Home -- Bengali -- John - 003 (The word before incarnation)
Previous Lesson -- Next Lesson
১. মানবরূপ ধারণের আগে বাক্যের সারাংশ এবং কার্য (যোহন ১:১-৫)
যোহন ১:২৪
২ প্রথমেই তিনি খোদার সাথে ছিলেন৷ ৩ তার মধ্য দিয়েই সব কিছু সৃষ্টি হয়েছিল এবং তাঁকে ব্যতীত কিছুই সৃষ্টি হয় নাই৷ ৪ তাঁর মধ্যেই জীবন ছিল এবং ওই জীবন মানুষের জন্য ছিল আলো৷
ঈসা মসিহ কখনো নিজের জন্য জীবন যাপন করেননি কিন্তু সবসময় খোদার গৌরবের জন্যই করেছিলেন৷ তিনি কখনো পিতা হইতে বিছিন্ন হন নাই কিন্তু সবসময়ই তাঁর দিকে নির্দেশিত ছিলেন, তাঁর সাথে বসবাস করতেন এবং তাঁর মধ্যেই ছিলেন? ঈসা মসিহ তার পিতার দিকে নির্দেশিত, এটি প্রচারক যোহনের কাছে এতই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, সে তাঁর সুসমাচারের প্রথমেই এর অর্থ পুনরাবৃত্তি করেছিলেন৷ ঈসা মসিহ এবং তাঁর পিতার ভেতর এই স্থায়ী একাত্মতা হলো পবিত্র ত্রিত্বের গূঢ় রহস্য৷ আমরা তিনজন আলাদা খোদায় বিশ্বাস করি না, যারা একে অপর থেকে বিছিন্ন, কিন্তু আমরা একমাত্র খোদায় বিশ্বাস করি যিনি প্রেমে পরিপূর্ণ৷ এখন এই শ্বাশত খোদা এমন একজন, যিনি বিছিন্ন বা একা নন, কিন্তু তার পুত্র সব সময় তার সাথে ছিলেন নিখুঁত ঐকতানে তার সাথে বাস করতেন৷ যদি কেউ খোদার ভালোবাসাকে অনুভব না করে থাকেন তার হৃদয়ে পবিত্র আত্মার মাধ্যমে সে সত্য এবং খোদার বৈশিষ্ট্যকে উপলব্ধি করতে পারবে না এ বেহেশতি ভালোবাসা যা পিতাপুত্র এবং পাকরুহ একমাত্র খোদাকে একাত্ম করে৷
প্রথমেই যখন খোদা দুনিয়া সৃষ্টি করেন তা তিনি এক এবং নি:শব্দে করেননি বরং তিনি সমস্ত কিছুকে তার বাক্যের মাধ্যমে সৃষ্টি করেন৷ যেহেতু ঈসা মসিহ খোদার বাক্য ছিলেন তাই তার মাধ্যমেই দুনিয়া সৃষ্টি হয়েছিল, এটা এই অর্থ প্রকাশ করে যে, ঈসা মসিহ কেবল নাজাতদাতা, মধ্যস্ততাকারী ও উদ্ধারকর্তাই ছিলেন না বরং তিনি স্রষ্টাও ছিলেন৷ যেহেতু কিছুই ঈসা মসিহকে বাদ দিয়ে বিদ্যমান ছিল না তাই তিনি সর্বশক্তিমান৷ যেহেতু তিনি ব্যতীত কিছু ঘটে না তিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন৷ আহাঃ সেই বৃহত্ হৃদয় থাকতে হবে যেটা বিশাল প্রশস্ত ঈসা মসিহকে বুঝবার এবং উপলব্ধি করবার জন্য৷আধুনিক এবং বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং সমস্ত কণিকা এবং নক্ষত্রপুঞ্জ অন্য কিছুই নয়, শুধুমাত্র তা মসিহের ক্ষমতা ও গৌরবের নম্র প্রকাশ৷ তোমার কন্ঠ, তোমার পেশি, তোমার শারীরিক গঠন এবং তোমার হৃত্স্পদন এবং আর সবকিছুই হলো মসিহের দান৷ সুতরাং, কখন তুমি তাকে ধন্যবাদ দেবে?
খোদা তার জন্য বাক্য এবং তার আত্মা ব্যতিত সব কিছুই সৃষ্টি হয়েছিল৷ তিনি জীবিত শ্বাস্বত এবং পবিত্র৷ ঠিক যেমন খোদার নিজের ভিতরে জীবন আছে, একই ভাবে ঈসা মসিহ সত্য জীবনের উত্স, বিশ্বস্ত প্রেরণাদায়ক যিনি আমাদেরকে অপরাধ এবং পাপের মৃতু্য থেকে উত্থিত করেন এবং ঈসা মসিহের মধ্যে এই বেহেশতী জীবন মৃতু্যকে পরাস্ত করে৷ তিনি কবর থেকে উঠে আসেন তার বেহেশতী জীবনের শক্তিতে৷ ঈসা মসিহ কেবলমাত্র শ্রষ্টা নন কিন্তু তার নিজের মধ্যেই জীবনের উত্স রয়েছে৷ যেহেতু তিনি সম্পূর্ণ পবিত্র তিনি, কখনোই মৃতু্যবরণ করবেন না৷ কোনো গুনাহই খোদা অথবা তাঁর পুত্রের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না, তাই তিনি চিরকাল জীবিত আছেন৷ যোহন সুসমাচারের অধ্যায় গুলিতে মসিহের জীবন সম্পর্কে তার চিন্তাধারাগুলো বারবার দেখতে পাই৷ এই জীবন তার মূলনীতির একটি ভিত্তি৷
সূর্যের আলো পৃথিবী নামক আমাদের এই গ্রহে জীবন সঞ্চার করে৷ কিন্তু মসিহের বিষয়টি হলো তার বিপরীত সত্য৷ তার জীবন হলো পুনরুজীবন এবং আলোক সম্পাতের কারণ যাহার মধ্যে দিয়ে আমরা আশা পাই৷ আমাদের ধর্ম, প্রথাগত মৃতু্য এবং বিচারে ধর্ম নয়, কিন্তু জীবন আলো এবং আশার বাণী, মসিহের মৃতু্য থেকে পুনরুত্থিত হওয়া, সকল হতাশাকে নির্বাসিত করে৷ আমাদের ভেতর পাকরুহের উপস্থিতি আমাদেরকে খোদার অংশীদারী করেছে৷
গুনাহের কারণে দুনিয়া অন্ধকারময়, কিন্তু ঈসা মসিহ হলেন আলো ও ভালোবাসা৷ কোনো অন্ধকার, মন্দতা এবং দুষ্টতা তার মধ্যে নেই৷ এই কারণেই ঈসা মসিহ পরিপূর্ণ মহিমায় প্রকাশিত হয়েছেন৷ তিনি আলোর থেকেও বেশি ঝলমলে৷ যাই হোক, প্রচারক যোহন, মসিহের এই ঝলমলে মহিমার কথা দিয়ে, শুরু করেন নাই, বরং তিনি তাঁর জীবন এবং শক্তিকে অবতারনা করেছেন৷ কারণ মসিহের পবিত্রতা সম্পর্কে জ্ঞান তিনি আমাদের কাছে প্রকাশ করেছেন ও আমাদেরকে বিচারিত করেছেন৷ কিন্তু তার জীবনের উপলব্ধি আমাদেরকে জীবিত করেছে৷ ঈসা মসিহের ওপর গভীরভাবে ধ্যান করা আমাদেরকে উত্সাহ এবং সত্যিকারভাবে জীবন দান করে৷
ঈসা মসিহ মানবজাতির আলো বা নূর৷ তিনি নিজের জন্য আলো বিকিরণ করেন না এবং নিজের নামকে বড় করে দেখান না৷ বরং তিনি আমাদের জন্যই আলো বিকিরণ করেন৷ আমরা আলোর উত্স নই কিন্তু অন্ধকারের উত্স৷ তিনি আমাদের আলোকিত করেন, যাতে করে তাঁকে বুঝতে এবং উপলব্ধি করতে পারি৷ তাঁর সুসমাচারে করেন যাতে করে আমরা আমাদের এই দুরবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারি৷ আমরা তার দিকে দৃঢ় প্রত্যয় এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে অগ্রসর হই৷
প্রার্থনা : ও প্রভু ঈসা মসিহ, আমরা তোমার কাছে নতজানু হই, কারণ তুমি, পিতা এবং পবিত্র আত্মা এক৷ তুমি পিতার সাথে ঐকতানে দুনিয়া সৃষ্টি করেছিলে৷ তুমি আমাকে জীবন দান করেছ৷ আমার জীবনের সমস্ত অন্ধকারকে মার্জনা কর এবং আমাকে তোমার পাকরুহের মাধ্যমে আলোকিত কর যাতে করে আমি সত্যিকারভাবে বেঁচে থাকতে পারি এবং সমস্ত গুনাহ ত্যাগ করতে পারি, আর তোমার অনন্ত জীবনের আলোর দিকে অগ্রসর হতে পারি৷
প্রশ্ন: