Previous Lesson -- Next Lesson
২. শরীয়তের কবল থেকে মুক্তি পাপের করাল গ্রাস থেকে অব্যাহতি বয়ে আনে (রোমীয় ৬:১৫-২৩)
রোমীয় ৬:১৫-২২
১৫. কিন্তু শরীয়তের অধীনে না থেকে রহমতের অধীন হয়েছি বলে কি আমরা গুনাহ করব? নিশ্চয় না৷ ১৬. তোমরা কি জান না যে, গোলামের মত যখন তোমরা কারও হাতে নিজেদের তুলে দাও এবং তার হুকুম পালন করতে থাক তখন তোমরা আসলে তার গোলামই হয়ে পড়? সেইভাবে হয় তোমরা গুনাহের গোলাম হয়ে মরবে, নয় আল্লাহর গোলাম হয়ে ন্যায় কাজ করবে৷ ১৭. কিন্তু আল্লাহর শুকরিয়া হোক, কারণ যদিও তোমরা গুনাহের গোলাম ছিলে তুবও যে শিক্ষা তোমাদের দেওয়া হয়েছে সমস্ত দিল দিয়ে তোমরা তার বাধ্য হয়েছ৷ ১৮. গুানহের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে তোমরা তো ন্যায়ের গোলাম হয়েছ৷ ১৯. মানুষের দুর্বলতার জন্য আমি কথাগুলো মানুষ যেভাবে বুঝবে সেভাবে বলছি৷ আগে তোমরা যেমন আর বেশি করে অন্যায় কাজ করবার জন্য নিজেদের শরীরকে অপবিত্রতার ও অন্যায়ের গোলাম করে তুলেছিলে, ঠিক সেভাবে এখন পবিত্রায় বেড়ে উঠবার জন্য তোমাদের শরীরকে ন্যায় কাজের গোলাম করে তোলো৷ ২০. যখন তোমরা গুনাহের গোলাম ছিলে তখন্য ন্যায়ের গোলাম ছিলে না৷ ২১. আগেরকার যে সব কাজের কথা ভেবে এখন তোমরা লজ্জা পাও সেই সব কাজ থেকে তোমাদের কি লাভ হত? তার শেষ ফল হল মৃতু্য৷ ২২. কিন্তু এখন তোমরা গুনাহের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে আল্লাহর গোলাম হয়েছ৷ তাতে লাভ হল এই যে, তোমরা পবিত্রতায় বেড়ে উঠছ, আর তার শেষ ফল হল অনন্ত জীবন৷
ইহুদিদের চাতুর্যপূণ প্রশ্ন পৌলের মনে পুনরায় প্রতিধ্বনি হলো: আমরা কি তবে পাপ করতে থাকবো, কেননা আমরা শরীয়তের অধীন নই, বরং খোদার রহমতে পেয়েছি মুক্তি?
এ শয়তানিপূর্ণ প্রশ্নটি পৌল সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করলেন, কেননা, এ প্রশ্নটি পাকরূহের অনুপ্রেরণায় করা হয় নি, বরং এলাকাভিত্তিক প্রশ্ন৷ বিশ্বাসীদের কাছে পৌল সাখ্য দিলেন যে তারা মসিহের কাছে চূড়ান্তভাবে এবং সম্পূর্ণ মনের ইচ্ছায় নিজেদেরকে তার প্রেমের হাতে সমর্পণ করেছেন, তারা পাপের ক্ষমতা থেকে হয়েছেন মুক্ত এবং শরীয়তের দাবি-দাওয়ার হাত থেকেও খালাস পেয়েছেন বিধায় খোদাই জীবন এবং তাঁর ধার্মিকতা তাদের মধ্যে উত্পন্ন হয়েছে৷ খোদার ভয় ছাড়া যে কেউ দাবি করে সে স্বাধীন সে পরিষ্কার মিথ্যাবাদি৷ ড. লুথার মানুষকে গাধার সাথে তুলনা করেছেন, তার বক্তবে যে ব্যক্তি প্রভু ব্যতিরেকে জীবন যাপন করতে পারে না, কেননা, কাউকে না কাউকে তার ওপর চড়তেই হবে৷ আপনি হয় খোদা বহন করছেন নয়তো খোদাকে বহন করছেন৷ খোদা যখন আপনার খোদায় পরিণত হয়, আর আনন্দের সাথে তাকে বহন করে ফেরেন, আর নিত্যদিন আনন্দ ও প্রজ্ঞার সাথে তা করেন, তখন হতাশা, পাপ ও মৃতু্যর শক্তি আপনার মধ্যে বিলীন হয়ে যায়৷ পরিবর্তে প্রত্যাশা শান্তি এবং প্রকৃত রুহানি স্বাধীনতা আপনার মধ্যে জন্মাতে শুরু করে৷ মসিহ আপনাকে মুক্ত করেছেন উদাসিনতা অথবা আমোদ-প্রমোদে মত্ত্ব হওয়ার জন্য নয় কিন্তু খোদার সেবা কাজের জন্য, আর অন্যের কল্যাণজনক কাজ করার জন্য পাকরূহের ধার্মিকতার নির্দেশ মোতাবেক৷ পাকরূহের অধীনে বাধ্যতা ও বিনম্রতায় আপনার বিবেক মুক্ত ও বিকশিত হয়ে ওঠবে৷ মসিরেহ পাকরূহের পরিচালনায় তার সহভাগিতা ছাড়া আপনি হতাশ ও ক্লেশে জীবন যাপন করতে বাধ্য৷
মসিহ নিজে সাখ্য দিয়েছেন যে তার একটি যোয়ালে আছে, যদিও তিনি নিজে স্বাধীন ও অনন্তকালের খোদা৷ যাহোক, তিনি সানন্দে পিতার যোয়াল সমর্পিত হয়েছেন, বাধ্য হয়েছেন মৃতু্য পর্যন্ত এমন কি সলিবে মৃতু্য পর্যন্ত৷ ঐশি প্রেম মসিহকে ক্রীতদাস হতে বাধ্য করেছেন, কেবল জগতের পাপের কাফফারা বহন করার নিমিত্তে৷ তাই আপনি কেন তাকে অনুসরণ করছেন না? আপনি কি আপনার বন্ধুদের পাপ নিজস্কন্ধে বহন করবেন আর তাদের কাছ থেকে ঘৃণা ও প্রত্যাখ্যাত হতে রাজি হবেন? বিগড়ে যাবেন না, মন স্থির করুন, তাদের নাজাতের বিষয়ে ভাবুন, ভাবুন তাদের রুহানি মুক্তির বিষয়ে৷ খোদার মহব্বত আপনাকে প্রেরণা দিচ্ছে সকলের নাজাতের জন্য৷
মসিহের মধ্যে যিনি জীবন যাপন করেন মসিহ তাকে বহুজনের কাছে নাজাতের বারতা পৌছে দিতে প্রেরণা যোগায়৷ তা তত্ত্বগত বা আবেগতাড়িত হয়ে নয়, কিন্তু দৃঢ় সংকল্প ত্যাগ আর আপনার চূড়ান্ত শক্তি দিয়ে তা করতে হবে৷ অতীতে আপনি আপনার অর্থ, সময় ও দান সামগ্রী ব্যয় করেছেন কতকগুলো অবাস্তব আমোদের মধ্যে, কিন্তু বর্তমানে আপনার সবটুকু কর্মক্ষমতা প্রয়োগ করেন মসিহের সেবায় আর অন্যকে নাজাতের পথে নিয়ে আসার জন্য৷ শান্তনা দিন যারা শোক করে, অসুস্থদের সাথে দেখা করুন, সাহায্য করুন ক্ষুধার্তদের, দুর্বলদের নিয়ে গবেষণা করুন, এবং সুসমাচারের আলোকে আলোক দান করুন তাদের যারা ধার্মিকতার জন্য প্রত্যাশা করে ফিরছে৷
এ মন্দ জগতে মসিহের প্রেম বিশ্বাসীদের মধ্যে মূর্তমান হয়ে ধৈর্য ও প্রত্যাশায় বেঁচে থাকে৷ আপনি কি মসিহের সেবক হয়েছেন, আর দাসে পরিণত হয়েছেন খোদার পুত্রের প্রেমে? যদি তাই হয়ে থাকে, তবে আপনার ওপর পাপের আর কোনো কর্তৃত্ত্ব থাকতে পারে না, আপনার অনুতাপের মধ্য দিয়ে মৃতু্য থেকে অতিক্রান্ত হয়েছে, মসিহের সলিবের মধ্যে পূর্নতা পেয়েছেন পাকরূহে, সাথে তাঁর অনন্ত জীবনে হয়েছেন প্রতিষ্ঠিত, যারা মসিহের সাথে জীবন যাপন করে চলছে তাদের সাথে আপনার জন্যও রয়েছে এক বিশাল প্রত্যাশা৷
রোমীয় ৬:২৩
২৩. গুনাহ যে বেতন দেয় তা মৃতু্য, কিন্তু আল্লাহ যা দান করেন তা আমাদের হযরত মসিহ ঈসার মধ্য দিয়ে অনন্ত জীবন৷
এ স্বর্ণালী আয়াতটি পুরো সুসমাচারের সারমর্ম বহন করে, পরিষ্কারভাবে বলে দিচ্ছে, মাংসিক মানুষের অবস্থা আর মসিহ যা কিছু আমাদের দান করেন সে বিষয়ে৷
১৷ আমরা পাপ করি বিধায় আমরা মরে যাই৷ মৃতু্য অবধারিত বিষয়, কেননা আমরা গুনাহগার৷ যেহেতু সকল মানুষ পাপী সুতরাং সকলেই মৃতু্য বরণ করতে বাধ্য৷ জীবনের এটাই প্রতিফল৷
২৷ কিন্তু যে ব্যক্তি মসিহের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করে তিনি খোদার তরফ থেকে দান পায়৷ এ উপহার স্বর্ণ, রৌপ্য অথবা অন্য কোনো দামী পদার্থ নয়, সে উপহার পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাবার নয়৷ পরিবর্তে, তা খোদার হৃদয় থেকে সোজা চলে আসে আর সত্যিকারার্থে আমাদের হৃদয়ে তা অবস্থান করে৷ তিনি তাঁর নিজের জীবন সকলের প্রতি দান করেছেন যারা তাঁর পুত্রের সাথে সলিবে হয়েছে হত, তারা তাঁর রাজ্যে চিরদিনের মতো তাঁর সাথে রাজত্ব করবে৷ তিনি তেমন ব্যবস্থা করে দেন কেননা তিনি হলেন প্রভুদের প্রভু আর তিনি পিতার ও পাকরূহের সাথে থাকেন একই খোদা চিরদিনের জন্য রাজত্ব করেন৷
প্রর্থনা: হে পিতা, আমরা আপনার আরাধনা করি৷ পিতা, পুত্র এবং পাকরূহের , তুমি আমাদের অপরাধ ও পাপের রাজ্যে নিয়োজিত অবস্থা থেকে তুলে নিয়েছো, মুক্ত করেছো মৃতু্যর রজ্জু থেকে, বহন করে ফিরছো সদাসর্বদা৷ মসিহের অবস্থান পর্যন্ত আর আমাদের ভরাট করে দিয়েছেঠা তোমার পাকরূহের জীবন দিয়ে যেন চিরদিনের মতো আমরা মারা না যাই, বরং তোমার সাথে ও তোমার মধ্যে মহান রহমতে বসবাস করতে পারি৷
প্রশ্ন: