Previous Lesson -- Next Lesson
ক) ইহুদিরা খোদার ধার্মিকতাকে তুচ্ছজ্ঞান করেছে, যা কেবল বিশ্বাসহেতু হয় লব্ধ৷ তারা ধার্মিকতা অর্জনের জন্য শরীয়তের ও কর্মের ওপর স্থির প্রতিজ্ঞ রয়েছে (রোমীয় ৯:৩০ - ১০:৩)
রোমীয় ৯:৩০ - ১০:৩
৯:৩০. তাহলে আমরা এই কথাই বলব যে, অ-ইহুদিরা যদিও আলস্নাহর গ্রহণযোগ্য হবার চেষ্টাও করে নি তবুও তাদের ঈমানের মধ্য দিয়েই তারা আলস্নাহর গ্রহণযোগ্য হয়েছে৷ ৩১. কিন্তু বনি-ইসরাইলরা শরীয়ত পালনের মধ্য দিয়ে আলস্নাহর গ্রহণযোগ্য হবার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তারা তা হতে পারে নি৷ ৩২. কেন পারে নি? কারণ তারা ঈমানের ওপর ভরসা না করে কাজের ওপর ভরসা করেছিলেন৷ যে পাথরে লোকে উচোট খায় তাতেই তারা উচোট খেয়েছিল৷ ৩৩. এই বিষয়ে পাক-কিতাবে লেখা আছে, দেখ, আমি সিয়োনে এমন একটা পাথর রাখছি যাতে লোকে উচোট খাবে এবং যা লোকের উচোট খাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে৷ কিন্তু যে তাঁর ওপরে ঈমান আনে সে নিরাশ হবে না৷ ১০:১. ভাইয়েরা, বনি-ইসরাইলদের জন্য আমার দিলের গভীর ইচ্ছা ও আলস্নাহর কাছে আমার মুনাজাত এই যে, তারা যেন নাজাত পায়৷ ২. তাদেও সম্বন্ধে আমি এই সাৰ্য দিচ্ছি যে, আলস্নাহর প্রতি তাদের গভীর আগ্রহ আছে, কিন্তু কি করে আলস্নাহর গ্রহণযোগ্য হওয়া যায় তা তারা জানে না৷ ৩. আলস্নাহ মানুষকে কেমন করে ধার্মিক বলে গ্রহণ করেন সেই কথায় মনোযোগ না দিয়ে নিজেদের চেষ্টায় তারা তাঁর গ্রহণযোগ্য হতে চাইছিল৷ সেজন্যই আলস্নাহ যে ওপায়ে মানুষকে ধার্মিক বলেল গ্রহণ করেন তা তারা মেনে নেয় নি৷
পৌল ধার্মিকতা অর্জনের প্রসঙ্গে পরোক্ষভাবে রোমের জামাতের সদস্যদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত থেকে ফিরাতে চেয়েছিলেন যা কেবল মসিহের ওপর বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমেই ব্যক্তি ধার্মিক হতে পারে যা তার কর্মের দ্বারা কখনোই অর্জন করা সম্ভব নয়৷ আর যারা কর্মের দ্বারা ধার্মিকতা অর্জনের বিষয় সমর্থন করেন তারা ব্যক্তিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দেয়৷ তাঁর বক্তব্য ছিল চূড়ান্ত৷ প্রথম জামাতের সভায় কাছে পৌল স্বীকার করেছেন, বিশেষ করে তাদের কাছে যারা শরীয়ত পালনের দ্বারা ধার্মিকতা অর্জনের পক্ষে ছিল, তাদের কেউই সম্পূর্ন নিখুঁতভাবে শরীয়ত পালন করতে সক্ষম নয়৷ তাই নিজের ধার্মিকতার দ্বারা কেউই রক্ষা পেতে বা নাজাত পেতে মোটেই সক্ষম নয়৷ তবে খোদার রহমত যা মসিহের মাধ্যমে দান করা হয়েছে, সকলে ধার্মিক বলে গৃহীত হয়ে থাকে (প্রেরিত ১৫:৬-১১)৷ যে কেউ মসিহের দেয়া রহমত অস্বীকার বা ঘৃণা করে সে কেবল অন্ধকারে ঘুরে বেড়ানো মাত্র, আর চলার পথে বৃহত্প্রস্তর খন্ডে হোছট খেয়ে সে পড়ে যায়, পতিত হয় ও বিনাশ পায় (ইশাইয়া ৮:১৪, ২৮:১৬)৷
যদিও তিনি ইহুদিদের খোদার সাথে মিলিত করেছিলেন তথাপি অনেকের কাছে মসিহ বিঘ্নের কারন হয়ে দাড়িয়েছিলেন, কারণ তারা মসিহের দেয়া আশির্বাদ প্রত্যাখ্যান করেছিল আর ফলস্বরূপ পুনরায় বিচারদন্ডের মুখোমুখি হয়ে পড়েছিলো৷ যাহোক, যারা তাদের মুক্তিদাতার প্রতি বিশ্বাস করেছিলো এবং বিশ্বাসে তাকে গ্রহণ করেছিল, কেবল তারাই পেয়েছিল নাজাত৷
পৌল স্বীকার করেছিলেন, অনেক ইহুদি শরীয়ত পালনের ক্ষেত্রে বড়ই আনন্দিত ছিলেন, তাই তারা আজ্ঞা সমূহ পালনের বিষয়ে যথার্থ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন৷ শরীয়তের পথে অধ্যাবসায়ের জন্য তিনি তাদের পছন্দ করতেন, মনে করেছিলেন তাদের জীবনে আগত সুযোগ তারা সানন্দে বরণ করে নিবেন, খোদা তাদের প্রতি সবচেয়ে মূল্যবান যে উপহার দিয়েছেন তা একান্তভাবে গ্রহণ করবেন৷ তাই পৌল খোদার দরবারে প্রার্থনা করলেন এবং আন্তরিকভাবে যুক্তি দাড় করালেন যে তাদের জন্য প্রস্তুতকৃত নাজাতের পথে হবে তারা পরিচালিত
যাহোক, পৌল দেখতে পেয়েছিলেন, রোম সাম্রাজ্যে ইহুদিদের অধিকাংশ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শরীয়ত মোতাবেক বাধ্যবাদকতা পালন করা হয়৷ তারা নিজেদের মনোনীত লোক হিসেবে গণ্য করতো, আর অন্য লোকদের নিকৃষ্ট লোক ভাবতো৷ তারা মসিহের মাধ্যমে খোদার নতুন ধার্মিকতার কোনো গুরুত্ব প্রদান করতো না, নিজেদের নির্দোষ বেগুনাহ প্রমাণ করার জন্য উল্টো নিয়মাচারের প্রতি আবদ্ধ ছিল, যেমন: উপবাস, নামাজ, কোরবানি, যাকাত ও হজ্জ্বপালনসহ ৬১৩টি আজ্ঞা পালনে ব্যস্ত থাকতো৷ ফলে খোদার সত্যিকারের ধার্মিকতা ইচ্ছাকৃত প্রত্যাখ্যান করেছিলো৷ কি মারাত্মক প্রবঞ্চনার চিন্তা ছিল তাদের, কতইনা মারাত্মক শাস্তি নিজেদের উপর নিজেরা ডেকে এনেছিল৷
প্রার্থনা: হে বেহেশতি পিতা, আমরা তোমার আরাধনা করি, কেননা আমরা অবিশ্বাসি পরজাতি হিসেবে তোমার রহমতের ভান্ডার থেকে রহমতের ওপর রহমত পেয়ে চলছি, আর তুমি সবচেয়ে উত্তম উপহার হিসেবে তোমার ধার্মিকতায় আমাদের ধার্মিক করেছো৷ সুতরাং আমরা তোমার কাছে ফরিয়াদ জানাই, একই আশির্বাদ, উপহার স্বরূপ অন্যান্য ধর্মাবলম্বিদের দান করো যারা মনে কর নিজেদের কর্মের দ্বারা মুক্তি অর্জন সম্ভব, তাই তারা নিজেদের ধার্মিকতার জোরে মুক্তির উপায় খুঁজে ফিরছে৷ তাদের গর্ব চূর্ণ বিচূর্ণ করে দাও, সাহায্য করো তাদের তোমার ওপর বিশ্বাস করার জন্য এবং তোমার সন্তান হিসেবে তোমায় আস্থা স্থাপনের জন্য৷
প্রশ্ন:
- ৬৩. বিভিন্ন জাতিগোষ্টির লক্ষকোটি লোকজন কোন কারণে খোদার ধার্মিকতায় ধার্মিক বলে বিবেচিত হচ্ছেন ও তাতে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছেন?৬৪. অন্যান্য ধর্মাবলম্বিগণ কেনইবা নিজ নিজ ধর্মমতে প্রবিষ্ট থেকে খোদার ধার্মিকতা অর্জনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন?