Waters of Life

Biblical Studies in Multiple Languages

Search in "Bengali":
Home -- Bengali -- The Ten Commandments -- 07 Fifth Commandment: Honor Your Father and Your Mother
This page in: -- Afrikaans -- Arabic -- Armenian -- Azeri -- Baoule -- BENGALI -- Bulgarian -- Cebuano -- Chinese -- English -- Farsi -- Finnish? -- French -- German -- Gujarati -- Hebrew -- Hindi -- Hungarian? -- Indonesian -- Kiswahili -- Malayalam? -- Norwegian -- Polish -- Russian -- Serbian -- Spanish -- Tamil -- Turkish -- Twi -- Ukrainian? -- Urdu? -- Uzbek -- Yiddish -- Yoruba
ব্যাখ্যা ৬: দশ আজ্ঞা - মানুষকে অপরাধের কবল থেকে রক্ষা করার প্রতিরক্ষা কবজ সম দেয়াল৷ প্রথম খন্ড
সুসমাচারের আলোকে হিজরত পুস্তকের ২০ অধ্যায়ে বর্ণীত দশ শরীয়তের ব্যাখ্যা

০৭ - পঞ্চম আজ্ঞাঃ তোমাদের পিতামাতাকে সম্মান করবে৷



হিজরত ২০:১২
তোমাদের পিতা-মাতাকে সম্মান করে চলবে৷ তাতে তোমাদের মাবুদ আল্লাহর দেওয়া দেশে তোমরা অনেক দিন বেঁচে থাকবে৷'


০৭.১ - পরিবার হলো খোদার দান

পরিবার হলো উচ্চমুল্যের মুক্তাস্বরূপ আর বেহেশতের একটা অংশ স্বরূপ৷ খোদা মানুষ সৃষ্টি করেছেন, নারী ও পুরুষ করে সৃষ্টি করেছেন, এদের মধ্য দিয়ে খোদার গৌরব ও মহ্ববত প্রকাশ পাবে, আর সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে এবং পৃথিবী করবে পরিপূর্ণ৷ পরিবার হলো মানব জীবনের মূলধারা এবং সকল কৃষ্টির ভিত৷ প্রতিরক্ষা দেয় পরিবার, নিশ্চয়তা এবং ঐক্য প্রদান করে এবং নতুন নতুন ধ্যান ধারণার চেয়ে পরিবারের বাধন হলো শক্ত বাধন৷

সকল ধর্মমতবাদ সাধারণত এক মত পোষন করে যে প্রত্যেকের জন্য পিতা-মাতা সম্মানিত হওয়া প্রয়োজন৷ স্বাভাবিক বিষয় হলো এটি, সন্তানেরা পিতা মাতাকে ইজ্জ্বত করবে৷ সমাজতান্ত্রিক যুগে মতবাদের উত্‍কর্ষতার সময়ে, পিতা মাতার প্রতি কর্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন জেগেছিল, তাদের ধারণা স্রষ্টা ও সৃষ্টির বিরুদ্ধে চলে গিয়েছিল আর মানুষের আচরণ বিধি সহজাত হয়ে পড়েছিল৷ পঞ্চম আজ্ঞা দিয়ে খোদা পরিবারকে রক্ষা করেছেন৷ পরিবারের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য খোদাকে আমরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি৷ এর অস্তিত্ব এবং গুঢ় মহব্বতের বাধন ও ঐক্য পরিবারেই পাওয়া যায়৷

পঞ্চম আজ্ঞায় পরিবারের প্রধান, অন্ন, বস্ত্র সরবরাহকারী পিতাকে কেবল সম্মান দিতে বলে নাই, পরিবারের মাতা ও সকল নারীদেরও সম্মান করতে বলেছেন৷ পুরুষের মতো নারীকেও বলা হয়েছেন খোদার সুরত প্রকাশ করার জন্য এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য স্বামীর সাথে সমভাবে পালন করার জন্য আজ্ঞাপিত৷ আশ্চর্যের কোনো কারণ নেই, নতুন নিয়ম ও পুরতন নিয়ম উভয় নিয়মেই পিতাকে যতোটা সম্পান প্রকাশ করা হয় মাতাকেও যেন সমপরিমান সম্মান প্রকাশ করা হয়৷

পরিবার সুরক্ষা করা এবং উন্নতি সাধন করা স্বাভাবিক এবং অবশ্য করনীয়৷ প্রাণী জগতেও বাচ্চারা মায়ের পিছনে পিছনে চলে৷ পাখীরা ডিমে নারী পুরুষ উভয়ই পালাক্রমে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটায়৷ বাচ্চারা যতক্ষণ পর্যন্ত নিজে ধরে খেতে না পারে ততক্ষন পর্যন্ত বাবা মা উভয়ই বাচ্চাদের খাইয়ে থাকে৷ খোদা একটা নিয়ম ও সম্পর্ক সৃষ্টি করে রেখেছেন যা উল্টাতে গিয়ে শাস্তি পেয়ে থাকে৷ তথাপি আজকাল বিদ্রোহী স্লোগান শুনা যায় যার প্রভাব শিশুদের হৃদয় কঠিন করে তোলে৷ 'তোমাদের পিতামাতার বাক্যে কর্ণপাত করো, অথবা তাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করো না৷ পরিবর্তে নিজের বিষয় নিজেই ভাবো৷ নিজে নিজে পরিপূর্ণ করো এবং শিশু কাল থেকে নিজে নিজে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখো' এসকল শিশুদের চোখ অবাধ্যতায় ঘোলা হয়ে গেছে, তাদের মধ্য থেকে আনন্দ উবে গেছে৷ দুঃখজনক হলেও সত্য তাদের হৃদয়ের একটি অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে৷


০৭.২ - পিতা মাতার অবদান বা কোরবানি

পিতা মাতা যৌথভাবে নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলার এক সুযোগ লাভ করে৷ প্রত্যেকটি শিশু বড়ই চমত্‍কার সৃষ্টি৷ সম্ভবতঃ পিতা মাতার পরিকল্পনার বাইরেই সন্তানের উত্‍পাদন হয়ে থাকে৷ যা হোক, পিতা মাতা উভয়েই ঐশি সৃষ্টি লীলা উপভোগ করেছেন৷ প্রভু তাদের সম্মান দেখান, সন্তান মাতৃগর্ভে থাকাকালীন বংশীয় ভাবধারা উত্তরাধিকারী তৈরি করে দেন৷ তাই মানুষের প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাকা প্রয়োজন প্রভুর সম্মুখে, তাকে ধন্যবাদ দেয়া প্রয়োজন প্রত্যেকটি সন্তানের জন্মের জন্য৷

আমাদের মাতা আপন গর্ভে আমাদের বহন করেছেন প্রায় ২৭৫ দিনরাত৷ আমরা তথায় ছিলাম সুরক্ষিত এবং প্রয়োজনীয় পোষকতা পরিবেশন করা হয়েছে নিয়মিতভাবে৷ আমরা তার আনন্দ ক্রোধ, দুঃখ ব্যাথা এবং ক্লান্তির ভাগ পেয়েছি৷ সম্ভবতঃ আমাদের জন্মের পূর্বে মাতা আমাদের জন্য প্রার্থনা করেছেন৷ জন্মদানের বিষয়টি তাকে ব্যথিত ও ভীত করেছে৷

বছরের পর বছর ধরে পিতা মাতা একত্রে আমাদের সংগ দান করেছেন৷ আমাদের অংগ-প্রত্যেঙ্গের প্রবৃদ্ধি লক্ষ করেছে, আমাদের কষ্টও মৃদু হাসিতে তারাও অংশ নিয়েছেন৷ আমাদের বেঁচে থাকা ও প্রবৃদ্ধির জন্য খোদাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন৷ মসিহের ছায়াতলে যদি আমাদের পিতা মাতা বড় হয়ে থাকেন তবে তাঁরা অবশ্যই আমাদের ও বেহেশতি পিতার হাতে সমর্পণ করেছেন৷ তাঁর আজ্ঞার বিষয়ের শিক্ষা দিয়েছেন, আমাদের উত্‍সাহ যুগিয়েছেন ভালো রাখাল ও স্রষ্টার ওপর বিশ্বাস রাখতে৷ এভাবেই তারা আমাদের যত্ন করে বড় করেছেন, ভালোবেসেছেন, আশির্বাদ করেছেন, যা আমরা সবটুকু উপলব্ধি করতে পারি না৷ দিবা রাত্র তাঁরা আমাদের যত্ন নিয়েছেন৷ কাপড় চোপড় ও অন্নজল পরিবেশন করার জন্য বড়ই যত্নবান ছিলেন৷ আমাদের শিক্ষা-দীক্ষার বিসয়ে তারা ব্যস্ত ছিলেন৷ বন্ধুর মতো সংগ দিয়েছেন৷ আমাদের অসুস্থতার সময় এবং জ্বরকষ্টের সময় তারা উদ্বিগ্নের সাথে নজর রাখতেন, বসে থাকতেন বিছানার পাশে৷ আমাদের আনন্দে তারাও হতেন আনন্দিত, কষ্ট পেতেন যখন আমরা কষ্ট পেতাম৷


০৭.৩ - পারিবারিক সমস্যা

পিতা মাতা ও সন্তানদের মধ্যে একটা পারষ্পারিক বিশ্বাস ও প্রেমের বন্ধন থাকে যা সহজেই দৃষ্ট হয়৷ তথাপি আমরা তো আর বেহেশতে বাস করি না, কোনো সন্তানই নিজে নিজে ভাল হয়ে ওঠে না, এ কারণে পিতা মাতা প্রভুর কাছে জবাবদিহী৷ তাই বয়স্ক এবং যুব সমপ্রদায় খোদার রহমতে বাস করে আর প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকে ক্ষমার মাধ্যমে৷ পারষ্পারিক ক্ষমা ছাড়া পরিবারে স্থায়ী শান্তি থাকতে পারে না৷ ধৈর্য্যছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়৷ আপন আপন অপরাধ স্বীকার করতে হবে এবং বিনম্রভাবে ক্ষমা চাইতে হবে৷ ঐ শিশুরাই আশির্বাদপ্রাপ্ত যারা পিতা মাতার প্রেম ও ক্ষমার মধ্যে বড় হয়৷

এক্ষেত্রে পিতা মাতার একার উপরই পুরো দায়িত্ব বর্তায় না সন্তানকে ধার্মিকতা ও প্রেমের পথে গড়ে তুলতে, বরং মসিহের দায়িত্ব রয়েছে তাদের গড়ে তোলার জন্য, কেননা আশির্বাদের নিমিত্তে তিনি বলেছেন, সকল শিশুদের আমার কাছে নিয়ে আস৷ মসিহের মৌল বিষয় শিক্ষা দিতে হবে সন্তানদের আর এ দায়িত্ব বর্তায় পিতা মাতার উপর৷ মসিহের ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, প্রতিজ্ঞা সন্তানদের হৃদয়ে ছাপ ফেলতে হবে৷ পিতা মাতা উভয়ই দায়ী তাদের শিশুদের ধমর্ীয় শিক্ষা দানের জন্য৷ তারা তাদের নিজেদের বিশ্বাস তাদের হৃদয়ে চাপিয়ে দিতে পারেন না, পরিচালনা দান করতে হবে প্রভুর শিক্ষার আলোকে; তাদের পরিচালনা দান করতে হবে তার আজ্ঞা সকল যেন তারা জানতে পায় এবং তাদের হৃদয়ে যেন ঐ সকল শিক্ষার একটা ছাপ পড়ে৷ প্রত্যেকটি শিশু নিজে নিজে বেঁছে নিবে খোদার পক্ষে বা বিপক্ষে থাকবেন৷ শিশুদের বুঝতে হবে তাদের পিতা মাতার ওপর যে আশির্বাদ দত্ত হয়েছে তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বইতে থাকবে৷

পিতা মাতার উচিত হবে না সন্তানদের অলস করে গড়ে তোলা অথবা অতি শাসনে নষ্ট করে দেয়া৷ যা কিছু বয়সের তুলনায় খুবই কঠিন তা তাদের করতে বাধ্য করা ঠিক নয়৷ শিশুকে শিশুর মতো থাকতে দিতে হবে৷ স্কুলের পাঠ ও বৃত্তিমুলক শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু শিশুকে গড়ে তোলার জন্য একটা চাপ প্রদান করা ঠিক নয়৷ তাদের মধ্যে খোদা ভীতি শিক্ষা দেয়া বড়ই প্রয়োজন, প্রয়োজন তাদের নির্মাতার প্রতি মহব্বত থাকা৷ ফলে তাদের বিবেক, ঐক্য, সাধুতা, প্রজ্ঞা এবং পবিত্রতা সৃষ্টি হবে৷ পিতা মাতার প্রচুর সময় ব্যয় করা উচিত সন্তানদের প্রতি৷ তাদের সমস্যা ও জিজ্ঞাসার প্রতি সঠিক মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন, সর্বপরি নবজন্ম লাভ করতে হবে, ফলে মসিহের সাথে তারা জীবন যাপন করতে সক্ষম হবে৷

সন্তানদের উঠতি বয়সে পিতা মাতার সাথে বিতর্কিত বিষয়ে মোকাবেলা করে থাকে৷ এমন প্রবৃদ্ধি তাদের স্বাধীনচেতনা করে তোলে যা প্রবৃদ্ধির কারণে, তা তিরষ্কার বা বিতর্কিত করে তোলা ঠিক হবে না৷ পিতা মাতা পূর্ব থেকে যদি পিতা পুত্র পাকরূহের হাতে ুতলে দিয়ে থাকেন, তবে ধৈর্যসহ তাদের সঙ্গ দিতে পারেন ঐসকল ক্রান্তিকালে, বেত্রাঘাত না করেও৷ ইতোমধ্যে, টিনেজারদের বইপত্রের প্রয়োজন নিজেরা পড়ে নিজেরা শিখতে পারে অনেক কিছু৷ তাদের সুন্দর মনের বন্ধুর প্রয়োজন, টেলিভিশনের ভালো গঠনমুলক ছবি দেখা দরকার এবং মসিহিদের দলে যারা কিতাবুল মোকাদ্দাসের ওপর অধ্যয়নরত থাকতে পারে৷ পুরাতন পদ্ধতি ব্যবহার এ বয়সে হিতে বিপরীত ফল বয়ে আনে, বিদ্রোহী করে তোলে৷ মনের কঠিন অবস্থা সৃষ্টি করে ফলে তাদের হৃদয় দুয়ার চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷

পিতা মাতা হিসেবে মসিহের সাবধানবাণী আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, 'আমার উপর ঈমানদার এই ছোটদের মধ্যে কাউকে যদি গুনাহের পথে নিয়ে যায় তবে তার গলার একটা বড় পাথর বেঁধে তাকে সাগরের গভীর পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া বরং তার পক্ষে ভাল' 'মথি ১৮:৬'৷ 'কিন্তু যদি সে না শোনে তবে অন্য দু'এজনকে তোমার সঙ্গে নিয়ে যেয়ো, যেন দুই বা তিনজন সাক্ষীর কথায় এই সব বিষয় সত্য বলে প্রমাণিত হয়৷' 'পাপে ফেলা' বলতে বুঝা যায় না বিরোধিতার প্রতিক্রিয়া অথবা ক্রোধ, কিন্তু ভুল পথে চালিত করা যেমন মিথ্যা কথা বলানো, চুরি করতে চালিত করা, তাদেরকে বিশেষ বিশেষ পাপ কাজে ঠেলে দেয়া কঠোর সাবধানতা না দিয়ে৷ সঠিকভাবে গড়ে তোলা সম্ভব যদি খোদা ভয় ও প্রেম তাদের হৃদয়ে কাজ করতে থাকে৷

বর্তমানকার সুসভ্য সমাজ, বিজ্ঞানের বিকাশের যুগে আধুনিক সন্তানদের তুলনায় পিতা মাতাকে মনে হতে পারে পশ্চাত্‍পদ সেকেলে৷ উন্নয়নশীল দেশে পিতা মাতা হয়ত লেখা পড়া জানে না৷ তার অর্থ এ হতে পারে না, সুশিক্ষিত সন্তানেরা পিতা মাতাকে নিয়ে ঠাট্টাতামাশা করবে বা নিজেদের শিক্ষার কারণে গর্ব বোধ করবে৷ তেমন আচরণ কেবল অসম্মানই নয়, তা হবে অবোধ মুর্খতা মাত্র৷ কেবল পড়তে ও লিখতে পারাটাই প্রমান করে না যে সে কতোটা জ্ঞানি অথবা মূল্যবান ব্যক্তি৷ উচ্চশিক্ষা কোনো ছাত্রের ভালো স্বভাব ও পবিত্রতা বাড়ায় না৷ পিতা মাতার প্রাধিকার নির্ভর করে না, কতোটা উচ্চডিগ্রি অর্জন করেছে অথবা কত টাকা তারা জমা করতে পেরেছে৷ তাদের প্রাধিকার নির্ভর করে সন্তানদের জন্য কতোটা সময়, প্রার্থনা, অনুরোধ, উপরোধ করেছে প্রভুর দরবারে, রহমতের দ্বারে৷ খোদার পিতৃত্ত্ব পিতা মাতার হৃদয়ে স্নেহেপূর্ণ মহব্বত পৌছে দেন অনবরত৷ মসিহের কোরবানি নিঃশর্ত সেবা দেবার ও ত্যাগের মহিমা সৃষ্টি করে পিতা মাতার হৃদয়ে সন্তাদের প্রতি৷


০৭.৪ - পঞ্চম আজ্ঞার পরিপূর্ণতা

কী করে সন্তানেরা পিতা মাতাকে সম্মান করবে? আমাদের বিবেক আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় তাদের সম্মান ও মহব্বত করার জন্য, কেননা যতজনকে আমরা জানি অথবা এ বিশ্বে যাকিছু আমাদের আছে সবকিছুর উর্দ্ধে তাদের অবস্থান৷ এটা নির্ভরতা ও বাধ্যতা প্রয়োজন নিজেদের অস্বীকার করে দূরবতর্ী লক্ষ্যের দিকে নজর না দিয়ে৷ কোনো সন্তানের কখনো পিতা মাতাকে প্রহার করা উচিত নয়৷ পরিবারের লক্ষবিন্দু সন্তান নয় বরং একমাত্র প্রভু৷ মসিহ আমাদর শিক্ষা দিয়েছেন আশির্বাদ পুষ্ট পরিবারের উপায়, তিনি বলেছেন, 'মনুষ্যপুত্র সেবা পেতে আসেন নাই বরং সেবা করার জন্যই এসেছেন মথি ২০:২৮৷ 'মনে রেখো, ইবনে-আদম সেবা পেতে আসেন নিং বরং সেবা করতে এসেছেন এবং অনেক লোকের মুক্তির মূল্য হিসেবে তাদের প্রাণের পরিবর্তে নিজের প্রাণ দিতে এসেছেন৷' খোদার পুত্র উত্‍সাহিত করেছেন পিতা মাতা ও সন্তানেরা যেন এ নিয়ম ভালোভাবে এ নীতি পারিবারিকভাবে পালন করে চলে তাদের নিত্য দিনের জীবনে৷

সন্তানেরা যখন বড় হয় এবং নিজ নিজ পরিবার পরিজন গড়ে তোলে তখন পিতা মাতার প্রতি তাদের দায়িত্ব কর্তব্য শেষ হয়ে যায়? না! পিতা মাতা বয়স্ক হলে পর শারীরিক ও মানসিকভাবে তারা দুর্বল হয়ে যায়, তখন সন্তানদেরর তরফ থেকে তাদের সান্ত্বনার প্রয়োজ পড়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি৷ বয়স্ক পিতা মাতার প্রতি সন্তানদের সময়ের একটা অংশ দিতে হয় যেমন তারাও যখন শৈশবে ছিল তখন পিতা মাতা সময় অর্থ শ্রম ব্যয় করেছে তাদের গড়ে তুলতে৷

পঞ্চম আজ্ঞা হলো, সর্বাগ্রে খোদার আইনানুগ পিতৃত্বের পরিচয় আমাদের কাছে তুলে ধরা৷ যে কেউ পিতা মাতার প্রতি সদয় আচরণ করে সে এই পৃথিবীতে প্রাতিজ্ঞাত দীর্ঘ জীবন লাভ করে৷ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকে না, সাথে থাকে আশির্বাদের ফল্গুধারা৷ যখনই পিতা মাতার মর্যাদা হয় সুরক্ষিত এবং তারা ও সন্তানগণ একত্রে বসবাস করে তখনই এ আজ্ঞার পরিপূর্ণতা উপভোগ করতে পারে৷

পিতা মাতা এবং যারা দায়িত্বে নিয়োজিত আছে তাদের তুচ্ছজ্ঞান করা খোদা নিষেধ করে দিয়েছেন৷ নিষেধের মধ্যে পড়ে অমর্যাদা, অবিচার, ভন্ডামি ও প্রতারণা৷ মসিহ কি বলেন নাই, 'এর জবাবে বাদশাহ তখন তাদের বলবেন, আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আমার এই ভাদের মধ্যে সামান্য কোন একজনের জন্য যখন তা করেছিলে তখন আমারই জন্য তা করেছিলে' (মথি ২৫:৪০)৷ আপনাদের কি মনে আছে আবসালোম যখন তার পিতা দাউদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল? মৃতু্যর মাধ্যমে 'শামুয়েল তালুতকে বললেন, 'মাবুদ তাঁর বান্দা বনি-ইসরাইলদের উপরে তোমাকে রাজপদে অভিষেক করবার জন্য আমাকে পাঠিয়েছিলেন৷ এখন তুমি মাবুদের কথায় কান দাও৷ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন, 'বনি ইসরাইলরা মিসর থেকে চলে আসবার পথে আমালেকীয়রা তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল বলে আমি তাদের শাস্তি দেব৷ এখন তুমি গিয়ে আমালেকীয়দের আক্রমণ করবে এবং তাদের যা কিছু আছে সব ধ্বংস করে ফেলবে; তাদের প্রতি কোনো দয়া করবে না৷ তাদের স্ত্রী-পুরুষ, ছেলে-মেয়ে, দুধ খাওয়া শিশু, গরু-ভেড়া, উট, গাধা সব মেরে ফেলবে৷ তালুত তখন লোকদের টলায়ীম শহরে ডেকে জমায়েত করলেন৷ তাতে ইসরাইলের পদাতিক সৈন্যের সংখ্যা হল দুই লক্ষ এবং এহুদা গোষ্টির সৈন্যের সংখ্যা হল দশ হাজার৷ তালুত আমালেকীয়দের শহরের কাছে গিয়ে সেখানকার শুকিয়ে যাওয়া নদীর খাদের মধ্যে ওত্‍ পেতে রইলেন৷ তিনি কেনীয়দের বললেন, বনি-ইসলাইলরা যখন মিসর থেকে বের হয়ে এসেছিল তখন তোমরা তাদের প্রতি দয়া দেখিয়েছিলে৷ তোমরা আমালেকীয়দের মধ্য থেকে অন্য কোথাও চলে যাও, যাতে আমালেকীয়দের সংগে আমি তোমাদেরও ধ্বংস করে না ফেলি৷ তখন কেনীয়রা আমালেকীয়দের মধ্য থেকে চলে গেল৷ তালুত তখন হবীলা এলাকা থেকে মিসরের পূর্ব দিকে শূর মরুভূমি পর্যন্ত সমস্ত আমালেকীয়দের হারিয়ে দিলেন৷ তিনি আমালেকীয়দের বাদশাহ অগাগকে জীবিত অবস্থায় ধরলেন এবং অন্য সব লোকদের হত্যা করলেন৷ কিন্তু তালুত ও তাঁর সৈন্যেরা অগাগকে বাঁচিয়ে রাখলেন এবং আমালেকীয়দের ভাল ভাল গরু, ভেড়া, মোটাসোটা বাছুর এবং ভেড়ার বাচ্চা, এক কথায় তাদের যা কিছু ভাল ছিল সেগুলো তাঁরা বাঁচিয়ে রাখলেন৷ সেগুলোকে ধ্বংস করে দিতে তাঁরা রাজী হলেন না, কিন্তু অকেজো এবং রোগাগুলোকে তাঁরা একেবারে শেষ করে দিলেন৷ তখন মাবুদের এই কালাম শামুয়েলের উপর নাজেল হল, তালুতকে বাদশাহ করাটা আমার দুঃখের কারণ হয়েছে, কারণ সে আমার কাছ থেকে সরে গেছে এবং আমার হুকুম অমান্য করেছে৷ এই কথা শুনে শামুয়েল উত্তেজিত হলেন এবং গোটা রাতটা তিনি মাবুদের কাছে ফরিয়াদ জানিয়ে কাটালেন৷ পরদিন খুব ভোরে উঠে শামুয়েল তালুতের সংগে দেখা করতে গেলেন৷ সেখানে তাঁকে বলা হল যে, তালুত কর্মিল পাহাড়ে গিয়ে নিজের সম্মানের জন্য সেখানে একটা স্তম্ভ তৈরি করবার পর গিলগলে চলে গেছেন' (১শমুয়েল ১৫:১-১২)৷ 'তালুতের সংগে দাউদের কথাবার্তা আর দাউদের প্রাণ যেন একসংগে বাঁধা পড়ে গেল৷ তিনি দাউদকে নিজের মতই ভালোবাসতে লাগলেন৷ তালুত সেই দিন থেকে দাউদকে নিজের কাছে রাখলেন; তাঁর বাবার কাছে আর তাঁকে ফিরে যেতে দিলেন না৷ দাউদকে নিজের মতো ভালোবাসতেন বলে যোনাথন তাঁর সঙ্গে একটা চুক্তি করলেন৷ তিনি তাঁর গায়ের উপরকার লম্বার কোর্তা খুলে দাউদকে দিলেন, আর তাঁর যুদ্ধের পোশাক, এমন কি, তাঁর তলোয়ার, ধনুক ও কোমর বাঁধনিও তাঁকে দিলেন৷ তালুত দাউদকে যেখানে পাঠাতেন দাউদ সেখানে যেতেন এবং বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে সফলতা লাভ করতেন৷ সেজন্য তালুত তাঁকে সৈন্যদলের একজন সেনাপতি করলেন৷ এতে সমস্ত লোক খুশি হল এবং তালুতের কর্মচারীরাও খুশি হল৷ দাউদ সেই ফিলিস্তিনী জালুতকে হত্যা করবার পর লোকেরা যখন বাড়ী ফিরে আসছিল তখন ইসরাইলের সমস্ত গ্রাম ও শহর থেকে মেয়েরা নেচে নেচে আনন্দের গান গেয়ে এবং খঞ্জনী ও তিনতারা বাজাতে বাজাতে বাদশাহ তালুতকে সালাম জানাতে বের হয়ে আসল৷ তারা নাচতে নাচতে এই গান গাইছিল, তালুত মারলেন হাজার হাজার, আর দাউদ মারলেন অযুত অযুত৷ এই গান শুনে তালুতের খুব রাগ হল৷ তিনি অসন্তুষ্ট হয়ে বললেন, ওরা দাউদের বিষয়ে অযুত অযুতের কথা বলল অথচ আমার বিষয়ে বলল হাজার হাজার৷ এরপর রাজ্য ছাড়া দাউদের আর কি পাওয়ার বাকী রইল? সেই সময় থেকে তালুত দাউদকে হিংসার চোখে দেখতে লাগলেন৷ পর দিন আল্লাহর কাছ থেকে একটা খারাপ রূহ তালুতের ওপর আসল৷ তিনি নিজের বাড়ীর মধ্যে আবোল-তাবোল কথাবার্তা বলতে লাগলেন৷ তখন দাউদ অন্যান্য দিনের মতো তাঁর সামনে বীণা বাজাতে লাগলেন৷ তালুতের হাতে ছিল একটা বর্শা৷ তিনি মনে মনে বললেন, আমি দাউদকে দেয়ালের সঙ্গে গেঁথে ফেলব৷ এই ভেবে তিনি বর্শাটা ছুঁড়ে মারলেন, কিন্তু দাউদ দু'বার তা এড়িয়ে গেলেন৷ তালুত দাউদকে ভয় করতে লাগলেন, কারণ মাবুদ দাউদের সঙ্গে ছিলেন কিন্তু তালুতকে তিনি ছেড়ে গিয়েছিলেন৷ সেজন্য তালুত দাউদকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিলেন এবং তাঁকে সৈন্যদলে হাজারপতির পদে নিযুক্ত করলেন৷ তাতে দাউদ সৈন্যদলের নেতা হয়ে তাদের পরিচালনা করতে লাগলেন৷ মাবুদ তাঁর সংগে ছিলেন বলে তিনি কিছুতেই বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে সফলতা লাভ করত লাগলেন৷ দাউদ বেশ সফলতা লাভ করেছেন দেখে তালুত তাঁকে ভয়ের চোখে দেখতে লাগলেন৷ কিন্তু ইসলাইল ও এহুদার সমস্ত লোক দাউদকে ভালোবাসত, কারণ সৈন্যদের নেতা হয়ে তিনি তাদের পরিচালনা করতেন৷ তালুত একদিন দাউদকে বললেন, আমার বড় মেয়ে মেরবকে আমি তোমার সংগে বিয়ে দেব৷ তুমি কেবল আমার পক্ষে থেকে বীরের মতো মাবুদের জন্য যুদ্ধ করবে৷ কিন্তু তালুতের মনের কথাটা ছিল এই যে, তিনি দাউদের ওপর হাত না উঠালেও দাউদ যেন ফিলিস্তিনীদের হাতে মারা পড়ে৷ দাউদ তালুতকে বললেন, আমি বা কে আর আমার পরিবার ও ইসরাইলের মধ্যে আমার বাবার বংশই বা এমন কি যে, আমি বাদশাহর জামাই হতে পারি' (১শমুয়েল ১৮:১-১৮)৷

হিজরত ২১:১৫-১৭ পিতাকে কিংবা মাকে যে আঘাত করে তাকে অবশ্যই হত্যা করতে হবে৷ যদি কেউ কাউকে চুরি করে নিয়ে এসে বিক্রি করে দেয় কিংবা যদি তাকে তার সঙ্গে পাওয়া যায়, তবে অবশ্যই তাকে হত্যা করতে হবে৷ যার কথায় মা-বাবার প্রতি অস্মান থাকে তাকে অবশ্যই হত্যা করতে হবে৷ মেসাল ২০:২০ যার কথায় পিতা কিংবা মায়ের প্রতি অশ্রদ্ধা থাকে, ভীষণ অন্ধকারে তার জীবন-বাতি নিভে যাবে৷ দ্বিতীয় বিবরণী ২১:১৮-২১ বলেছে যে কেউ পিতা মাতার বিরোধিতা করে, আর তাদের কৃত অপরাধের জন্য অনুতাপ করে না, ঐ সন্তানেরা গোটা সমাজের জন্য ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷ প্রাচীন কাল থেকে অদ্য পর্যন্ত সন্তানদের বাধ্যতা ও প্রেমের কারণে সমাজ টিকে আছে৷

খোদা কেবল সন্তানদেরই সাবধান করেন নাই বরং পিতা মাতাকেও সাবধান করেছেন৷ সন্তান কোনো খেলার বস্তু নয় বরং খোদার দান, বিশ্বাস করে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে৷ অন্যভাবে মসিহের প্রতিজ্ঞার পূর্ণতা দেখতে পাই, 'এর জবাবে বাদশাহ তখন তাদের বলবেন, আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আমার এই ভাইদের মধ্যে সামান্য কোন একজনের জন্য যখন তা করেছিলে তখন আমারই জন্য তা করেছিলে৷' হযরত পৌল সাবধান করে দিয়েছেন সন্তানদের বিষিয়ে না তুলতে এবং তাদের উপর অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে না দিতে৷ 'তোমরা যারা বাবা, তোমরা তোমাদের ছেলেমেয়েদের বিরক্ত করে তুলো না, বরং প্রভুর শাসন ও শিক্ষায় তাদের মানুষ করে তোলো (ইফিষীয় ৬:৪)' 'তোমরা যারা পিতা, তোমাদের ছেলেমেয়েদের মন তোতো করে তুলো না, যেন তারা উত্‍সাহহীন হয়ে না পড়ে (কলসীয় ৩:২১)৷ পিতা মাতার উচিত হবে না বেখেয়াল থাকা তথা লাগামছাড়া করে দেয়া৷ তাদের কঠোর হবার প্রয়োজন নেই অথবা একগুয়েমি বা জেদি হবার দরকার নেই৷ তাদের মনে রাখতে হবে সন্তান পিতামাতার ঐতিহ্য বহন করে থাকে৷ উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পাপ ও দুর্বলতা আমাদের তুষ্ট করতে পারে না বরং পিতা মাতাকে বিনম্রতার দিকে চেতনা দেয়া বড়ই প্রয়োজন৷ এই বিনম্রতা শান্ত আত্মা সৃষ্টি করে যা সন্তানদের সঠিক পথে সঠিক আচরণের দিকে করে চালিত৷ পিতা মাতা ও সন্তানদের মসিহের কাছে প্রার্থনা চাওয়া প্রয়োজন যেন তিনি অপরাধ জীবন থেকে অনুতপ্ত হতে ও ফিরে দাঁড়াতে শক্তি যোগায়, আর মনের নবীনিকরণ সাধিত হয়৷


০৭.৫ - ইসলাম থেকে কনভার্ট হয়েছে

আর তাদের পিতা মাতা একটি ক্ষেত্রেই পিতা মাতার অমতে পদক্ষেপ নিতে হবে; আর তা হলো যদি তারা খোদার বিরুদ্ধে চলতে প্রেরণা দেয়৷ কিতাবুল মোকাদ্দস পরিষ্কার ঘোষণা দিচ্ছে 'মানুষের কথার চেয়ে খোদার কথায় আমরা চলবো (প্রেরিত ৫:২৯)'৷ বর্তমানে ইহুদি ও ইসলামিক সমাজে যুব সমপ্রদায় তাদের পিতা মাতার বিশ্বাসে আর জীবন যাপন করছে না, কেননা ইতোমধ্যে তাদের ব্যক্তিগত নাজাতদাতা হিসেবে ঈসা মসিহের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে৷ তাদের এ পরিবর্তনের ফলে এটা বেদনাক্লিষ্ট উত্তেজনা তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে৷ পাকরূহের দ্বারা খোদার মহব্বত তাদের হৃদয়ে পরিবেশিত হচ্ছে নিয়ত, পূর্ণতা দিচ্ছে৷ ফলে তাদের পিতা মাতাকে পূর্বের চেয়ে আরও অধিক সেবা ও সম্মান করার তাগিদ বোধ করছে? তাদের প্রচুর বিজ্ঞতার প্রয়োজন যেন ভালো কাজে তারা মনোনিবেশ করতে পারে যতটা বিশ্বাস সম্বন্ধে কথায় ব্যক্ত করা হয়৷ অর্থাত্‍ কথায় নয়, কাজে প্রমাণ৷ ধৈর্য্য হলো একটি গুণ, বিশ্বাসি সন্তানদের আন্তরিকভাবে তাদের অবিশ্বাসি পিতা মাতার জন্য প্রচুর প্রার্থনা করা প্রয়োজন যেন খোদার রহমতে তাদের মনের পরিবর্তন ঘটে৷ যতোটা সম্ভব, পিতা মাতাকে সেবা দেয়া তাদের প্রয়োজন, কেননা আমাদের পিতা মাতার চেয়ে অধিক ভালোবাসা রাখে এমন কেউ নেই এ পৃথিবীতে৷

তবে পিতা মাতা যদি প্রতিনিয়ত মসিহের রূহের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় এবং সন্তানদের ফিরে আসতে বাধ্য করে ও মসিহকে জনসমক্ষে অস্বীকার করতে জোর করে, হত্যা করার হুমকি দেয় যা ইসলামের শরিয়াতে রয়েছে, তবে তা হবে ঠিক সময় তাদের কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়া৷ মসিহি বিরোধি দিয়াবলের আত্মা দ্বারা পরিচালিত পিতা মাতাকে এড়িয়ে চলা উচিত৷ কিন্তু পিতা মাতাকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে মহব্বত, সম্মান ও শ্রদ্ধা করা উচিত৷ মসিহের কালামা আমাদের পরিচালনা দান করেন, 'একজন মানুষের নিজের পরিবারের লোকেরাই তার শত্রু হবে৷ ধমর্ীয় কারণ কোনো পিতা মাতা যদি সন্তানদের সাথে দুর্ব্যবহার করে, করে নৃশংস আচরণ, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিপাশ্বর্িক দিক দিয়ে প্রলয় চাপের সৃষ্টি করে, সন্তানকে স্বধর্মে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য, তেমন ক্ষেত্রে সম্পর্ক চ্ছেদ করা উত্তম৷ এ কারণে মসিহ সুসমাচারের বিরুদ্ধে যাওয়া সকল আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হতে বলেছেন, কেননা বিশ্বাস থেকে তারা তোমাদের সন্দিগ্ধ পথে করে পরিচালনা৷ কোনো কোনো সময় মসিহের পূর্ণাঙ্গ নিবেদনের স্বার্থে স্বজন-প্রিয়জন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হওয়া আবশ্যক৷ যখন এমন ঘটনা ঘটে পিতা মাতা ও সন্তানেরা দারুণভাবে মর্মপীড়ায় ভোগতে থাকে বিচ্ছিন্নতার কারণে, তখন খোদার প্রেম আবেগ অনুভুতির চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতা রাখে৷

জামাতের ইমানদার ভাই-বোনদের আহ্বান করা হয়েছে এসকল বিশ্বাসী ভ্রাতা-ভগি্নকে সংগ দেয়ার জন্য যেন তারা যা খুইয়ে এসেছে, তা পুরণ হতে পারে, যেমন ভাইয়ের ক্ষেত্রে ভাই বোনের ক্ষেত্রে বোন পিতা মাতা স্বজন-প্রিয়জনের মতো সহভাগিতা দিয়ে তাদের ঘাটতি করতে পারে পুরন৷ তাদের বৃত্তিমুলক শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা প্রয়োজন৷ প্রয়োজন বোধে তাদের বিবাহ দিতে প্রস্তুত থাকতে হবে৷ পিতা মাতার মহব্বত যেমন কখনো শেষ হবার নয়, নতুন বিশ্বাসিদের প্রতি জামাতের প্রেম তদ্রুপ অব্যাহত থাকতে হবে৷ কখনো অনাকাঙ্খিত আচরণ করলেও তাদের প্রেম শেষ করে দেয়া উচিত হবে না৷ মসিহের প্রেম ও ধৈর্য হতে হবে জামাতের শর্ত যা দত্তক সন্তানদের প্রতি থাকবে সর্বদা অবিচল৷


০৭.৬ - উপসংহার

পরিবারের প্রেম খোদার প্রেম হওয়া প্রয়োজন৷ অনন্তকালীন খোদা হলেন আমাদের পিতা মসিহের মাধ্যমে তিনি অনন্তকালের জন্য তার পরিবারের সদস্য হতে আমাদের আহ্বান জানিয়েছেন৷ তাঁর পুত্রের পূতপবিত্র রক্ত দিয়ে তিনি শততঃ আমাদের পরিষ্কার ও স্নাত-শুভ্র করে তুলছেন, যাতে তাঁর সাথে আমাদের সহভাগিতা থাকে এবং পাকরূহের সাহায্যে আমাদের চির নতুন করে রাখতে পারেন৷ কোনো কারণে বা দুর্ঘনায় আমরা যদি আমাদের পিতামাতাকে হারাই তবে মনক্ষুণ্য না হয়ে মহামতি দাউদের মতো স্বীকার করতে হবে৷ 'আমার মা-বাবা আমাকে ত্যাগ করলেও মাবুদ আমার ভার নেবেন৷' মানবীয় প্রেম সীমাবদ্ধ, কিন্তু বেহেশতি পিতা তাঁর সীমাহিন অফুরন্ত মহব্বতের বাধনে তাঁর বুকে আমাদের জড়িয়ে ধরেছেন, আলিঙ্গন করে রেখেছেন৷ অপব্যায়ী পুত্রের ঘটনায় এটা পরিস্কার যে অবাধ্য দুষ্ট কিন্তু অনুতপ্ত পুত্র যখন ফিরে এসেছে তখন পিতা তাকে যেভাবে আপন করে নিয়েছেন, ধার্মিক গর্বিত বড় ভাই ছোট ভাইকে না পেরেছে ক্ষমা করতে না পেরেছে আপন করতে৷ পিতা উভয়কে মহব্বত করেন এবং উভয়ের কল্যাণ কামনা করেন আর তাদের ঐক্যে নিয়ে আসেন৷ পিতা খোদার সাথে সহভাগিতা হলো শান্তি ও পরিতৃপ্তির উত্‍স আমাদের জীবনে৷ কখনো কখনো সাধুসন্তের সাথে এ পৃথিবীতে বসবাস করার সুযোগ খোদা আমাদের জন্য এনে দেন৷ তাই আমাদের পিতাকে ধন্যবাদ দেই এই পার্থিব পরিবারের জন্য এবং তিনি যে আমাদের রুহানি বা ঐশি পরিবারে সদস্য হবার সুযোগ দিয়েছেন সে জন্যও তাকে ধন্যবাদ দেই৷

www.Waters-of-Life.net

Page last modified on September 25, 2013, at 08:12 AM | powered by PmWiki (pmwiki-2.3.3)