Home
Links
Bible Versions
Contact
About us
Impressum
Site Map


WoL AUDIO
WoL CHILDREN


Bible Treasures
Doctrines of Bible
Key Bible Verses


Afrikaans
አማርኛ
عربي
Azərbaycanca
Bahasa Indones.
Basa Jawa
Basa Sunda
Baoulé
বাংলা
Български
Cebuano
Dagbani
Dan
Dioula
Deutsch
Ελληνικά
English
Ewe
Español
فارسی
Français
Gjuha shqipe
հայերեն
한국어
Hausa/هَوُسَا
עברית
हिन्दी
Igbo
ქართული
Kirundi
Kiswahili
Кыргызча
Lingála
മലയാളം
Mëranaw
မြန်မာဘာသာ
नेपाली
日本語
O‘zbek
Peul
Polski
Português
Русский
Srpski/Српски
Soomaaliga
தமிழ்
తెలుగు
ไทย
Tiếng Việt
Türkçe
Twi
Українська
اردو
Uyghur/ئۇيغۇرچه
Wolof
ייִדיש
Yorùbá
中文


ગુજરાતી
Latina
Magyar
Norsk

Home -- Bengali -- John - 001 (Introduction)

This page in: -- Albanian -- Arabic -- Armenian -- BENGALI -- Burmese -- Cebuano -- Chinese -- Dioula -- English -- Farsi? -- French -- Georgian -- Greek -- Hausa -- Hindi -- Igbo -- Indonesian -- Javanese -- Kiswahili -- Kyrgyz -- Malayalam -- Peul -- Portuguese -- Russian -- Serbian -- Somali -- Spanish -- Tamil -- Telugu -- Thai -- Turkish -- Twi -- Urdu -- Uyghur -- Uzbek -- Vietnamese -- Yiddish -- Yoruba

Next Lesson

যোহন - নূর অন্ধকারের মধ্যে জ্বলছে
যোহন বর্ণীত মসিহের নাজাতের বারতার সুসমাচার ওপর অধ্যয়ন

যোহন লিখিত সুসমাচারের ভূমিকা বা পরিচিতিি


ঈসা মসিহ তাঁর সাহাবিদেরকে তাঁর সাক্ষ্য হতে ডাকেন৷ তিনি তাঁর নিজের জীবনের ঘটনাপঞ্জি নিজে লিখে যাননি এবং তিনি জামাতগুলিকেও কোনো পত্র পাঠান নি৷ প্রভু ঈসা মসিহকে মহিমান্বিত করতে পাক-রুহ যাদেরকে ডেকেছেন ও পরিচালিত করেছেন তাঁর ব্যক্তিত্ব তাঁর উক্ত অনুসারীদের হৃদয়ে বড় রকমের দাগ কেটেছিল৷ তারা তার প্রেম, অপমানিত অবস্থা, মৃতু্য এবং পুনরুত্থান এগুলো পিতার একমাত্র একজাত পুত্রের মধ্যে তার গৌরব দেখেছিল, যা ছিলো সম্পূর্ণ ক্ষমা ও সত্যে পরিপূর্ণ৷ মসিহের প্রচারক মথি, মার্ক এবং লুক যখন মসিহের কথা এবং তার কার্যাবলি পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরেছিল এবং তাদের উদ্দেশ্য ছিল খোদার রাজ্য আসবার বিষয়, যোহন তুলে ধরেছিল ঈসা মসিহের একান্ত ভিতরের ব্যক্তিত্ব এবং তাঁর পবিত্র মহব্বতের প্রকাশ করা৷ একারনেই যোহনের লেখা সুসমাচারকে বলা হয় প্রধান সুসমাচার, যা হলো পবিত্র কিতাবুল মোকাদ্দসের সমস্ত বাণীর কর্ণধার বা মুকুটসম৷

এই সুসমাচারের লেখক কে?

দ্বিতীয় শতাব্দীতে জামাতের বয়োজ্যেষ্ঠরা এই বিষয়ে সম্মত হয় যে, এই অতুলনীয় বইটির লেখক ছিল ঈসা মসিহের সাহাবী যোহন৷ কিন্তু প্রচারক যোহন প্রেরিতদের অনেকের নাম উল্লেখ করেন, তবে সে কখনোই তার নিজের নাম বা তার ভাই ইয়াকুবের নাম উল্লেখ করেননি৷ কারণ সে নিজেকে প্রভু ও নাজাতদাতার নামের সাথে নিজের নামকে মিলিয়ে ফেলবার মতো নিজেকে যোগ্য মনে করতেন না৷ যাই হোক ফরিশীদেশের লিয়নের বিশপ ইরেনিয়াস্ যখন তিনি মহারাজ ট্রাজানের আমলে (৯৮-১১৭ এ ডি) আনাটোলিয়ান এপিসাসে সেবায় ব্রত ছিলেন তিনি, প্রভুর সাহাবি যোহনের নাম স্পষ্টভাবে বর্ণনা দিয়েছেন সেই (যোহন) একমাত্র এই সুসমাচার লেখেন যিনি প্রভুর শেষ ভোজে ঈসা মসিহের বুকের ওপর ঝুঁকে পড়েছিলেন৷

কিন্তু কিছু সমালোচক মনে করে যে সুসমাচারের লেখক যোহন যিনি ঈসা মসিহের সাথে থাকতেন তিনি ওই লেখক নন, কিন্তু বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে এপিসাস জামাতের একজন, যে প্রেরিত যোহনের সাহাবি ছিল, সে পরবর্তিকালে এটি লেখেন৷ এই সমালোচকেরা স্বপ্নরাজ্যে বাস করতেন এবং তারা সত্যের রুহকে জানতেন না এবং এটা মিথ্যা নয় যে প্রেরিত যোহন প্রথম ব্যক্তি যিনি তার সুসমাচারে লিখেছিলেন 'আমরা তার মহিমা অবলোকন করেছি'৷ তাই সুসমাচারের লেখক ঈসার জীবন, তাঁর মৃতু্য এবং তাঁর পুনুরুত্থানের চাক্ষুস সাক্ষী ছিলেন৷ যোহনের বন্ধুরা সুসমাচারের শেষে এ কথা সংযোজিত করেছিল এই বলে যে, 'এই সেই সাহাবি যে এ সমস্ত বিষয়ে স্বাক্ষ্য দিয়েছিল এবং এ বিষয়গুলো লিখেছিল; আমরা জানি যে তার সাক্ষ্য সত্য' (যোহন ২১:২৪)৷ তারা যোহনের চারিত্রিক গুণাবলির ওপর এমন গুরুত্বারোপ করেছিল যা অন্যান্য প্রেরিতদের থেকে বৈশিষ্ট করে রাখে যা ছিল এমন যে ঈসা মসিহ তাকে এমনই ভালোবাসতেন যে প্রথম পবিত্র ভোজের সময় তাকে (যোহনকে) তার বুকের ওপর ঝুঁকে পড়তে দিয়েছিলেন এবং সেই একমাত্র ব্যক্তি যে অভয়্লে ঈসা মসিহকে জিজ্ঞাসা করেছিল তার বিশ্বাস ঘাতকের ব্যাপরে; এইভাবে, প্রভু সে কে যে আপনাকে ধরিয়ে দেবে৷ (যোহন ১৩:২৫)

যুবক বয়সেই ঈসা মসিহের অনুসারী হতে যোহনকে ডাকা হয়েছিল৷ সে অন্য বারোজন সাহাবিদের থেকে বয়সে ছোট ছিল৷ সে ছিল একজন জেলে৷ তার বাবার নাম ছিল জেবেদি এবং তার মায়ের নাম হলো সালোমি৷ সে তার পরিবারের সাথে তেবেরিয়াস উপকূলে বেতসাইদাতে বাস করতো৷ সে পিতর আন্দ্রিয়, তার নিজের ভাই জেমস্ এবং নথনিয়েলের সাথে যোগ দিয়েছিল, যখন তারা একসাথে জর্দান উপত্যকায় গিয়েছিল বাপ্তিস্মদাতা যোহনের কাছে যিনি পাপ স্বীকার ও অনুতাপ করবার বিষয়ে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ লোকেরা তার কাছে যাচ্ছিল এবং তাদের মধ্যে যোহন ও জেবেডিও ছিল যারা বাপ্তিস্মদাতার হাতে জর্দান নদীতে ক্ষমা ও বাপ্তিস্ম চেয়েছিল৷ সে সম্ভবত প্রধান ইমাম আনাসের পরিবারে আত্মীয় ছিল, কারণ তারা তার পরিচিত ছিল এবং তার প্রাসাদে ঢোকবার অধিকার ছিল৷ এভাবে সে একটি রাজকীয় পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ ছিল৷ অত্রএব, সে তার সুসমাচারে যা উল্লেখ করেছিল অন্যান্য প্রচারকেরা তা করে নাই, যেমন বাপ্তিস্মদাতা ঈসা মসিহ সম্পর্কে বলেছিলেন যে, তিনি (ঈসা) খোদার মেষশাবক যিনি দুনিযার গুনাহ বহন করিবেন৷ এভাবে প্রেরিত যোহন পাকরুহের পরিচালনায় তার প্রভু ঈসার সাহাবি হয়েছিলেন যিনি ঈসার ভালোবাসাতে অন্য সবার থেকে বেশি করে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন৷

যোহন ও অন্য তিনজন প্রচারকদের মধ্যে সম্পর্ক

যোহন যখন সুসমাচার লিখেছিলেন, ইতোমধ্যেই মথি, মার্ক ও লুক লিখিত সুসমাচার বেশ কিছু সময় ধরেই পরিচিত ছিল৷ এই তিনজন প্রচারক তাদের কিতাবসমূহ লিখেছিল একটি মূল হিব্রু কিতাবের ভিত্তির ওপর নির্ভর করে, যেটা মথির সংগৃহীত ছিল, যার ভিতর ঈসা মসিহের কথা সমুহ উল্লেখ ছিল যাতে করে সে গুলি হারিয়ে না যায়, বিশেষ করে সেই সময়টায়, যখন অনেক বছর পেরিয়ে গিয়েছিল এবং প্রভু ঈসা মসিহ তখনও প্রত্যাবর্তন করেন নাই৷ খুব সম্ভবত ঈসা মসিহের কার্যাবলি ও তাঁর জীবনের ঘটনাসমুহ আলাদা একটি কিতাবে সংগৃহীত ছিল৷ প্রচারকেরা ঐ লেখাগুলোকে অত্যন্ত সাবধানতা ও বিশ্বস্ততার সাথে সংগৃহীত করে রেখেছিল৷ চিকিত্‍সক লুক অন্যান্য উত্‍সগুলির উপর নির্ভর করেছিলেন যতক্ষণ না তার সাথে ঈসা মসিহের মা এবং বিভিন্ন চাক্ষুস সাক্ষীদের সাথে দেখা হয়েছিল৷

যাই হোক, অন্যান্য আরও অতিরিক্ত উত্‍সগুলো ব্যতীত যোহন নিজেই একজন গুরুত্বপূর্ণ উত্‍স ছিল৷ সে জামাতের যা জ্ঞাত ছিল সেই খবর এবং কথাগুলো পুনরাবৃত্তি করতে চাননি কিন্তু সেগুলোর সাথে আরও কিছু সংযোজিত করতে চেয়েছিল৷ অথচ প্রথম তিনটি সুসমাচার ঈসা মসিহের কার্যসমুহকে গ্যালিলি অঞ্চলে প্রকাশ করা হয়েছিল এবং যা বার্ণিত হয়েছিল জেরুজালেমের একটি মাত্র যাত্রার বিষয়ে যা ঈসা মসিহ ধর্ম উপাসনার সময় উল্লেখ করেছিলেন, সে জায়গায় তার মৃতু্য দেখেছিলেন, চতুর্থত সুসমাচার আমাদের দেখায় ঈসা মসিহ আগে জেরুজালেমে কি করেছিলেন এবং সে সময় ও তারপরে গালিলিও এলাকায় তার ধর্ম প্রচারের ব্যাপারে৷ যোহন সাক্ষ্য দেয় যে ঈসা তার দেশের রাজধানীতে তিনবার উপস্থিত ছিলেন যেখানে বার বার তাকে তার দেশের নেতারা প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং প্রবল বিরোধিতার পরে ক্রুশবিদ্ধ করবার জন্য তাকে সমর্পণ করা হয়েছিল, তাই যোহনের গুরুত্ব এটা ছিল যে তিনি জেরুজালেমে ইহুদিদের মধ্যে ঈসার ধর্ম প্রচার দেখিয়েছিলেন, যেটা পুরাতন নিয়মের সংস্কৃতির কেন্দ্র ছিল৷

চতুর্থ প্রচারক ঈসা মসিহের মোজেজার (অলৌকিক ঘটনা) বিষয়ে কোনো গুরুত্ব দেয় নাই কেবল মাত্র ছয়টির কথা উল্লেখ করেছেন৷ এ ব্যাপারে যোহন কী বোঝাতে চেয়েছিল? সে ঈসার কথাগুলোকে এইভাবে বোঝাতে চেয়েছিল, একমাত্র সর্বশক্তিমান, যিনি নিজে ঘোষণা দেন, 'আমি যেই আছি সেই আছি' তাঁর বক্তব্যের সাথে মিল রেখে বলেন, 'আমিই হই' এবং এভাবে সে ঈসার প্রচারক ঈসার জীবন ও তার কার্যসমুহকে বিশেষ মনোযোগের সাথে উল্লেখ করেছিল, কিন্তু যোহন আমাদের চোখের সামনে বেশি গুরুত্বারোপ করেছেন তার গৌরবময় ব্যক্তিত্বের ওপর৷ কিন্তু যোহন কোথায় এই কথাগুলো পেয়েছিল যা আর কারো নজরে পড়েনি এবং যা কিনা ঈসা মসিহের নিজের সম্পর্কে বলেছিলেন? প্রথম ঈদের পঞ্চাশত্তমী পরবতর্ী সময়ে পাকরুহ তাকে এ সমস্ত স্বরণ করিয়ে দিয়েছিল৷ কারণ যোহন নিজেই বিভিন্ন সময় স্বীকার করেছিল যে, সাহাবিরা ঈসার কিছু কথা সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারেনি, তাঁর পুনরুত্থানের পূর্ব পর্যন্ত এবং পাক-রুহ তাহাদের স্পর্শ না করা পর্যন্ত৷ এইভাবে সে পরবর্তিতে ঈসা মসিহের বাক্যের মর্ম উপলব্ধি করিয়াছিল, যাহা সে নিজে প্রকাশ করেছিল 'আমিই সেই' এগুলো হলো এই অদ্বিতীয় সুসমাচারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য৷

যোহন ঈসা মসিহের আরো অনেক পরস্পরবিরোধী কথা উল্লেখ করেছিল যেমন আলো এবং অন্ধকার, আত্মা এবং দেহ, সত্য এবং মিথ্যা, জীবন এবং মৃতু্য এবং যেমন উধর্্ব এবং অধঃ৷ আমরা অন্যান্য সুসমাচারে এই সকল বৈসাদৃশ্য সহজে দেখতে পাই না৷ কিন্তু অনেক বছর পর যখন যোহন গ্রিস অঞ্চলে বসবাস করত তখন পাকরুহ তাকে ঈসার এই কথাগুলি স্মরণ করে দিয়েছিল৷ সে প্রচারকদের কাছে ব্যাখ্যা করেছিল যে ঈসা শুধুমাত্র সেমেটিক হিব্রু ভাষায় কথাগুলো বলেনি কিন্তু অন্য জাতির লোকদের জন্য গ্রিক ভাষায়ও বলেছিলেন৷

যোহন- লিখিত সুসমচারের উদ্দেশ্য কী?

যোহন ঈসা মসিহকে কাব্যিক দর্শন অথবা কাল্পনিক আধ্যাত্মিকভাবে তুলে ধরতে চাননি কিন্তু সে অন্যান্য সবার থেকে বেশি করে মনোযোগ দিয়েছিলেন ঈসা মসিহের রক্ত-মাংসে গঠিত দেহ ধারনের ওপর, তাঁর দুর্বলতা এবং পিপাসার ওপর যখন তিনি ক্রুশবিদ্ধ অবস্থায় ঝুলছিলেন৷ সে আরো স্পষ্ট করে বলেছিলেন যে ঈসা মসিহ মানবকুলে নাজাতদাতা এবং শুধুমাত্র ইহুদিদের জন্য নয়, কারণ তিনি আল্লাহপাকের মেষশাবক, যিনি দুনিয়ার পাপসমূহকে স্খলন করে ছিলেন, তিনি আমাদের কাছে ঘোষণা করেছিলেন যে খোদা সকল মানুষকে কতই না অধিক ভালোবেসেছেন৷

আমরা এই ঘটনাগুলো এখানে উল্লেখ করেছি এই কারণে যে এই সুসমাচারের মূল বক্তব্য এবং নিয়ম ও লক্ষণগুলিকে মানুষের হৃদয়ে পৌছে দিতে পারে যেমন ঈসা মসিহ আল্লাহপাকের পুত্র তার শাশ্বত জীবন অস্থায়ী সময়ের জন্য দেখা গিয়েছিল এবং তার ঐশী ক্ষমতা, তাঁর মানবরূপী অবস্থার মধ্যেও দেখা গিয়েছিল এবং তার কর্তৃত্ব দুর্বলতার মধ্যে প্রতিভাত হয়েছিল৷ অতএব ঈসা মসিহের মধ্যে সমস্ত মানবকুলের জন্য খোদার উপস্থিতি ছিল৷

ঈসা মসিহ সম্পর্কে যোহনের বাক্যগুলির উদ্দেশ্য এটা ছিল না যে, তাকে দার্শনিক বা রহস্যপূর্ণভাবে প্রদর্শন, কিন্তু পাকরুহের মধ্যে দিয়ে প্রভুকে চেনা, যার ভিত্তি ছিল ভক্তিযুক্ত বিশ্বাস৷ অতএব সে তার সুসমাচারকে সমাপ্ত করেছিল এই বিখ্যাত উক্তি দিয়ে, এই কথাগুলি লেখা হয়েছে এই কারণে যে, তোমরা বিশ্বাস করতে পার ঈসাই মসিহ, খোদার পুত্র এবং এই বিশ্বাসেই তাঁর মধ্যে তোমরা জীবন পেতে পার' (যোহন ২০:৩১)৷ যোহন সুসমাচারের উদ্দেশ্য ছিল এই যে, ঈসা মসিহের ওপর তার ঐশী ও জীবন্ত বিশ্বাস স্থাপন৷ এই বিশ্বাসই আমাদের ভিতরে পবিত্র, ঐশী এবং অনন্ত জীবনের আশার সৃষ্টি করে৷

কাদের কাছে যোহনের সুসমাচার লিখিত হয়েছিল?

এই কিতাব যাহা সম্পূর্ণভাবে ঈসা মসিহ সম্পর্কে তার সত্য প্রকাশ করেছিল যা অবিশ্বাসীদের মধ্যে প্রচারের জন্য লেখা হয়নি বরং জামাতকে সংগঠিত করবার এবং রুহের পরিপক্বতার জন্য লেখা হয়েছিল৷ পৌল ইতোমধ্যেই আনাটোলিয়াতে কারারুদ্ধ হয়েছিল, পিতর তখন ওইসব পরিত্যক্ত জামাতগুলিতে গিয়েছিল এবং তাদেরকে উত্‍সাহিত করেছিল৷ যখন পিতর এবং পৌল মৃতু্যবরণ করেন খুব সম্ভবত রোমে নিরোর শাসনামলে নির্যাতনকালে, তখন যোহন তাদের জায়গায় কাজ শুরু করেন এবং এফিসাসে বসবাস শুরু করেন, সেটি ছিল সেই সময়ের খ্রিস্টধর্মের মূল কেন্দ্র৷ সে বিভিন্ন জামাতকে পরিচালনা করেন, যেগুলো এশিয়া মাইনরের মধ্যে বিক্ষিপ্ত অবস্থায় ছিল৷ যে কোনো ব্যক্তিই হোকনা কেন, তার চিঠিগুলো এবং প্রকাশিত বাক্যের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অধ্যায় পড়েছে, সেই বুঝতে পারবে, এই সাহাবির (যোহনের উদ্বিগ্নতা ও তার উদ্দেশ্যের বিষয়, যে আমাদেরকে খোদার ভালোবাসা, যা প্রকাশিত হয়েছিল ঈসা মসিহের রক্ত-মাংসে আবির্ভূত হওয়ার মধ্য দিয়ে৷ তিনি সংগ্রাম শুরু করেছিলেন সেইসব আত্মিক বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে, যারা তার দলের লোকদের মধ্যে নেকড়ের মতো ঢুকে তাদেরকে কলুষিত করছিল৷ অলস চিন্তা, অনড় নিয়মকানুন এবং অপরিছন্ন স্বাধীনতা দিয়ে, কারণ সেগুলো সত্য এবং তুচ্ছ চিন্তাধারায় যুক্ত ছিল৷

বাপ্তিস্নদাতা যোহনের সাহাবিরাও আনাটোলিয়াতে বাস করত, যারা ঈসা মসিহের ত্রাণকর্তার থেকেও বেশি সম্মান করত যে অনুতাপের স্বীকারের বিষয় মানুষদেরকে ডাকতেন৷ তারা তখনো অপেক্ষা করছিল সেই প্রতিশ্রুত নাজাতদাতার জন্য এবং চিন্তা করত যে তিনি এখনো আসেন নই৷ যারা মসিহের বিরুদ্ধাচরণ করছিল যোহন তাদেরকে পরস্পরবিরোধী করে তুলছিল৷ তিনি এই কথা উচ্চারণ করছিলেন, বিরুদ্ধবাদীদের বিরম্নদ্ধে এই বলে যে, এবং আমরা তার গৌরব দেখেছি যে গৌরব পিতার একমাত্র একজাত পুত্রের, যাহা সত্য এবং অনুগ্রহে পূর্ণ৷

এটা প্রতীয়মান হয় যে, এই সুসমাচার গ্রহণকারীরা অইহুদি বিশ্বাসী ছিল, কারণ, যোহন তাদের কাছে ইহুদি জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছিলেন যা ইহুদিদের কাছে ব্যাখ্যা দেওয়ার কোন প্রয়োজন ছিল না, অধিকন্তু যোহন তার সুসমাচারে সেই সময় ঈসা মসিহের কথা, যা এরামাইক ভাষায় লেখা হয়েছিল তার ওপর নির্ভর করেন নাই, যেগুলো অন্য প্রচারকদের মতো গ্রিক ভাষায় লেখা হয়েছিল৷ বরং তার জামাতগুলোতে গ্রিক ভাষায় উক্তি তুলে ধরেছিলেন যা তার সুসমাচারে রম্নহানীসত্য পূর্ণ ছিল এবং ঈসা মসিহের কথায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন নির্ভেজাল গ্রিক ভাষায়, সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে, এবং পাকরুহের পরিচালনায়৷ অতএব তার সুসমাচার সহজ এবং গভীরতায় পূর্ণ ছিল এবং যা অন্যান্য সকল শিল্পীসুলভ প্রচেষ্টার চাইতেও অলঙ্কারপূর্ণ বা বাকপটু ছিল৷ ওই কারণে তার সুসমাচারে পাকরুহ আমাদের কাছে সহজভাবে সত্যকে প্রকাশ করে, যাতে করেপ্রত্যেকে এর স্থায়ী অর্থ উপলব্ধি করতে পারে৷

কখন এই অদ্বিতীয় সুসমাচার লেখা হয়েছিল?

আমরা ঈসা মসিহকে ধন্যবাদ দেই কারণ তিনি প্রাচ্যের মিশরে প্রত্নতাতি্বকদের অনেক বছর আগে দেখান মিশর দেশীয় একখানা হস্তলিপিযুক্ত খাগড়া (Papyrus) যা খ্রিস্ট পরবতর্ী একশ বছর পরে ওই প্যাপিরাসের কিছু কথা যোহন লিখিত সুসমাচারে স্পষ্টভাবে লিখিত আছে এবং এই আবিষ্কারের সাথে সুদীর্ঘ বির্তকের অবসান ঘটে এবং ক্ষতিকারক সমালোচনা নির্বাপিত হয়, কারণ এই প্রত্নতাতি্বক খননকার্য প্রমাণ করে যে, যোহনের সুসমাচার, যাহা খ্রিস্টাব্দেও শুধুমাত্র এশিয়া মাইনরে নয় কিন্তু উত্তর আফ্রিকাতেও সবার জানা ছিল৷ কোন সন্দেহ নেই যে রোমেও সবাই এটা জানত৷ এই সত্য আমাদের বিশ্বাসকে আরও সুদৃঢ় করে যে, নিশ্চিতভাবেই সাহাবি যোহন যে সুসমাচার লিখেছিল তাহা পাকরুহে পূর্ণ ছিল৷

এই সুসমাচারের মর্মবস্তু কী?

কোন মানুষের পক্ষে সহজ নয় এই প্রত্যাদৃষ্ট ধর্মশাস্ত্রকে ঠিকমতো উপলব্ধি করা এবং এটা বিশেষভাবে কঠিন যোহন লিখিত সুসমাচারের বিভিন্ন অংশকে বিছিন্ন করে দেখা, তত্‍সত্ত্বেও আমরা নিচের লেখাগুলিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই:

১. বেহেস্তি নূর ঝলমল করছে (১:১ - ৪:৫৪)
২. অন্ধকারে নূর ঝলমল করছে কিন্তু অন্ধকার তা উপলব্ধি করতে পারে নাই (৫:১ - ১১:৫৪)
৩. সাহাবীদের চারিদিক ঘিরে নূর বা আলো ঝলমল করছে৷ (১১:৫৫ - ১৭:২৬)
৪. আলো অন্ধকারকে জয় করে (১৮:১ - ২১:২৫)

প্রচারক যোহন তার চিন্তাসমূহকে গুছিয়ে নিয়েছেন তার ভিতরের সংযুক্ত বলয়কে আধ্যাত্মিক স্রোতের মতো, যার ভেতর প্রতিটি বলয় একটি অথবা দুটি মূল ধারণা বা কথার উপর কেন্দ্রীভূত ছিল৷ বলয়গুলি সম্পূর্ণভাবে একে অপর থেকে আলাদা ছিল না কিন্তু কখনো কখনো পরস্পর পরিচ্ছিন্ন করেছে৷ যোহনের সেমেটিক হিব্রু চিন্তাধারা এবং সেইসাথে তার গভীর আধ্যাত্মিক দর্শন গ্রিক ভাষাতে জীবন্ত গৌরবময় করে খাপ খাইয়ে নিয়েছিল৷ পাকরুহ এই সুসমাচারের প্রকাশভঙ্গিকে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে পরিষ্কার করে তুলে ধরে৷ এটা আমাদের কাছে অন্তহীন জ্ঞানের উত্‍স হিসেবে পরিণত হয়ে আছে৷ যে কেউ এই কিতাবটিকে গভীরভাবে অধ্যয়ন করবে সে-ই নিজেকে আল্লাহপাকের পুত্রের কাছে নতজানু করবে এবং তার জীবনকে কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁর কাছে কোরবান করবে এবং প্রশংসা এবং অনন্তমুক্তি লাভ করবে৷

প্রশ্নঃ

১. চতুর্থ সুসমাচারের লেখক কে?
২. চতুর্থ সুসমাচার এবং প্রথম তিনটি সুসমাচারের মধ্যে সম্পর্ক কী?
৩. যোহন- লিখিত সুসমাচারের উদ্দেশ্য কী?
৪. এই অদ্বিতীয় সুসমাচারটি কার কাছে লেখা হয়েছিল?
৫. বক্তব্যকে ঠিক রেখে এইগুলিকে কীভাবে আলাদা করা সম্ভব?

www.Waters-of-Life.net

Page last modified on June 06, 2012, at 11:27 AM | powered by PmWiki (pmwiki-2.3.3)