Previous Lesson -- Next Lesson
খ) খত্নার দ্বারা মানুষ ধার্মিক বলে গণ্য হয় নি (রোমীয় ৪:৯-১২)
রোমীয় ৪:৯-১২
এখানে কি কেবল তাদেরই মোবারক বলা হয়েছে যাদের খত্না করানো হয়েছে? খত্না-না-করানো লোকদেরও কি বলা হয় নি? জ্বী, তাদেরও মোবারক বলা হয়েছে, কারণ আমরা বলছি, 'ইব্রাহিমের ঈমানের জন্য তাঁকে ধার্মিক বলে ধরা হয়েছিল৷' ১০ কোন অবস্থায় ধরা হয়েছিল? খত্না করাবার আগে, না পরে? খত্না করাবার আগেই ধরা হয়েছিল, পরে নয়৷ ১১ খত্না-না-করানো অবস্থায় ঈমানের জন্যই যে আল্লাহ তাঁকে ধার্মিক বলে ধরেছিলেন তাঁর খত্না করানোটা ছিল তারই প্রমাণ এবং চিহ্ন৷ তাহলে দেখা যাচ্ছে, খত্না করানো না হলেও কেবল ঈমানের জন্যই যাদের ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হয়, ইব্রাহিম তাদের সকলের পিতা৷ ১২ এছাড়া, খত্না করাবার আগে ইব্রাহিম যেভাবে ঈমানের পথে চলতেন, যে সব খত্না করানো লোক সেভাবে চলে, ইব্রাহিম তাদেরও পিতা৷
ইহুদিরে বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় তুললেন হযরত পৌল এবং আর তাদের বিশ্বাসের পবিত্র নীতির একটি খন্ডন করে দিলেন যা ছিল খত্না৷ প্রান্তরে অবস্থানকালে খত্নার চিহ্নটিকে নবীদের যুগে ধার্মিকতার সর্বশ্রেষ্ঠ চিহ্ন হিসেবে গণ্য হতো৷ যাদের খত্না করানো হতো তাকেই খোদার খাস বান্দা হিসেবে গণ্য করা হতো, আর যারা খত্না করানো হতো না তাকে খোদার নিন্দাকারী হিসেবে ঘৃণা করা হতো৷ তাই প্রত্যেক নতুন বিশ্বাসীকেই খত্সা করানোর জন্য তাগিদ দেয়া হতো সে যে পূতপবিত্র হয়েছে তার প্রমাণ স্বরূপ, আর এ চিহ্ন তাকে খোদার সান্বিদ্ধে পৌছার অধিকার এনে দিত৷
কট্টোরপন্থী ইহুদিদের দেখিয়ে দিয়েছেন ইব্রাহীম নবীর দৃষ্টান্তের মাধ্যমে, খত্না করার জন্য খোদার কাছে, কেউ গ্রহণযোগ্য হয় না, কেবল বিশ্বাসের মাধ্যমে ধার্মিক বলে গণ্য হয়৷ ইব্রাহীম নবী নিজেও খোদার ডাক শুনতে পেয়েছেন আর সে ডাকে বিশ্বাস স্থাপন করেছেন, তখন কিন্তু তার খত্না করানো ছিল না৷ তাঁর বিশ্বাই ছিল ধার্মিক হবার কারণ ও ভিত্তি৷ খত্না ছিল একটি চিহ্নমাত্র যা খোদার কাছে প্রবেশের পাশ বা অধিকার স্বরূপ কিছু ছিল না৷ খত্না তাকে খোদার চুক্তিতে প্রবেশের কোনো সুযোগ এনে দেয় নি তবে খোদার উপর বিশ্বাস তাকে খোদার সান্বিন্ধে পৌছার অধিকার এনে দিয়েছে৷
সত্ সাহস নিয়ে তিনি বলেছেন যে, ইব্রাহীম প্রথমে খত্না না করা সকল বিশ্বাসীকুলের পিতা হয়েছেন, তার পর তিনি খত্নাকারীদের পিতা হয়েছেন, কেননা তিনি যখন খোদার মনোনীত ও আহুত হয়েছিলেন তখন তার খত্না করানো ছিল না, তিনি ছিলেন অচ্ছিন্নত্বক অইহুদি৷ এ আলোচনার মাধ্যমে অইহুদিদের কাছে নাজাতের বার্তা পরিবেশনকারী সাহাবি প্রমাণ করলেন খত্না ছাড়া অইহুদি বিশ্বাসীগণও খোদার নৈকট্য লাভ করে খোদার অতি কাছে পৌছে যায় অথচ খত্না করানো ইহুদি তারা যারা মসিহে বিশ্বাস স্থাপন করে না, খোদার থেকে দূরে পড়ে থাকে৷ মনের পরিবর্তন ও আন্তরিক বিশ্বাসের ফলে খোদা হন মহিমান্বিত, শারীরিক চিহ্ন বা আচর-অনুষ্ঠান বা রীতি নীতি পালনের দ্বারা খোদা আদৌ সন্তুষ্ট হতে পারেন না৷
পৌল যখন তাদের আত্মপ্রবঞ্চনা আর ফাকা নিশ্চয়তার বিষয়ে বিশ্লেষণ করলেন তখন ইহুদিরা ক্রোধে ফেটে পড়লো৷ যাহোক, তিনি তাদের কাছে অর্থাত্ ধর্মান্ধ ইহুদিদের কাছে সাখ্য তুলে ধরলেন, যদি তারা অনুগ্রহের সুসমাচরের ওপর আস্থা আনে তবে পিতা ইব্রাহীমের সন্তান বলে গণ্য হতে পারে৷ খোদার পথ বংশগত নয়, নয় খত্না করানোর ফলে অর্জিত কিন্তু সলিবে হত মসিহের ওপর বিশ্বাস স্থাপনের দ্বারাই পাওয়া যায়৷ এর অর্থ আমাদের কাছে প্রকাশ করে, সকল তরীকাবন্দি মসিহি যে ধার্মিক তা নয়, কেননা তরীকাবন্দি গ্রহণ করেছে বলে ব্যক্তি ধার্মিক বলে বিবেচিত হয় না, যতক্ষণ পর্যন্ত তার আন্তরিক বিশ্বাস না জন্মে সলিবে হত ও পুনরুত্থিত মসিহের ওপর, কেননা আচার অনুষ্ঠানের দ্বারা বা শারীরিক চিহ্নের দ্বারা ধার্মিক বলে গণ্য হয় না বরং কেবল আন্তরিক বিশ্বাসেই আসে মুক্তি৷
প্রার্থনা: হে পাক-পরোয়ারদেগার বেহেশতি পিতা, তোমার কাছে আসার কোনো যোগ্যতা আমাদের নেই, কেননা আমরা দোষী ও কলুষিত৷ কিন্তু তোমার প্রিয়পুত্র তাঁর প্রেম আমাদের কাছে প্রকাশ করেছেন, সলিবে আত্ম কোরবানির মাধ্যমে আমাদের ন্যায়বান বলে ঘোষণা দিয়েছেন, আমরা তাঁর কালামে আস্থাবান, তাঁর আগমনের অপেক্ষায় তাঁর নাজাতে আমাদের নাজাত দিয়েছেন, তাঁর দৃষ্টান্ত আমরা অনুসরণ করি, কেননা তুমি আমাদের পবিত্র ও ন্যায়বান বলে ঘোষণা দিয়েছো, আর যারাই বিশ্বাস করে তাদের প্রত্যেকের জন্য মুক্তির ঘোষণা দিয়েছো৷
প্রশ্ন: