Home
Links
Bible Versions
Contact
About us
Impressum
Site Map


WoL AUDIO
WoL CHILDREN


Bible Treasures
Doctrines of Bible
Key Bible Verses


Afrikaans
አማርኛ
عربي
Azərbaycanca
Bahasa Indones.
Basa Jawa
Basa Sunda
Baoulé
বাংলা
Български
Cebuano
Dagbani
Dan
Dioula
Deutsch
Ελληνικά
English
Ewe
Español
فارسی
Français
Gjuha shqipe
հայերեն
한국어
Hausa/هَوُسَا
עברית
हिन्दी
Igbo
ქართული
Kirundi
Kiswahili
Кыргызча
Lingála
മലയാളം
Mëranaw
မြန်မာဘာသာ
नेपाली
日本語
O‘zbek
Peul
Polski
Português
Русский
Srpski/Српски
Soomaaliga
தமிழ்
తెలుగు
ไทย
Tiếng Việt
Türkçe
Twi
Українська
اردو
Uyghur/ئۇيغۇرچه
Wolof
ייִדיש
Yorùbá
中文


ગુજરાતી
Latina
Magyar
Norsk

Home -- Bengali -- The Ten Commandments -- 04 Second Commandment: Do Not Make Idols
This page in: -- Afrikaans -- Arabic -- Armenian -- Azeri -- Baoule -- BENGALI -- Bulgarian -- Cebuano -- Chinese -- English -- Farsi -- Finnish? -- French -- German -- Gujarati -- Hebrew -- Hindi -- Hungarian? -- Indonesian -- Kiswahili -- Malayalam? -- Norwegian -- Polish -- Russian -- Serbian -- Spanish -- Tamil -- Turkish -- Twi -- Ukrainian? -- Urdu? -- Uzbek -- Yiddish -- Yoruba
ব্যাখ্যা ৬: দশ আজ্ঞা - মানুষকে অপরাধের কবল থেকে রক্ষা করার প্রতিরক্ষা কবজ সম দেয়াল৷ প্রথম খন্ড
সুসমাচারের আলোকে হিজরত পুস্তকের ২০ অধ্যায়ে বর্ণীত দশ শরীয়তের ব্যাখ্যা

০৪ - দ্বিতীয় আজ্ঞা: নিজেদের জন্য মুর্তি গড়োনা



হিজরত ২০:৪-৬
'পূজার উদ্দেশ্যে তোমরা কোন মূর্তি তৈরি করবে না, তা আকাশের কোনো কিছুর মত হোক বা মাটির উপরকার কোনো কিছুর মত হোক কিংবা পানির মধ্যেকার কোনো কিছুর মত হোক৷ তোমরা তাদের পূজাও করবে না, তাদের সেবাও করবে না, কারণ কেবলমাত্র আমি আল্লাহই তোমাদের মাবুদ৷ আমার পাওনা এবাদত আমি চাই৷ যারা আমাকে ঘৃণা করে তাদের গুনাহের শাস্তি আমি তাদের তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত দিয়ে থাকি৷ কিন্তু যারা আমাকে মহব্বত করে এবং আমার সব হুকুম পালন করে, হাজার হাজার পুরুষ পর্যন্ত তাদের প্রতি আমার বুক ভরা দয়া থাকবে৷'

দ্বিতীয় আজ্ঞা প্রথম আজ্ঞার পরিপুরক এবং বিশ্লেষক৷ তাই মতবাদগত এ আজ্ঞাটিকে প্রথম আজ্ঞার অংশ হিসেবে ধরা চলে৷ আবার অনেক ভাষ্যকার এটিকে বড়ই কঠিন আজ্ঞা বলে মনে করে কেননা এটি বড় ধরনের গড়মিলের সৃষ্টি করেছে৷


০৪.১ - মসিহি মতবাদের বিরুদ্ধে

মুসলমান ও ইহুদি সমপ্রদায় সর্বশক্তিমান খোদার হুকুমের খেলাপকারী হিসেবে অধিকাংশ মসিহিদের গণ্য করে থাকে৷ তাদের আপত্তির কারণ হলো, 'তোমরাই খোদার প্রধান আজ্ঞা লঙ্ঘনকারী৷ তোমরা নিজেদের অসম্পূর্ণ ধারণা মোতাবেক সর্বশক্তিমান খোদার ছবি একে মানুষের মধ্যে বিতরণ করে থাকো৷' মসিহিদের উপভাগের মধ্যেও এ আজ্ঞার সঠিক প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনেক বিতর্কের কারণ হয়ে আছে৷ মসিহিদের কোনো কোনো জামাতের সদস্য অন্য জামাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এবং তাদের পবিত্র বিষয়বস্তু জ্বালিয়ে দেয়৷ আমরা স্বীকার করতে বাধ্য, খোদা ও তাঁর মহিমা ছবি একে প্রকাশ করা আদৌ সম্ভব নয়৷ তাকে নিয়ে অংকিত যে কোনো ছবি খোদা ও তাঁর রুহানি মহিমার অপমানজনক ও নিন্দার কারণ৷ সাধুসন্তদের ছবিও কখনো কখনো নিরর্থক৷ খোদা অতিশয় বিশাল, পবিত্র থেকে পবিত্রতম আমাদের অনুমান আন্দাজের চেয়ে অতিশয় প্রকান্ড যা আমাদের চিন্তন প্রক্রিয়ায় আদৌ ধরার কথা নয়৷ মানুষ ছবিতে তাঁর বিষয়ে যা অাঁকতে পারে তাঁর থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত বাস্তবতা হলেন তিনি৷ মাইকেল এঞ্জোলোর সর্বোত্তম ছবিও জনমনে খোদার বিষয় ধারণা উত্‍পাদনে যথেষ্ট যোগ্য নয়৷

কিতাবুল মোকাদ্দাসে দুই উপায়ে জনসমক্ষে খোদার প্রকাশ দেখিয়েছে৷ প্রথমতঃ তিনি যে কালাম ঘোষণা দিয়েছেন তার শ্রোতামন্ডলির কাছে, আর দ্বিতীয় উপায় হলো স্বপ্নযোগে৷ নবীদের যুগে তিনি তাঁর শক্তিশালী কালামের দ্বারা প্রায়শই নিজেকে প্রকাশ করেছেন, আর অল্পই প্রকাশ করতেন স্বপ্নের দ্বারা৷ কিন্তু তার পুত্র নিজের সুরতের প্রকৃত অবস্থা সাহাবিদের কাছে প্রকাশ করলেন, তখন তারা মৃতবত্‍ ভূমিতে পড়ে গেলেন, কারণ রুহানি পবিত্র আলোর ঝলকে তাদের নাপাকি প্রকাশ হয়ে পড়লো৷ যে কেউ স্বপ্ন দেখে, পরিপূর্ণ স্বপ্ন বর্ণনা দিতে সে ব্যর্থ৷ কেবল ধারণাগত বিষয় সে প্রকাশ করে মাত্র৷


০৪.২ - প্রতিমা পূজা ও কাল্পনিক মুর্তির প্রতিরোধ করা

আমরা যদি স্বযত্নে দ্বিতীয় আজ্ঞাটি নিয়ে ক্ষতিয়ে দেখি তবে এটা পরিষ্কার দেখা যায় খোদার ছবি অাঁকাতে আপত্তির কথা নেই, বরং আমাদের হুশিয়ার করে দিয়েছে সর্বপ্রকার পুতুল পুজা নিষিদ্ধ৷ যে কেউ অন্য দেবতার পূজা ও সম্মান করে, খোদাই করা মুর্তি ও দেবতার ছবিতে প্রনতি জানায় তারাই খোদার গজবের অধিনস্ত রয়েছে৷

নবীদের জামানায় প্রাশ্চ্যে খোদাই করা অতিকায় মুর্তি পাহাড়ের চূড়ায় তৈরি করা হতো৷ তা করা হতো পাথরের উপর অর্থাত্‍ পাথর খোদই করে যা জনগণের পূজার জন্য ছিল উম্মুক্ত৷ তাছাড়া কাঠের মুর্তি, পাথরের, সিলভারের অথবা স্বর্ণের মুর্তিও তৈরি করা এবং গৃহে রেখে পূজা দেয়া হতো৷ কিন্তু যে কেউ একমাত্র সত্য খোদার উপর আস্থাবান নয়, তিনি তাদের জন্য দুয়ার খুলে দেয় চলে যাবার বা তাকে ত্যাগ করার জন্য আর ফলে মন্দ আত্মাগুলো দ্রুত ছুটে আসে তথা আশ্রয় নেবার জন্য৷ মসিহের সময় গ্রীকগণ তাদের দেবতার কাছে ভীর করতো তাদের কামনা-বাসনা (মাংসিক) পূর্ণ করার জন্য৷ তার পূর্বেও মিশরীয়, আসেরিয়ান এবং বেবিলনিয়ান একই প্রকার কাজে নিজেদের হাত পাকিয়েছিল৷ সে কারণে মুসা নবী এবং অন্যান্য নবীগণ পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে প্রচন্ড যুদ্ধ করেছিলেন৷ আজ আমরা ঐসকল প্রতিমা যা নবীগণ অভিশপ্ত বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা দেখতে পাই কায়রো, বাগদাদ ও বইরুতের জাদুঘরে৷ পর্যটনের আকর্ষণে আজ তা পরিণত হয়েছে৷ এদের জুতা দুর্গ থেকে নামিয়ে রাখা যেমন প্রাচীন গ্রীক ও মিশরীয়রা করতো৷ মানুষের প্রবণতা অদৃশ্য বস্তুকে দৃষ্টিগোচর করা, কখনোবা ঐশি কালামের প্রচারে সন্তুষ্ট হতে না পারা৷ মানুষ যতটুকু শুনতে পায় তার চেয়ে অধিক দেখতে চায়৷ যা কিছু অদৃশ্য ও ধরাছোঁয়ার বাইরে তা যেন তাদের কাছে অসঙ্গত কোনো কিছু৷ এ কারণে টেলিভিশন আগ্রহের কারণ হয়ে দাঁড়ায় যার ফলে দ্বিতীয় আজ্ঞা মেনে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে৷


০৪.৩ - প্রতিমুর্তি নিষিদ্ধ করেছে ইহুদি ও মুসলমান সমপ্রদায়

আজ থেকে ১৩৫০ বত্‍সর পূর্বে ইসলামে ছবি বা মুর্তি নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে টেলিভিশন, ভিডিও ছবি ও ম্যাগাজিনে ভরে গেছে মুসলিম বিশ্ব৷ এর মধ্যে পাচ্ছে তারা বেজায় আনন্দ৷ ছবির উপর নিষেধাজ্ঞা বিকল্প হিসেবে আরবি অলঙ্করণ বিস্তার লাভ করেছে যা দেখা যায় ইসলামিক কৃষ্টিতে সর্বত্র, ব্যপকতা যেমন সৌদি আরব, চিনের মসজিদের মধ্যে, মরোক্কোর রাজপ্রাসাদে এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতে৷ দ্বিতীয় আজ্ঞার ফল স্বরূপ মুসলমানগণ ফুলের ছবির দিকে ঝুকে পড়ছে, ঝুকে পড়ছে বাগবাগিচার দিকে আর তা বীজগণিতের জারে অর্থাত্‍ অতি দ্রুত গতিতে কাগজের উপর কাঠের উপর, ধাতবপ্লেটের উপর এবং পাথরের উপর৷ বিশেষ করে প্রাশ্চ্যের কার্পেট জাঁকালো মনমুগ্ধকর নকশা দিয়ে অধিক আকর্ষণীয় করে রাখা হয়৷ বেহেশতের নমুনা দিয়ে সাজানো কার্পেটগুলো বিশ্বের অধিকাংশ দেশে সমাদৃত হয়ে আসছে৷

রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে মানুষের ছবিঅাঁকা সিগনাল রাখা হয় সৌদি আরবে তবে উক্ত মানুষের ছবিতে মস্তক থাকে না৷ আজ পর্যন্ত মানুষের মাথা যুক্ত ছবি অাঁকা নিষিদ্ধ৷ কিন্তু ইরান, তুরস্ক এবং ভারতবর্ষের মুসলমানগণ নিজেদের অতোটা বাধ্য মনে করে না উক্ত বিধিকলাপের ব্যাপারে৷ তারা মুহাম্মদের এবং জিব্রাইলের ছবিও অাঁকেন৷ যদিও এ সমস্ত নকশা অাঁকা আইনত নিষিদ্ধ৷ আর এ নিষেধ আরবের মুসলমানদের জন্য কঠিনভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে৷ কোনো এক আরব দেশে সিনেমা নির্মাণ করেছেন মুহাম্মদকে নিয়ে, তারা মুহাম্মদের মুখমন্ডল প্রকাশ করার হুকুম পায় নি৷ পুরো ছবিটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যেমন মুহাম্মদ নিজে সকল ঘটনা পুঞ্জি দেখেছেন এবং নিজের কন্ঠে কথা বলেছেন৷ ছবিতে তিনি নিজে প্রকাশ হন নি৷ তাই মসিহি নির্মাতাগণ কোনো ছবি নির্মাণ করেন তখন চতর্ুদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে ছবির কাজ চালাতে হবে, নবীদের ছবি, খোদার ছবি, ফেরেশতাদের ছবি এমনকি মসিহের নিজের ছবিও কোথাও থাকতে পারবে না৷

ইহুদি সমপ্রদায় অবশ্য পরিপূর্ণভাবে দ্বিতীয় আজ্ঞাটি কাজে লাগিয়েছেন নিষেধাজ্ঞা মান্য করে অর্থাত্‍ খোদার ছবি অংকন না করে৷ ৭০ খৃষ্ট্রাব্দে রোমিয় সম্রাট তাইতাস যখন জেরুজালেম দখল করে নেয়, তখন তিনি জেরুজালেম মন্দিরে প্রবেশ করেন, মহাপবিত্র স্থানেও প্রবেশ করেন, প্রত্যাশা ছিল স্বর্ণের মুর্তি ও দামি দামি পাত্র খুঁজে পাবে৷ আসলে তার আশার গুড়ে বালু পড়েছিল, কিছুই খুঁজে পায় নি লোভ চরিতার্থ করা জন্য৷ মহাপবিত্র স্থানটি ছিল একদম শুন্য কেননা খোদা হলেন রুহানি অস্তিত্বমান, কোনো বস্তুগত জিনিষ নয়৷ তাকে কোনো মুর্তির মধ্যে বা ছবির মধ্যে বন্ধি করে রাখা সম্ভব নয়৷


০৪.৪ - মসিহের ছবি কি কালাম বিরোধি?

মসিহিগণ দ্বিতীয় আজ্ঞার ব্যাখ্যা ইহুদি ও মুসলমানদের ব্যাখ্যার মতো করেন না, মসিহ মানবরূপে জন্মগ্রহন করলেন৷ তদানীন্তন সকলে তাকে প্রত্যক্ষ করতে পেরেছে৷ তিনি বলেছেন 'যে কেহ আমাকে দেখেছে সে পিতাকে দেখেছে' (ইউহোন্না ১৪:৯)৷ সৃষ্টির লক্ষ্য মসিহের মাধ্যমে পূর্ণতা পেয়েছে৷ কিতাবুল মোকাদ্দাস ঘোষণা দিচ্ছে, 'খোদা নিজের মানুষ সৃষ্টি করেছেন, নিজের সুরতে তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, নারী ও পুরুষ হিসেবে তাদের সৃষ্টি করেছেন' (পয়দায়েশ ১:২৭)৷ আদম ও বিবি হাওয়া খোদার প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ছিলেন মনোনীত৷ অদ্যবধি মানুষের মধ্য দিয়ে খোদার সুরত ও গৌরব প্রকাশ পাবে যা হলো স্বাভাবিক চাওয়া৷

খোদার সৃষ্টি উপভোগ করার অধিকার তিনি আমাদের দিয়েছেন, তাই আমরা ছবি অাঁকতে পারি যেমন ফুলের, প্রাণী-জগতের, লোকজনের প্রভৃতি৷ তবে তাদের কাছে আমরা প্রণতি জানাতে পারি না৷ সকল প্রাণী প্রাণীর স্তরেই থেকে যাবে৷ তারা কখনোই স্রষ্টা মাবুদের স্তরে পেঁৗছাতে পারবে না, আর কখনোই পুজিত সেবিত হবে না৷ মানুষের পাপে পতনের সাথে সাথে তাদের মধ্যে দেয়া খোদার সুরত বিনষ্ট হয়ে গেছে৷ ইবলিস সুকৌশলে অতি সুক্ষভাবে জগতে প্রবেশ করলো৷ কিন্তু মসিহ, দ্বিতীয় আদম, মানুষের মধ্যে খোদার পূতপবিত্র সুরত ফিরিয়ে দিলেন৷ আশ্চর্যের কিছুই নেই, হযরত পৌল মসিহকে লক্ষ্য করে বলেছেন, 'বাতেনি খোদার হুবহু প্রকাশ' (কলসীয় ১:১৫)৷

মসিহ জন্ম নিলেন, মৃতু্য বরণ করলেন, এবং পুনরুত্থিত হলেন সকলের জন্য৷ তাই তার নিজস্ব চিন্তানুসারে প্রত্যেকে তাঁর কাছে আসার অধিকার রাখে, যেমন আফ্রিকার লোকজন, প্রশ্চ্যের লোকজন, ইউরোপের লোকজন বা মধ্যপ্রশ্চ্যের অর্থাত্‍ বিশ্বের সকলে তাঁর কাছে আসার অধিকার রাখে৷ তিনি মানবরূপে খোদার সুরত আর তিনি সকল কৃষ্টিতে সহজগম্য৷ তার আনন্দ, শান্তি ও ধৈর্য কোনো তাত্তি্বক বিষয় নয়, সবই নিরেট বাস্তবতা৷ মসিহের মধ্যদিয়ে খোদা আমাদের কাছে উপস্থিত হয়েছেন৷ তিনি আমাদের কাছে কোনো পারদর্শী যোদ্ধারূপে প্রকাশিত হন নি, অথবা ভীবত্‍স কিম্ভুত কিমাকার চেহারায়ও নয়, কিন্তু বিনম্র ঐশি মেষরূপে প্রকাশিত হয়েছেন যাতে করে তিনি আমাদের হয়ে খোদার ক্রোধ বহন করে মৃতু্যবরণ করতে পারেন, ফলে তার সাথে আমরা অনন্ত জীবন বেঁচে থাকতে পারি৷ কোরবানির প্রকৃত অর্থ তিনি আমাদের শিখিয়েছেন৷ ঐশি মহব্বতের এক মূর্তমান প্রতীক হয়ে উঠেছে তার মর্মবিদারক সলিব, কবর থেকে তাঁর পুনরুত্থানের ফলে মানুষের বিচারের কাজ পূর্ণতা পেল৷ এটা এক রুহানি বিষয় তথাপি তা অনুভবনীয় অর্থাত্‍ বাস্তব রক্তমাংসের দেহে হয়েছে সম্পন্ন (লুক ২৪:৩৯)৷


০৪.৫ - মসিহের সাহাবিদের মধ্যে তার সুরত ফুটে ওঠেছে

মসিহ তাঁর সাহাবিদের হৃদয় বিনম্র আত্মা দিয়ে পূর্ণ করে দিয়েছেন, ফলে মহব্বত, পবিত্রতা এবং খোদাই আনন্দ তাদের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে৷ ঘৃণা ও মৃতে ভরা বিশ্বে মসিহ আমাদের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে৷ ঘৃণা ও মৃতের বিশ্বে মসিহ আমাদের নিয়োগ দিয়েছেন খোদার সুরত প্রকাশ করার জন্য৷ তিনি আমাদের সুযোগ দিয়েছেন মসিহের 'জীবন্ত পুত্রে' রূপন্তরিত হতে; আমাদের চরিত্র চালচলনের মধ্যদিয়ে কথা বলতে পরিবারের সাথে, পাড়া প্রতিবেশির সাথে এবং বন্ধু-বান্ধবদের পরিবারের সাথে৷ মসিহ তার নিজের ছবি আমাদের মধ্যে অর্থাত্‍ হৃদয়ে এঁকে দিয়েছেন যার ফলে অন্যের জীবনে তাঁর গুনাবলির প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব হয়৷ যে কেউ মসিহের জীবন্ত অনুসারীদের সাথে সাক্ষাত লাভ করে, হয় আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ অথবা আমেরিকা যেস্থানেই হোক না কেন, তাদের মধ্যে প্রত্যক্ষ করতে পারে তাদের মুখমন্ডলে মসিহের শান্তি ও ঐজ্জ্বল্য জ্বলজ্বল করে জ্বলছে৷ ক্রশাহত ও পুনরুত্থিত মসিহের আত্মা যখন কারো হৃদয়ে বাস করেন, উক্ত ব্যক্তি হোক ধনি বা দরিদ্র, পাঠক অথবা সাধারণ ব্যক্তি, বৃদ্ধ অথবা যুবা যে বয়সেরই বা অবস্থানেরই হোক না কেন, তিনি বেহেশতি প্রতবিম্ব প্রকাশ করে থাকেন৷ বিশ্বটাকে ধনি বা দরিদ্র হিসেবে ভাগ করা নয়, ধনতান্ত্রিক বা সমাজতান্ত্রিক সমাজে ভাগ না করে দেখা প্রয়োজন কে পাকরূহের দ্বারা জীবনপ্রাপ্ত পূনর্জাত আর কে অদ্যাবধি রয়েছে পাপের সাগরে মৃত৷ কোনো মানুষের হৃদয়ে মসিহ যখন নিজের জন্য বসবাস যোগ্য স্থান খুঁজে পায়, তখনই উক্ত ব্যক্তির জীবন দিয়ে খোদাই জীবন প্রতিভাত হতে থাকে আর সকলের কাছে তা হয়ে পড়ে সুপরিজ্ঞাত৷

নিজেদের নিয়ে কাওকে পাকরূহ গর্বিত করে তোলে না, কিন্তু তিনি আমাদের সাহায্য করে খোদার পুত্রের মহিমা প্রকাশ করতে৷ আমরা যেন আমাদের প্রতি গুরুত্ব না দেই যেন নিজেরাই হয়ে পড়েছি যেন জগতের মধ্যমনি৷ খোদার মেষ, যিনি আমাদের জন্য কোরবানি হয়েছেন সমস্ত গৌরব তো তারই প্রাপ্য৷ মসিহের মাতা মরিয়ম এবং অন্যান্য সাহাবিগণ আপত্তি তুলবেন তাদের বিরুদ্ধে যারা তাদের প্রতীমা ও ছবির কাছে প্রণতি দেয়৷ যেখানেই ঐসকল মুর্তি পাওয়া যায় সেখানেই তা ধ্বংস করা হবে, তা হোক বেদির উপর, হোক বসতবাড়িতে অথবা প্রার্থনা গৃহে৷ মসিহ ব্যতিত আর কেউ খোদার মহিমা প্রকাশ করতে পারে নি৷ খোদা ছাড়া আর কেউ ভালো নয়৷ কেবল তার রহমতে আমরা ন্যায়বান হতে পেরেছি৷ মরিয়মের কাছে প্রার্থনা করা অথবা সাধুদের কাছে প্রার্থনা করা আর তাদের মধ্যস্থতা কামনা করা কিতাবুল মোকাদ্দসের শিক্ষার পরিপন্থি৷ দ্বিতীয় আজ্ঞা ভঙ্গের এটা সুস্পষ্ট প্রমাণ করে যিনি আমাদের বেহেশতি পিতা, আমাদের বিশ্বাস ও আনুগত্য ভাগ করে দিচ্ছি তাকে ও তার ক্ষনিকের সৃষ্টির মধ্যে৷ এমন কোনো মুর্তি, ছবি, স্বারকলিপি অথবা অন্য কিছু যা খোদার কুদরত প্রকাশ করতে পারে অথবা পারে রোগ বালাই দূর করতে৷ খোদা আমাদের রক্ষা করেন কেবলমাত্র তাঁর পুত্র ইমাম মসিহের মাধ্যমে৷ সকল প্রতীমা এমন কি গীর্জায় রাখা মুর্তিগুলো প্রভুর নজরে ঘৃণার বস্তু৷

নতুন চুক্তির ফলে, খোদা যিনি আমাদের বেহেশতি পিতা, তাঁর সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে যা আমরা উপলব্ধি করি৷ এ অধিকারটুকু প্রতিষ্ঠা হতে পেরেছে মসিহের প্রায়শ্চিত্ত দানকারী আত্মকোরবানি ও খোদার ডানপাশ্বর্ে সমাসিন থেকে আমাদের জন্য প্রতিনিয়ত অনুরোধ করার ফলে৷ পুত্রই সম্ভব করে দিয়েছেন খোদার সাথে আমাদের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য৷ এ সুযোগ যিনি কাজে না লাগান তিনি খোদার পিতৃত্বে বিশ্বাস করে না৷ পিতা, পুত্র ও পাকরূহের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি রহমত, ধার্মিকতা, মাগফেরাত এবং জীবন (ঐশি জীবন)৷ তই আজ আমাদের সর্বান্তকরণে ত্রিত্বপাকের প্রতি ভক্তি ও আনুগত্য প্রকাশ করা দরকার৷


০৪.৬ - খোদার আবেগপূর্ণ আগ্রহ

যারা খোদাকে মহব্বত করে আর যারা তাঁর কাছ থেকে দূরে সরে গেছে তাদের মধ্যে দূরত্ব পরিলক্ষিত হয় ক্রিয়াকর্মের দ্বারা যেমন শাস্তি দেবার জন্য ভিতি ও আশির্বাদের প্রতিজ্ঞা রয়েছে দ্বিতীয় আজ্ঞার মধ্যে৷ পুনরায় বলি, খোদা নিজেকে আখ্যায়িত করেছেন 'আমি' বলে, যার অর্থ দাঁড়ায়, তিনি জীবন্ত সত্ত্বা, কথা বলার ইচ্ছা ও ক্ষমতা যার রয়েছে৷ গুরুত্বের সাথে তিনি বলেছেন, তিনি বিশ্বস্ত প্রভু, যার কোনো পরিবর্তন নেই, যিনি সবকিছু করেন নিয়ন্ত্রন৷ তিনি অনন্তকালীন চুক্তিতে আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন এবং সম্পূর্ণ বিশ্বাস নিবেদন সহকারে একই প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করেন আমাদের কাছ থেকে৷

খোদা আমাদের প্রেম কামনা করেন৷ আমাদের আনুগত্য ভাগ করে অন্য কাওকে দিয়ে বাকী অংশ তাকে দিলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন৷ তাঁর প্রতি আনুগত্য হতে হবে সম্পূর্ণ অভিক্ত৷ কোনো প্রতীমা ধর্মপ্রনেতা, কোনো রাজা স্বর্ণ রৌপ্য প্রভৃতি কোনো কিছুতেই আমাদের অনুগত্য রাখা চলবে না৷


০৪.৭ - যারা খোদাকে ঘৃণা করে তারা পতিত হবে

দুঃখ তাদের জন্য যারা খোদার মহব্বত তুচ্ছ করে অথবা তাতে গুরুত্ব না দেয়৷ তারা আঙ্গুর গাছের ছাটাই করা শাখা সাদৃশ্য৷ তারা ক্রমশ শুকিয়ে যাবে এবং নিশ্চিহ্ন হবে৷ আর তাদের শেষ দশা হলো অনন্ত অনল৷ খোদার মধ্যে জীবন যাপন করতে যদি আমরা অস্বীকার করি, তবে আমাদের জীবনের উত্‍স আর কি থাকলো, আমরা রুহানিভাবে বেইমানি করি আর আমরা সুযোগ করে দিচ্ছি মন্দআত্মার কাজে, প্রতীমার স্বার্থে, অজানা আত্মার কাছে, অথবা নিজেদের ধার্মিক বলে প্রকাশ করে থাকি৷ খোদা তার গৌরব তার পুত্র এবং পাকরূহ ব্যতীত আর কারো কাছে হস্তান্তর করেন না৷ তিনি ছাড়া আর কোনো শ্রষ্টা নেই৷ কেবলমাত্র তিনি একাই অনন্তকালের জন্য বিচারক, আর কেউ নেই৷

কেউ যদি খোদার দিকে না ফেরে, কিন্তু অন্য দেবতাদের পিছনে ছোটে অথবা নিজের শক্তি, মেধা ও সামর্থের উপর নির্ভর করে সে ক্রমান্বয়ে গর্বিত হতে থাকবে আর খোদার তরফ থেকে আগত মহব্বতের প্রতি থাকবে উদাসীন৷ সুবিধাটুকু আদায় করবে কিন্তু কাওকে সেবাদান করবে না৷ কেউ যদি খোদাকে মহব্বত করতে ব্যর্থ হয় তবে তার দ্বারা প্রতিবেশিকেও মহব্বতের প্রশ্ন জাগে না৷ জগত সম্বন্ধে তার ধারণা নেই, নেই এর আত্মিক বিষয়ের উপর ধারনা কারণ সাধারণ জ্ঞানের অভাব আছে তার৷ ফলস্বরূপ তার বিবেক অসাড় হয়ে পড়ে এবং তার নৈতিকজ্ঞানের অবনতি ঘটে৷ তার অবস্থা পশুর অধম হয়ে পড়ে৷

যারা খোদার কাছ থেকে সরে যেতে চায় তাদের তিনি পতনের হাতে ছেড়ে দেন৷ তাদের সাবধান করেন, মাঝে মধ্যে তাদের প্রতি প্রেম প্রকাশ করে থাকেন৷ তিনি তাদের আপন আপন অভিলাষের হাতে ছেড়ে দেন, ফলে নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করে ছাড়ে৷ রাজা সৌল এবং ইস্কারতীয় যিহুদা প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত এ ধরনের বিনাশ অবক্ষয়ের বিচারের৷ এ নিয়ম প্রযোজ্য হয়ে থাকে ব্যক্তি ও জাতির ক্ষেত্রে৷ কখনো কখনো মিয়া বিবি খারাপ কাজ করতে উত্‍সাহিত হয়ে থাকে সহযোগীদের প্রেরণায়, যার প্রতিফল ও কুফল গিয়ে বর্তায় সন্তান সন্তুতিদের উপর৷ এভাবেই খোদাদ্রোহীতা বংশ বংশানুক্রমে গড়াতে থাকে৷ যে পরিবারে বিষাক্ত আচরণ চলতে থাকে অথবা সর্বদা হিংসার দ্বারা পরিচারিত হয় সে পরিবারে পরিবেশ ও আচরণ ত্রুরতার দ্বারা চলতে থাকে৷ যে পরিবার অন্তসারশূণ্য মানবতাবাদে বিশ্বাসী অথবা সমাজতান্ত্রিক মতবাদে নাস্তিক মতবাদ চর্চা করে৷ উক্ত পরিবারের অবস্তা একই ধরণের হয়ে থাকে৷ পরিবারের নৈতিকতা সন্তানদের চোখে দৃষ্ট হয়ে থাকে৷ কোনো কোনো পরিবার ভবিষ্যত গণনা কাজে থাকে বিশ্বাসী, যাদুবিদ্যা ও প্রেতাসিদ্ধি ও ডাকিনীবিদ্যার সাথে থাকে যুক্ত ও বিশ্বাসী, উদ্দেশ্য হলো কোনো রোগের মুক্তি অথবা গোপন কোনো কিছু আবিষ্কার করা৷ এসকল কাজকর্ম অবশ্যই পরিত্যাজ্য এবং মসিহ বলেছেন অনুতাপ করে মন্দ আত্মার পূজা ছেড়ে দিতে, কেউ যদি অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসে তবে মসিহ তাকে গ্রহণ করে নেন৷ তিনি আনন্দের সাথে অভিনন্দন জানা, এবং শয়তানের অভিশাপ থেকে রক্ষা করেন৷ তিনি বলেছেন, 'পুত্র যদি 'তাঁরা ঈসা মসিহকে পরীক্ষা করবার জন্যই এই কথা বললেন, যাতে তাঁকে দোষ দেবার একটা কারণ তাঁরা খুজে পান৷ তখন ঈসা মসিহ নীচু হয়ে আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন৷ (ইউহোন্না ৮:৩৬)' মসিহের ক্ষমতা ও প্রাধিকার আমাদের ধারণার উধের্্ব৷ অভিশপ্ত শয়তানের বাধন থেকে তিনি একাই মুক্ত করার ক্ষমতা রাখেন৷

খোদা শিক্ষা দিচ্ছেন, পরিবারে হৃদয়ের কাঠিন্যতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ যা তৃতীয় চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত গড়াতে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত আন্তরিকভাবে পরিবারের সকলে তওবা না করে৷ কখনো কখনো সন্তানেরা পরস্পরাগত খোদাদ্রোহী হয়ে ওঠে৷ তথাপি আমাদের হৃদয়ে ঐ সকল লোকদের বিরুদ্ধে ঘৃণা রাখা চলবে না৷ আমরা তাদের পটভূমি খুঁজে দেখবো, তাদের মহব্বত করব৷ ইহুদি ও মুসলমানদের পিতৃ পুরুষদের শিক্ষায় পরিচালনা করা হচ্ছে, যাদের যেখানে পূর্ব থেকেই শেখানো হয়েছে খোদার পুত্রকে সোজাসুজি অস্বীকার করা; তারা সকলে পাপের হাতে বন্দি ও গুচ্ছবদ্ধ, ফলে স্বাভাবিক কারণে তারা জগতের মুক্তিদাতাকে প্রত্যাখ্যান করে৷ মসিহি বিরোধি এ শক্তির হাত থেকে যে কেউ মুক্ত হতে চান তাদেরই পূর্বের সকল সংযোগ ও বাধন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে এবং মসিহের স্বার্থে সর্বপ্রকার কৃষ্টি কালচার থেকে দূরে থাকতে হবে৷ আমরা যখন এ সকল সম্পর্ক থেকে মুক্ত হই এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক শৃঙ্খল থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারি ঠিক তখনই জনাতে পারি খোদা আমাদের সত্যিকারের পিতা৷ আমাদের ভবিষ্যতের সকল দায়িত্ব তিনি নিজ কাঁধে তুলে নেন৷ তিনি সর্বদা অভয়বাণী শুনিয়েছেন, 'আমিই তোমাদের প্রভু, তোমাদের খোদা, অনন্তকাল মহব্বত করার পিতা, আমি তোমাদের চিনি, নাম ধরে আমি তোমাদের ডেকেছি, তোমরা আমার, আমার মধ্যে স্থির থাকো, দুষ্ট ও অপবিত্র সংযোগ সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করো৷ আমার বিশ্বস্ততার উপর নির্ভর করো, আমার ক্ষমতা ও প্রাধিকারের ওপর আস্থা রাখ, তবে তোমরা চিরকালের জন্য মুক্ত থাকবে৷'


০৪.৮ - যারা খোদাকে মহব্বত করে তাদের জন্য রয়েছে খোদার মহব্বতের প্রাচুর্য৷

কেউ যদি খোদাকে মহব্বত করে এবং তাকে সম্মান দেয় তবে সে তাঁর বাক্য নিয়ে ধ্যান করবে এবং তাঁর শক্তির ছায়াতলে জীবন-যাপন করবে৷ যে কেউ তার অনুকম্পার গভীরতা অনুধাবন করতে পারে, আমাদের তরফ থেকে অনবরত ধন্যবাদ জানাচ্ছি তার নাজাতপ্রাপ্তি ও ধৈর্যের জন্য৷ আমরা অনর্গল আমাদের মহব্বত তাকে জ্ঞাপন করছি, এবং হৃষ্ট চিত্তে ধন্যবাদ জানাচ্ছি৷ কৃতজ্ঞ ইমানদার গুপ্তধন খুঁজে পায়, শক্তি সামর্থ লাভ করে৷ আশির্বাদ ও নির্দেশনা লাভ করে খোদার কালামে, তার নিত্যদিনের জীবনের জন্য৷ যখন কোনো বিবাহিতা কণে তার বরের কাছ থেকে প্রেমপত্র পেয়ে তা খুললো না, পড়লো না, কোথাও ফেলে রাখলো, হারিয়ে গেলো এবং উক্ত পত্রের বিষয় বেমালুম ভুলে গেলো, উক্ত কণের বিষয়ে আপনার কী ধারণা জন্মাবে? আমরা পরিষ্কারভাবে বলবো, উক্ত কণে বরকে আদৌ ভালোবাসেনা৷ কিন্তু একজন বিশ্বস্ত কনে অস্থিরভাবে অপেক্ষাতে থাকে তার বরের পত্রের জন্য৷ যখনই সে পত্র পেয়ে যায় সাথে সাথে সে খুলে পাঠ করে পুনঃপুনঃ পত্রে ২/৪টি স্থান নিয়ে ভাবতে থাকে এবং বিশেষ বিশেষ স্থান তার মুখস্ত হয়ে যায়, কখনোই মুছে যায় না৷ আমরা যখন খোদাকে মহব্বত করি তখন আমরা তার কালাম অধ্যয়ন করি, যেমন আমাদের কাছে তা প্রেমপত্র যা লেখা হয়েছে ব্যক্তিগতভাবে খোদ বেহেশত থেকে৷ তাই সবসময় আমরা তা পাঠ করি এবং কতিপয় অংশ হাইলাইট অর্থাত্‍ বিশেষ গুরুত্বারোপ করে রাখি৷ আমাদের হৃদয় খোদার কালামে থাকে পরিপূর্ণ৷ ফলে আমরা শক্তিলাভ করে থাকি তাঁর আজ্ঞামাফিক জীবন যাপন করার জন্য৷

পিতামাতা পরিবারের জন্য যখন মুনাজাত করেন তখন পরিবারের সদস্য সকলে আশির্বাদে পুষ্ট হয়৷ উক্ত পরিবারের সন্তানগণ খোদাদ্রোহী হতে পারে না আর ভিন্নমতাবলম্বীও হয় না, পরিবর্তে তাদের প্রবৃদ্ধি শক্ত ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়৷ অবশ্য পিতামাতা গায়ের জোরে সন্তানদের মসিহি বিশ্বাসী হিসেবে গড়তে পারে না৷ দুষ্টতা থেকে তাদের ফেরাতে শাস্তিও দিতে হয়৷ স্নেহময়ী পিতামাতা ধীরে ধীরে তাদের সন্তানদের বিবেকের কাছে সত্য তুলে ধরে এবং ক্রমান্বয়ে তাদের শিক্ষা দিয়ে থাকে৷ শিশুরা পিতামাতার আচরনের বিষয় মনে রাখে, যতোটা তাদের বাক্য মনে রাখে না৷ কখনো কখনো মায়ের মুখের চেয়ে চোখ থাকে সন্তানদের কাছে শক্ত কথা বলে৷ আর তার মহব্বত কবরের পরেও পেঁৗছে যায়৷

খোদা প্রতিজ্ঞা করেছেন তাদের জন্য, যারা তাকে মহব্বত করে, তাদের সহস্র বত্‍সর বংশ বংসানুক্রমে আশির্বাদ দান করবেন৷ এ প্রতিজ্ঞা একটি বড় ধরণের স্বান্ত্বনা তাদের জন্য যারা এই মিথ্যাচারের প্রলোভনের রাজ্যে সন্তান সন্তুতিদের মানুষ করতে চান৷ অন্ধকারের মধ্যে সূর্যের আলো ভেদ করে, যেভাবে পেঁৗছে যায় ঠিক তেমনি খোদার মহব্বতের ক্ষমতা অবিশ্বাসের দেয়াল ভেদ করে হৃদয়ে পৌছে যায়৷ রুহানি উত্তরধিকার বহুগুনে বাড়তে থাকে যখন পিতামাতা প্রার্থনাশীল জীবন যাপন করেন৷

সহস্র বংশ হতে কতোটা সময়ের প্রয়োজন পড়ে তা কি আপনি হিসেব কষেছেন? ধরে নেই, ২৫ বত্‍সর করে এক একটি প্রজন্ম হতে প্রয়োজন তবে সহস্র প্রজন্মে মোট সময়টা দাঁড়ায় ২৫০০০ বত্‍সর ধরে চলতে থাকবে খোদার রহমতের প্রাচুর্য মাত্র একজন বিশ্বাসীর কারণে৷ আর যদি নাতি-নাতনি নিয়ে এক একটি পরিবার ধরা হয়ে থাকে খোদা আরও প্রতিজ্ঞা করেছেন তাঁর মনোনীত ভক্তবৃন্দদের কাছে, প্রত্যেক নিবেদিত ঈমানদার প্রেম, রহমত ও আশির্বাদের উত্‍সর হবে একশত লোকের জন্য৷ ঈসা মসিহের অনুসারী কখনোই দাবী করে না যে সে নিজেই রহমতের উত্‍স ধারা বরং অকপটে স্বীকার করেন তিনি প্রবাহ ধারার বাহক মাত্র৷ খোদা তাঁর অফুরান রহমত থেকে শর্তহীনভাবে প্রচুর পরিমানে তাদের উপর প্রবাহিত করে যারা তাকে মহব্বত করে ও আস্থা রাখে৷

আমরা যদি আমাদের জাগতিক ও রুহানি পিতামাতার আশির্বাদের প্রভাবের কথা বিবেচনা করি তবে বিশ্বের নানা ধরণের কৃষ্টির পার্থক্যটা বুঝতে পারব৷ যে কোনো গ্রাম বা শহর অথবা জনগোষ্টি যেখানে শত বত্‍সর পূর্বে প্রভুর বাক্য প্রচারিত ও গ্রীহিত হয়েছে ঐসব এলাকার চেহারা দেখলেই পার্থক্যটা সহজেই প্রতীয়মান হবে৷ মসিহের দ্বারা যে জাতি নাজাত পেয়েছে, মুক্ত হয়েছে পাপের গোলামি হতে, তারাই ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও পরষ্পরকে সেবা করে৷ খোদা যখন পাকরূহের দ্বারা কাউকে প্রভাবিত করেন তখন তাদের পরিবার, স্কুল, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং রাজনৈতিক দিকগুলো এতটাই প্রভাবিত হয় যা আমরা ভাবতেও পরি না৷

বিপরীতক্রমে যে সকল দেশ রক্তে রঞ্জিত রক্তপিপাশু দেবতাদের পূজায় থাকে নিবেদিত৷ যেমন ভারতবর্ষ অথবা পূর্বপুরুষদের পূজারী যেমন চীন এবং আফ্রিকা, যেখানে প্রতীমা পূজা ও যাদু বিদ্যার উপর নির্ভরশীল, এরাই তাদের হেফাজত করে থাকে৷ এই লোকজন ও সমাজ সদা ভীত থাকে এবং ভয় তাদের প্রভাব বলয়ে ধরে রেখেছে; ভয়, দাসত্ব স্বভাব ও দুশ্চিন্তা৷ পুরুষ শাসিত সমাজে মহিলাদের ইজ্জ্বত ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া হয়৷ গোষ্টিগত যুদ্ধ অগ্রগতি বাধাগ্রস্থ করে৷ গরীব আরো গরীব হয়৷ আপনি যদি হিন্দু, মুসলিম ও মসিহি গ্রামে প্রবেশ করেন তবে দেখামাত্র ওখানকার রুহানি পরিবেশ সম্বন্ধে এক নজরে দেখতে পাবেন৷ জীব জানোয়ারগুলোও বুঝতে পারে তাদের নির্দয়ভাবে পেটানো হচ্ছে না স্বাভাবিক আচরণ করা হচ্ছে৷


০৪.৯ - সারমর্ম: মারাত্মক বিচ্ছেদ

বিশ্বাসী পিতামাতা যে আশির্বাদ লাভ করার পিছনে দেখা যায় দাদা-দাদির অবিচল বিশ্বাস খোদার উপর ছিল৷ এ ধরণের দাদা-দাদি পরিবারের সবার জন্য বৃদ্ধ বয়সেও অর্থাত্‍ আমৃতু্য মুনাজাত করে চলেন৷ সত্যিকারার্থে, একটি সীমারেখা দিয়ে তাদের আলাদা করে রাখা হয়, যারা খোদাপ্রেমে থাকে নিবেদিত আর যারা খোদাকে ঘৃণা ও তুচ্ছ করে, আর এ বিভাগ দৃষ্ট হচ্ছে বিশ্বব্যাপী৷ আন্তরিকতার সাথে আপনি যদি খোদাকে মহব্বত করে থাকেন, তবে একটি শিশু যেমন পিতার উপর নির্ভর করে আর মহব্বতের ফসল যেমন প্রবৃদ্ধি লাভ করে আপনার জীবনও তদ্রুপ বৃদ্ধি লাভ করবে৷ আর যে কেউ খোদার আহবানের বিরোধিতা করে, অবশ্যই সে খোদাই চরিত্র থেকে সরে গিয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে৷ শেষ যুগে বহুজনের প্রেম যে শীতল হয়ে পড়বে তাতে আশ্চর্যের কোনো কারণ নেই৷ কেউ যদি খোদার দিকে না ফেরে তবে সে দুষ্টের কারখানায় হবে পরিণত৷ খোদাদ্রোহীতার ফলে তার মধ্য থেকে ধ্বংসাত্মক চিন্তা-চেতনা প্রকাশ পাবে৷ যুবক বয়সে কাল মার্কস ছিলেন খোদাভক্ত কিন্তু যখন সে গণনাকারীদের খপ্পরে পড়ে গেল, পড়ে গেল ঐন্দ্রজালিকদের হাতে, তখন সে লক্ষ লক্ষ লোক বিপথে ঠেলে দিল৷ তারা মৃত বস্তুবাদে আস্থাবান হলো, প্রকৃত সত্য ছেড়ে দিয়ে৷ তথাপিও তারা সফল হতে পারলো না মিথ্যার রাজ্য প্রতিষ্ঠাকল্পে৷ তারা খোদার বিরুদ্ধে মুষ্টাঘাত প্রদর্শন করেছিল৷ যে কেউ জীবন ও প্রেমের প্রকৃত উত্‍স খোদার অস্তিত্ত্বে অনাস্থা আনবে, আর জনগণকে তার পরিবর্তে অন্যকিছু মান্য করতে প্রাণীত করবে, সে তিক্ততা ও বিরক্তে তাদের হৃদয় ভরে তুলবে, এতে করে খোদার গজব প্রকাশ পাবে এবং কেয়ামতের বিচারে দন্ডিত হবে৷

www.Waters-of-Life.net

Page last modified on September 25, 2013, at 08:00 AM | powered by PmWiki (pmwiki-2.3.3)