Previous Lesson -- Next Lesson
২. পৌলের প্রচার রহস্য (রোমীয় ১৫:১৭-২১)
রোমীয় ১৫:১৭-২১
আমি আলস্নাহর জন্য যে কাজ করছি তাতে মসিহ ঈসার মধ্য দিয়ে আমার গৌরব করবার অধিকার আছে৷ ১৮-১৯. মসিহ আমার মধ্য দিয়ে যা করেছেন তার বাইরে কোনো কথা বলবার সাহস আমি করব না৷ তিনিই আমার কথা ও কাজের মধ্য দিয়ে, কুদরতি ও চিহ্ন-কাজের মধ্য দিয়ে এবং পাকরূহের শক্তি দিয়ে অ-ইহুদিরে আলস্নাহর বাধ্য করেছেন৷ তার ফলে আমি জেরম্নজালেম থেকে শুরম্ন করে ইলস্নুরিকা পর্যনত্ম সমসত্ম জায়গায় মসিহের বিষয় সুসংবাদ সম্পূর্ণভাবে তবলিগ করেছি৷ ২০. যেখাবে মসিহের নাম কখনও বলা হয় নি সেখানে সুসংবাদ তবলিগ করাই আমার জীবনের লক্ষ্য, যেন অন্যের গাঁথা ভিত্তির ওপরে আমাকে গড়ে তুলতে না হয়৷ ২১. পাক-কিতাবে লেখা আছে, 'যাদের কাছে তাঁর বিসয় বলা হয় নি তারা তা দেখতে পাবে, আর যারা কখনও শোনে নি তারা বুঝতে পারবে৷'
বিজয় প্রচারের ফলে পৌল আনন্দিত ও গৌরবান্বিত হয়েছেন তার যাকজ বৃত্তিতে৷ তাত্ক্ষণিকভাবে তিনি প্রচার করতেন যে, তার প্রচার কাজ এবং বক্তব্য তার নিজের নয়, বরং তা মসিহের মধ্য থেকে উত্সারিত, যিনি রয়েছেন তার মধ্যে অবস্থানরত, আর তিনি তার মধ্যদিয়ে কথা ও কাজ করে ফিরছেন৷ অবিশ্বাসীদের মধ্যে সুসমাচার প্রচারকারী সাহাবির নিজস্ব কোনো সাহস ছিল না কথা বলার ও তার ফল ও প্রভাবের মসিহের থেকে যদি অনুপ্রানিত না হতো, তাই তিনি নিজেকে নাজাতদাতার দাস হিসেবে বিবেচনা করতেন ও তাঁর নিয়ন্ত্রণে বাধ্য ছিলেন৷ সাহাবির জীবনের রহস্য ছিল এটাই, যা হলো তিনি 'মসিহের মধ্যে' অবিস্থত৷ মসিহের চিনত্মাই ছিল তাঁর চিনত্মা৷ মসিহ যা কিছু প্রেরণা দিতেন তাই তিনি করতেন৷ প্রেরিত খন্ড সমূহ লেখার পিছনে এটা হলো স্মরণীয় বিষয়, আর তা সমভাবে কার্যকর বর্তমান বিশ্বে জামাত সমূহে সকল প্রচারের ভূমিকায় তাত্পর্যবহ৷ পৌলের জীবন, যিনি নিজেকে মসিহের দাস হিসেবে গণ্য করেছিলেন, নিয়ে মসিহের যে পরিকল্পনা ছিল, তিনি যেন অবিশ্বাসীদের সত্যালোকে পরিচালনা করে বিশ্বাসহেতু মসিহের বাধ্যগত ও অনুগত বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন৷
পৌলের সেবা কাজের জন্য তাঁর বক্তব্য ও লেখা বা পত্র যথেষ্ট মনে হয় নি; তাই তাকে ভ্রমনে ক্লানত্ম হতে হয়েছে, অরম্নচিকর খাদ্য খেতে হয়েছে, কায়িক পরিশ্রম, কঠিন কাজের দ্বারা জীবিকা অর্জন করতে হয়েছে, আর আশ্চর্য বা কুদরতের কাজ করেছেন৷ তিনি পরিষ্কারভাবে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁর সকল বক্তব্য, কর্ম ও কুদরত সাধিত হয়েছে পিতা, পুত্র ও পাকরূহের শক্তিতে, তাঁর নিজের তরফ থেকে কিছুই হয় নি৷ তাঁর ফলপ্রসু সেবার রহস্য হলো, নিজেকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করার ফল, নাজাতদাতা মসিহের মহিমার দ্বারাই হয়েছে সাধিত৷
পৌল ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর সেবা কাজ বিসত্মৃতি লাভ করেছে জেরম্নজালেম থেকে এনাটলিয়া পর্যনত্ম এবং গ্রীসের পশ্চিমাঞ্চল অবধি৷ পুরো এলাকাটি ছিল রোম সম্রাজের আওতাভুক্ত৷ তিনি তার অধিকাংশ সফরযাত্রা পায়ে হেটে করেছেন পরিচালনা, ফলে বড় বড় বিপদের মুখোমুখি হতে হয়েছে, ক্লানত্মিকর ছিল, ঘোড়ার পিঠে চড়ার সুযোগ ছিল না, ছিল না সুযোগ গাড়িতে ভ্রমনের৷ অজ্ঞ, অধার্মিক ও অবিশ্বাসীদের মসিহের পক্ষে জয় করার কাজে তিনি নিজেদের অবসন্ন করে তুলেছিলেন৷ তিনি আরও বলেছেন, তাঁর সেবা কাজের সম্মান হলো মসিহের সুসমাচার নগরে, জনপদে, শহরে, প্রদেশে ও সর্বদেশে, যেখানে মসিহের নামে আদৌ প্রচারিত হয় নি সে সকল স্থানে পৌছে দেয়াই হলো মুখ্য বিষয়৷ অন্যের ভিত্তির ওপর তিনি কোনো কিছু প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে তিনি আগ্রহী ছিলেন না৷ বরং কেউ যেখানে সুসমাচারের বার্তা নিয়ে অদ্যাবধি পৌছায় নি সে সকল স্থানে তিনি প্রথম প্রচারক হিসেবে প্রচার করেছেন, আর সে কারণেই তাকে মারাত্মক বিপদ, ঝুকি ও যন্ত্রণাকাতর হতে হয়েছে৷ এ সেবাকর্মের দ্বারা তিনি ঐশি প্রতিজ্ঞা যা যিশাইয়া নবীর ছিল, '(যিশাইয়া ৫২:১৫)' কিন্তু পরে তিনি অনেক জাতির লোককে পাক-সাফ করবেন, আর তাঁরই দরম্নন বাদশাহরা মুখ বন্ধ করবে, কারণ যা তাদের বলা হয় নি তা তারা দেখতে পাবে, আর যা তারা শোনে নি তা বুঝতে পারবে৷
ইহুদিগণ সংখ্যাগুরম্ন বিধায় ঐশি পরিকল্পনার সাথে ঐকমত্যে আসতে রাজী হয় নি, উপরন্তু নিজেদের একমাত্র খোদার লোক হিসেবে বিবেচনা করতো৷ পৌল অবিশ্বাসীদের মধ্যে তার সেবা কর্মের ব্যাখ্যা প্রদান করেন৷ কিতাবের শিক্ষার আলোকে তা প্রমাণ করেন, আর অবিশ্বাসীদের প্রতি কৃত খোদার প্রতিজ্ঞার কথা প্রমাণ করেন৷
প্রার্থনা: হে বেহেশতি পিতা, মসিহের মাধ্যমে আমরা তোমায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি, কেননা তোমার বিশ্বসত্ম সেবক তাদের নিজেদের নামে কথা বলেন নি, অথবা নিজেদের শক্তির দম্ভে কাজ করেন নি, বরং মসিহের নামে কথা বলেছেন ও তাঁর শক্তিতে কাজ করেছেন৷ আর তাঁর কাছ থেকে শক্তি সঞ্চয় করেছেন৷ সকল কাজ ও কথার দ্বারা তাদের সুরক্ষা করো আর চিরদিনের জন্য তাদের মসিহের রম্নহানি দেহে প্রতিষ্ঠা করো৷
প্রশ্ন: