই৷ তোমার পাক-রূহ দিয়ে আমাদেরকে পূর্ণ কর যাতে করে সারা জীবন আমরা তোমার উত্সর্গ ও পুনুরুত্থানকে গৌরবানি্নত করতে পারি৷ অলসতা, ভণ্ডামি ও দাম্ভিকতা থেকে আমাদের মুক্ত কর৷
প্রশ্ন: