Previous Lesson -- Next Lesson
৩. মন্ডলীর জন্য নুতন আজ্ঞা (যোহন ১৩:৩৩-৩৫)
যোহন ১৩:৩৩
৩৩. 'সন্তানেরা, আর অল্প সময় আমি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি৷ তোমরা আমাকে খুঁজিবে, কিন্তু আমি ইহুদি নেতাদের যেমন বলিয়াছিলাম, 'আমি যেখানে যাইতেছি আপনারা সেখানে আসিতে পারেন না,' তেমনই তোমাদেরও এখন তাহাই বলিতেছি৷'
রূহের মধ্য দিয়ে পিতা মহামান্বিত হবার পর ঈসা মসিহ আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তির মধ্য দিয়ে পথ নিদের্শনা দেন৷ তিনি কেবল দৈহিকভাবে আমাদের সাথে নেই কিন্তু তিনি বেহেশতের আছেন৷ পুনুরুত্থিত ঈসা মসিহ দুনিয়াতে সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ যে কেউ এই জীবন্ত ব্যক্তিকে চেনে না এবং তার ওপর ঈমান আনে না সে অন্ধ এবং বিপথগামী, কিন্তু যে কেউ তাকে দেখে সে বেঁচে থাকবে এবং অনন্ত জীবন পাবে৷
ঈসা মসিহ তার সাহাবিদেরকে বলেছিলেন তিনি যেখানে যাচ্ছেন তার সাহাবিরা সেখানে যেতে পারে না তা বিচারের জন্য পরিষদের সামনে অথবা উম্মুক্ত কবর নয়, কিন্তু তিনি তার বেহেশতে আরোহনের ব্যাপারে বলছিলেন৷ পিতা বলেছিলেন, 'আমার ডান হাতের উপরে বস যতক্ষণ না পর্যন্ত তোমার শত্রুদেরকে আমি পায়ের নিচে রাখবো৷' ঈসা মসিহ তার সাহাবিদের কাছ থেকে সরাসরি অদৃশ্য হয়ে যাননি কিন্তু তাদেরকে আগেই তার মৃতু্য, পুনরুত্থান ও বেহেশতে আরোহনের বিষয়ে বলেছিলেন, যেখানে কোনো মানুষ নিজের চেষ্টায় প্রবেশ করতে পারে না৷ তিনি এ ব্যাপারটি ইহুদিদেরকে আগেই বলেছিলেন কিন্তু তারা তা বুঝতে পারেনি৷ তিনি তার সাহাবিদেরকে পিতা এবং পুত্রের এবাদত করতে অংশগ্রাহী করেছিলেন, যাতে করে তারা ভবিষ্যতে দূঃখ এবং হতাশার মধ্যে পড়ে৷ তারা কি তার বিশ্বস্থতার ওপর ঈমান এনেছিল, যে তিনি তাদেরকে ত্যাগ করবেন না এবং তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে না৷
যোহন ১৩:৩৪-৩৫
৩৪. একটা নুতন হুকুম আমি তোমাদের দিতেছি তোমরা একজন অন্যজনকে মহব্বত কর৷ আমি যেমন তোমাদের মহব্বত করিয়াছি, তোমরাও তেমনই একজন অন্যজনকে মহব্বত কর৷ যদি তোমরা একজন অন্যজনকে মহব্বত কর, তবে সকলে বুঝিতে পারিবে, তোমরা আমার উম্মত৷'
ঈসা মসিহ জানতেন যে তার সাহাবিরা তাকে পুরোপুরিভাবে বুঝতো না যেহেতু তারা পাক-রূহ দ্বারা পূর্ণ ছিল না৷ তারা অন্ধ ছিল এবং বিশ্বাস করতে অসমর্থ ছিল অথবা তাদের ভালোবাসর আবেগ ছিল না, 'কারণ খোদা হলেন মহব্বত, এবং যে কেউ মহব্বতের মধ্যে বাস করে সে খোদার মধ্যে থাকে এবং খোদাও তার সঙ্গে থাকেন৷' পবিত্র ত্রিত্ব হলো ভালোবাসা৷ যেহেতু পবিত্র তিত্বের তিনটি রূপের ভালোবাসা বিদ্যমান তাই একাত্বতা সৃষ্টি হয়৷ যা সব কিছু সহ্য করে৷ ঈসা মসিহ পবিত্র ত্রিত্ত্বের বৈশিষ্টের মধ্য থেকে মানব দেহধারী হতে চেয়েছিলেন এবং সেই পবিত্রতার উত্স তার সাহাবিদের মধ্যে যথাযথভাবে থাকে৷
তাই ঈসা মসিহ তার সাহাবিদেরকে তার মণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসার মধ্যে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন৷ তিনি তৌরাতের মতো দশটি নিষেধাজ্ঞা দেননি কিন্তু মাত্র একটি আজ্ঞা দিয়েছেন যা সকল বেহেশতি আজ্ঞা সমুহকে পুরণ করে৷ ভালোবাসা হলো আইনের সম্পূর্ণতা৷ অথচ মুসা লোকরেদেক নেতিবাচক বিধান দিয়েছিলেন, ঈসা মসিহ আমাদেরকে ইতিবাচক কাজের জন্য অনুপ্রাণিত করেন, তিনি নিজেই তার উদাহরণ৷ ভালোবাসা হলো বিশ্বাসীদের জীবনে একটি অপরিহার্য বৈশিষ্ট৷ যেখানে মণ্ডলী ভালোবাসা প্রদর্শন করে না তা আর মণ্ডলী থাকে না৷
ভালোবাসা হলো ঈসা মসিহের ব্যক্তিত্বের গূঢ় বিষয়৷ বিপথে যাওয়া মেষদের ওপর তার সমবেদনা ছিল যেমন একজন রাখাল হারানো মেষদের ওপর করুনা করে৷ তিনি তার সাহাবিদের সাথে ধৈর্য্য সহকারে এবং নম্রভাবে সব কিছু সহ্য করেছিলেন৷ ঈসা মসিহ ভালোবাসাকে তার রাজ্যের মূল বিষয় বলে আখ্যায়িত করেছিলেন৷ যে কেউ ভালোবাসে সে ঈসা মসিহের অনুগ্রহের মধ্যে থাকে, কিন্তু যে কেউ ঘৃণা করে সে শয়তানের অংশ স্বরূপ হয়৷ ভালোবাসা হলো দয়াশীল এবং গর্ব করে না৷ এটা ধৈর্য্য ধরে যা কিছু ভাল তাই আশা করে এমনকি শত্রুর কাছেও৷ খোদার ভালোবাসা কখনো ব্যর্থ হয় না; এটা পূর্ণাঙ্গতার বন্ধন৷
মণ্ডলীর জন্য ভালোবাসার মধ্য দিয়ে আত্ম উত্সর্গ ছাড়া অন্য কোনো নিদর্শন নেই৷ আমরা যদি সেবার জন্য নিজেদেরকে প্রশিক্ষিত করি তাহলে আমরা তার সাহাবি হই৷ বাস্তবিক ভালোবাসার অর্থ আমরা ঈসা মসিহের পথনির্দেশনার মধ্য দিয়ে জানতে পারি৷ আমরা তার ক্ষমার মধ্যে বেঁচে থাকি এবং অন্যদেরকেও খুশীর সাথে ক্ষমা করি৷ কেউ যদি মণ্ডলীর মধ্যে মহত্ কাজের বিরোধীতা না করে এবং সবাই যদি আনন্দ প্রকাশ করে, কারণ ঈসা মসিহের রুহ তাদেরকে এক করেছে, তাহলে পৃথিবীতে বেহেশত নেমে আসে এবং আমাদের জীবন্ত প্রভু জামাতসমূহ স্থাপন করেন যা পাক-রুহের দ্বারা পূর্ণ৷
প্রশ্ন: