Home
Links
Bible Versions
Contact
About us
Impressum
Site Map


WoL AUDIO
WoL CHILDREN


Bible Treasures
Doctrines of Bible
Key Bible Verses


Afrikaans
አማርኛ
عربي
Azərbaycanca
Bahasa Indones.
Basa Jawa
Basa Sunda
Baoulé
বাংলা
Български
Cebuano
Dagbani
Dan
Dioula
Deutsch
Ελληνικά
English
Ewe
Español
فارسی
Français
Gjuha shqipe
հայերեն
한국어
Hausa/هَوُسَا
עברית
हिन्दी
Igbo
ქართული
Kirundi
Kiswahili
Кыргызча
Lingála
മലയാളം
Mëranaw
မြန်မာဘာသာ
नेपाली
日本語
O‘zbek
Peul
Polski
Português
Русский
Srpski/Српски
Soomaaliga
தமிழ்
తెలుగు
ไทย
Tiếng Việt
Türkçe
Twi
Українська
اردو
Uyghur/ئۇيغۇرچه
Wolof
ייִדיש
Yorùbá
中文


ગુજરાતી
Latina
Magyar
Norsk

Home -- Bengali -- The Ten Commandments -- 03 First Commandment: You Shall Have no Other Gods Before Me
This page in: -- Afrikaans -- Arabic -- Armenian -- Azeri -- Baoule -- BENGALI -- Bulgarian -- Cebuano -- Chinese -- English -- Farsi -- Finnish? -- French -- German -- Gujarati -- Hebrew -- Hindi -- Hungarian? -- Indonesian -- Kiswahili -- Malayalam? -- Norwegian -- Polish -- Russian -- Serbian -- Spanish -- Tamil -- Turkish -- Twi -- Ukrainian -- Urdu? -- Uzbek -- Yiddish -- Yoruba
ব্যাখ্যা ৬: দশ আজ্ঞা - মানুষকে অপরাধের কবল থেকে রক্ষা করার প্রতিরক্ষা কবজ সম দেয়াল৷ প্রথম খন্ড
সুসমাচারের আলোকে হিজরত পুস্তকের ২০ অধ্যায়ে বর্ণীত দশ শরীয়তের ব্যাখ্যা

০৩ - প্রথম আজ্ঞা: অন্য কোনো দেবতা থাকবে না৷



হিজরত ২০:৩
আমার জায়গায় কোনো দেবতাকে দাঁড় করাবে না


০৩.১ - বর্তমানে প্রতীমা পূজার প্রচলন হয়েছে

যদি আপনি কোনো শিল্পনগরে বসবাস করেন তবে দেখতে পাবেন লোকজন প্রতিমা পূজা করছে৷ তাদের প্রতিমা কাঠের হতে পারে, হতে পারে পাথরের, কখনোবা স্বর্ণের প্রতিমাও মানুষ গড়ে থাকে৷ আপনি যদি এশিয়া বা আফ্রিকা সফরে যান তবে অগণিত পৌত্তলিক ব্যক্তির সাক্ষাত পাবেন যারা ভয়ে ঐসকল কাল্পনিক দেবতাদের পূজা অর্চনা করে থাকে৷

ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনের ম্যাগাজিনে দূর্গা দেবীর ছবি রয়েছে, দূর্গা হলো যুদ্ধের দেবি যার ছয়টি হাতে বিদ্রোহীদের হত্যা করে৷ দূর্গার চারদিকে মানুষের মাথার খুলি দিয়ে সাজানো৷ যুদ্ধে পরাদর্শী এ দূর্গা, যে কেউ তার কাছে ঘেষতে চেষ্টা করে তাকেই আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে ছাড়ে, তার জিহ্বা দিয়ে আগুন বেরিয়ে আসে৷ যখন তার শত্রুদের কতল করতে পারে তখন তার মুখে হাসি ফোটে৷

ভারতের খোদাই করা হাতির মুর্তি পাবেন যা হলো গণ হাতি বা গণেশ দেবতা৷ সময় সময় হিন্দুরা উক্ত দেবতাদের পুষ্প অঞ্জলি দিয়ে থাকে৷ বিশেষ ভোজের সময় প্লাষ্টিকের তৈরি হাতি ফুল দিয়ে সাজায়, মালা দান করে, আর ওগুলো কখনো কখনো দুই তিন তলা পর্যন্ত উঁচু করে গড়া হয়৷ তাদের বিশ্বাস উক্ত পুজ্য দেবতা মিছিল করে সমূদ্রে বা নদীতে বিসর্জন দিলে প্রচুর মাছ পাবার সম্ভাবনা থাকে আর বাত্‍সরিক বন্যার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া যাবে যা হলো তাদের বিশ্বাস৷

বিশেষ ভোজের সময় হাজার হাজার গাভী মন্দিরে নিয়ে পুন্যস্নান দেয়া হয় এবং শৃঙ্গ উজ্জল রং দিয়ে রাঙ্গিয়ে দেয়া হয় যা হলো পবিত্রকরণের চিহ্ন৷

হিমালয়ের পাশ্বর্ে লাদাখ উপত্যকায় বৌদ্ধদের শহরে ভ্রমন করতে গেলে দেখতে পাবেন স্বর্ণ নির্মিত অতিকায় বুদ্ধদেবের মুর্তি, স্মিত হাসি দিয়ে রেখেছে, লোকজন আভুমি প্রণতি জানাচ্ছে স্বসম্মানে৷ বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ লোক আজ পর্যন্ত প্রতিমা পূজা দিয়ে ফিরছে৷ আর এর ফলেই তারা 'দশ আজ্ঞার' প্রথম আজ্ঞা লঙ্ঘন কর চলছে৷ মূর্তিপূজারিগণ বিশ্বাস করে এসকল মুর্তির ক্ষমতায় এবং তারা পুনর্জন্মেও বিশ্বাস করে৷ আফ্রিকা ও ইন্দোনেশিয়ার বৃহত্‍ জনগোষ্টি এভাবে বন্দি হয়ে আছে আত্মিক ভাবে প্রথাগত কারণে৷ কেউবা পূর্বপুরুষের পুজা অর্চনা করে চলছে৷ যদি তারা মসিহের ক্ষমতার পরিচয় পেত তবে তারা সর্বপ্রথম বন্দিত্ব থেকে মুক্তি পেত, মুক্তি পেত মন্দ আত্মার আছড় থেকে৷ তখন তাদের যাদুমন্ত্রের আর প্রয়োজন হতো না, ফাকা পুতুলের কবল থেকে মুক্তি পেত, প্রভাবমুক্ত হতে পারতো মন্দ আত্মার অনাহুত অদৃশ্য ক্ষমতার বলয় থেকে৷

আমাদের বেহেশতি পিতা সর্বপ্রকার ভয় থেকে আমাদের মুক্ত করেছেন, এমন কি জি্বনভুতের প্রভাব বলয় থেকেও বিজয়ী করেছেন এবং সম্পূর্ণভাবে আমাদের স্বাধীন করেছেন, সর্বপ্রকার যাদুর প্রভাব থেকে৷ খোদার পুত্র ঈসা মসিহের রক্ত সর্বপ্রকার পরাশক্তির উপর ক্ষমতাবান৷ মসিহের পথে যারা চলার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে মন্দ শক্তির যতপ্রকার অভিশাপ আনা হোক না কেন অথবা যতই ভয় দেখানো হোক না কেন সবই খানখান হয়ে ভেঙ্গে গেছে মসিহের নাম ও ক্ষমতার জোরে৷ যারাই তাঁর দিকে ফিরেছে তাদেরকেই দূর্গসম তিনি সর্বাবস্থায় প্রতিরক্ষা দিয়ে ফিরছেন৷


০৩.২ - বর্তমানকার পৌত্তলিকতা

শিল্পে সমৃদ্ধ দেশগুলোতে দুর্ভাগ্যবশত: নতুন ধরনের পৌত্তলিকতা দেখা দিয়েছে৷ পুতুল অপসারিত হয়েছে টেলিভিশন, গাড়ি এবং খ্যাতি সমূহদ্বারা৷ জীবন্ত খোদার উপর অধিক নির্ভর না করে তারা অধিকতর নির্ভর করছে প্রযুক্তি বিদ্যার উপর৷ সে গাড়িতে চড়ে পীচঢালা পথে উচ্চগতিতে ছুটতে থাকে৷ বর্তমান যুগের লোকদের কাছে গাড়িটা যেন একটা পূজ্য দেবতা৷ তারা গাড়িতে প্রবেশ করে নিজেদেরকে ছেড়ে দেয় গাড়ির গতির উপর৷ যেমন ইস্রায়েল জাতি স্বর্ণের গোবত্‍সের চারপাশ্বর্ে নেচে নেচে প্রদক্ষিণ করতো৷ আর বর্তমানকার সভ্যতা ঘুরে ফিরছে অত্যাধুনিক গাড়ির চারপাশে৷ নতুন গাড়ির গর্বিত মালিক গাড়িটির জন্য জান পর্যন্ত দিতে প্রস্তুত, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নিজেই শ্রম দেয়, ঝকঝকে রাখার জন্য কত কি না করে, ইঞ্জিনের আওয়াজ শুনে যতোটা, আশপাশের লোকদের কথা অতোটা শোনে কিনা তাতে সন্দেহ আছে৷ যথেষ্ট পরিমান অর্থ ও সময় ব্যয় করে এর পিছে, অতোটা সময় গরিবদের পিছনে দেয় না৷ মানুষ কি বর্তমানকার প্রযুক্তির কাছে ক্রীতদাসে পরিণত হয়ে পড়ে নি? খেলা দেখার জন্য অথবা গাড়ির প্রতিযোগিতা দেখার জন্য স্টেড়িয়ামে জনতার ভীর যেন জনস্রোতে রুপ নেয়, অথচ চার্চের মধ্যে অথবা ধমর্ীয় সভায় কতিপয় লোক পাওয়া বড়ই দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়৷

অর্থের প্রতি মোহের বিষয় মসিহ বড়ই সাবধান করে দিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, 'কেহই খোদা ও অর্থের প্রতি আসক্ত থাকতে পারে না৷ হয়ত সে একটিকে ভালোবাসবে আর অন্যটি ঘৃণা করবে, অথবা খোদাকে ছেড়ে দিয়ে টাকার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়বে'৷ টাকা পয়সার প্রতি আসক্তি সর্বপ্রকার মন্দকাজের কারণ৷ সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা আর ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থা, উভয়ের একই লক্ষ্য বিন্দু৷ ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণ ধনি হয় আর সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় কৌশল ও জোর করে ধনি হবার প্রবণতায় ভোগে৷ বর্তমান যুগেও স্বর্ণের বাছুরের চারপাশে মানুষ তওয়াফ করে৷ প্রতাড়িত হইও না, খোদাকে নিয়ে তামাসা করো না৷ কেউই খোদা ও ধনদৌলত একসাথে সেবা করতে পারে না৷ মসিহ গরিব ছিলেন, কিন্তু তার যা কিছু ছিল তাতে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন৷ ধনের বিরুদ্ধে কঠিন শিক্ষা ও সাবধানতা দিয়েছেন তাঁর সাহাবিদের৷ কিন্তু যারা ধনী হতে চায় তারা নানা পরীক্ষায় পড়ে, আর এমন সব বাজে ও অনিষ্টকর ইচ্ছা তাদের মনে জাগে যা লোককে ধ্বংস ও সর্বনাশের তলায় ডুবিয়ে দেয় (১ তিমথীয় ৬:৯, মথি ৬:২৪, ১৯:২৪)৷

তথাপি পৌত্তলিকতা সকল ধর্ম ও সংস্কৃতির লোকদের মধ্য জেকে বসেছে, দাবিয়ে রাখছে আর তা হলো 'আমিত্ব'৷ প্রত্যেকের মধ্যে এমন একটি ধারণা পোষণ করে যা হলো 'তিনি ই সবজান্তা' সর্বোত্তম, সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি৷ যদিও বা কেউ তেমন চিন্তা নাও করে তবুও মনে মনে তেমনটা কামনা করে৷ প্রত্যেকে মনে মনে ভাবে সে বিশ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করে৷ তিন বত্‍সর বয়সের একটি কন্যা সন্তানকে প্রশ্ন করা হলো, 'তুমি কি হতে চাও' একটি মুর্তি, জবাবে সে বললো৷ 'কেন' 'প্রত্যেকে আমার দিকে তাকাবে'৷ এ কারণে,অহংকার ও স্বার্থপরতা আমাদের ধমনিতে প্রবহমান, বয়ে চলছে আমাদের রক্তে৷ এ মনোভাব বিনম্র মসিহের আত্মার চেয়ে সম্পূর্ণ বিপরীত৷ মসিহ বলেছেন, কি করে তোমরা বিশ্বাস করবে, যারা পরষ্পর থেকে সম্মান লেনদেন করে, সেই সম্মান খোঁজো যা কেবলমাত্র খোদার তরফ থেকে নেমে আসে৷ (ইউহোন্না ৪৫:৪৪, মথি ১১:২৯-৩০, ১৬:২৫-২৬, যেরিমিয়া ৪৫:৫)


০৩.২ - পৌত্তলিকতার হাত থেকে মুক্তি

খোদা ছাড়া অন্যান্য দেবতাদের পূজা করা নিষিদ্ধ এটা প্রথম আজ্ঞা হলো কেন? বাস্তবে খোদা তো মাত্র একজনই৷ জগতের সর্বপ্রকার খ্যাতি মাত্র, ক্ষণকালের৷ খোদাই হলেন চিরঞ্জিব চিরস্থায়ী৷ তিনিই আমাদের সৃষ্টি করেছেন, গৌরব মহিমা একমাত্র তাঁরই প্রাপ্য৷ গোটা বিশ্বের কেন্দ্রবিন্দু তো তিনিই৷ একগুয়েমি ও স্বার্থপরতা ভেঙ্গে দিয়ে অনুতপ্ত হৃদয়ে স্বানন্দে তাঁর সেবা করা নিত্যদিন আমাদের প্রয়োজন৷ খোদার ইচ্ছা ও পরিকল্পনার হাতে আমাদের সমর্পিত থাকা দরকার৷ আমাদের জীবনের ভিত্তি অর্থ, বিত্ত, মেধা ও সুসাস্থ্য এর কোনোটাই হতে পারে না৷

ইব্রাহীম নবী দীর্ঘ কাঙ্খিত আইনানুগ পুত্র ইসহাককে অত্যন্ত স্নেহ করতেন৷ তিনি তার পুত্রকে কেন্দ্র করে স্বপ্ন সাধ রচনা করতে শুরু করেন এবং খোদার চেয়েও অধিক গুরুত্ববহ ছিল তার পুত্রটি৷ তখন খোদা তার সেবককে পরীক্ষা করলেন৷ তিনি আজ্ঞা করলেন খোদার নামে পুত্রকে কোরবানি দিতে৷ যা কিছু অসম্ভব মনে হতো খোদার নামে তা করার জন্য তিনি রাজী হলেন, একমাত্র পুত্রকে কোরবানি দিয়ে খোদার গৌরব প্রকাশ করলেন৷ খোদা ইব্রাহীমকে শেষ মুহুর্তে বারণ করলেন পুত্রটিকে কোরবানি দেয়া থেকে, পরিবর্তে অর্থাত্‍ পুত্রের পরিবর্তে একটি ভেড়ার ব্যবস্থা করলেন কোরবানী দেবার জন্য৷ হৃদয়ের মনিকোঠায় একমাত্র খোদার স্থান, আর সেই স্থান যখন আক্রান্ত হয়, অন্যকিছু দখল করে নেয়, তখন তা দূর করার জন্য ইব্রাহীম তার পুত্রকে কোরবানি দিতে যেখানে রাজি হলেন আর তাই ছিল ইব্রাহীমের ক্ষেত্রে একমাত্র খোদার প্রতি অনুরাগের প্রকাশ৷ তিনি প্রমাণ করলেন পুত্রের চেয়ে তিনি খোদার প্রতি অধিক অনুরক্ত৷

সময় সময় আমাদের নিজেদের অন্তর পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন, আমাদের খোদা ভক্তি অন্য কোনো বস্তুর কারণ হতে পারে পুস্তক প্রেম, গহনা, ছবি, স্বরনিকা, শখের বিষয়, বদ অভ্যাস, অর্থ, গৃহ এবং আরও বহু কিছু এ ধরণের৷ কখনো কখনো মানুষও আমাদের হৃদয় জুড়ে বসে৷

জনগণ যখন শাসকগণের পূজা করে তখনই প্রমান হয় প্রতিমা পূজার প্রলোভন৷ গোটা বিশ্ববাসী ভক্ত মোহমুগ্ধ হয়ে পড়েছিল নেপোলিয়ানের, আতাতুর্কের, হিটলারের, জামাল আব্দুল নাসেরের, খোমিনির এবং এ ধরনের অন্যান্য বিশ্বনেতাদের৷ ওটা ভক্তিশ্রদ্ধা সত্ত্বেও তাদের মৃতু্যর পর তাদের লিখিত বইপুস্তুক আগুনে জ্বালিয়ে তাদের প্রতি ঘৃণা প্রমান করেছে৷ নবী যেরোমিয়া মানবীয় শক্তি প্রজ্ঞা ও সাহায্যের এমন মোহমুগ্ধতা হতে নিষেধ ও সাবধান করে দিয়েছেন৷ তিনি বলেছেন, 'যে লোক মানুষের ওপর ভরসা করে ও শক্তির জন্য নিজের শরীরের ওপর বিশ্বাস করে এবং যার দিল আমার কাছ থেকে দূরে সরে গেছে সে বদদোয়া প্রাপ্ত৷

চিত্রশিল্পী সিনেমাজগতের, ক্রীড়াশিল্পী এদের প্রতি জনমানুষ ও এদের ভক্তবৃন্ধগণ মোহিত হয়ে পড়ে, মনে হবে এরাই তাদের কাছে দেবতা৷ তারা এদের কাছে এতাটাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়ে, স্টেডিয়ামে বসে মূর্ছাগত হয়ে পড়ে৷ এসব ক্ষেত্রে আমাদের সজাগ থাকতে হবে৷ আমরা বলছিনা যে লোকদের দেবাদান ও সম্মান প্রদর্শন পাপ৷ কিন্তু খোদার চেয়ে অন্য কোনো কিছু অধিক ভালোবাসা বা মুগ্ধ হয়ে মুর্ছা যাওয়া রুহানি বিশ্বাসঘাতকতার মধ্যে পড়ে৷ খোদা কি অনন্ত জীবনের জন্য আমাদের সাথে চুক্তি বদ্ধ হন নি? মসিহ যেভাবে লোকদের আহ্বান করেছেন তাতে আশ্চার্য হবার কিছুই নেই, 'বেইমান ও মন্দ লোকের দল' কেননা সর্বান্তকরণে তারা তাকে ভালোবাসেনি, সম্মানও দেখায় নি গভীরভাবে আর তার উপর নির্ভর করে নি৷

প্রতিমা পূজা নানা ধরণের নানা উপায়ে চলে আসছে, যা হলো প্রকৃত খোদার কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়া ও তাঁর উপর বিশ্বাসহীনতার ফল৷ খোদা আপন গৌরব রক্ষনে পারদশর্ী এবং তিনি এককভাবে আমাদের হৃদয় সিংহাসনে সমাসীন থাকতে চান৷ তাঁর প্রতি আমাদের কিয়দংশ প্রেম বাধ্যতা ও হৃদয়ের খানিকটা জুড়ে তাঁর অবস্থানে তিনি আদৌ সন্তুষ্ট থাকতে পারেন না৷ তিনি সম্পূর্ণভাবে আমাদের পেতে চান বা অধিকারে রাখতে চান এবং তা অনন্ত কালের জন্য৷ তাই অবশ্যই পুরাতন প্রতিমা অথবা বর্তমানকার প্রতিমা সবগুলো অপসারণ করে সম্পূর্ণ হৃদয়টাকে তাঁর হাতে তুলে দিতে হবে৷ এবং তাঁর সাথে আমাদের চুক্তির নবায়ন করতে হবে৷ নিজের কাছে নিজে প্রশ্ন করুন, আপনার জীবনে প্রতিমা বলতে কিছু আছে কিনা যা খোদার চেয়ে অধিক আকর্ষণের কারণ এবং ভেবে দেখুন তা চিরদিনের জন্য কীভাবে দূর করা সম্ভব?


০৩.৪ - মসিহি বিশ্বাস কি প্রথম আজ্ঞার সাথে অদ্ভুত মনে হয়?

ইহুদি ও মুসলমানগণ 'দশ হুকুমের' ব্যাখ্যার বিষয়ে এ পর্যন্ত ঐকমত্যে থাকবেন৷ তবুও তারা মসিহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন এ বলে যে মতবাদগত এ আজ্ঞার বিরুদ্ধে ব্যাখ্যা দিয়েছে৷ 'তোমরা মসিহিগণ আসলে নাস্তিক' তাদের বিতর্কের কারণ' তোমরা প্রথম ও প্রধান আজ্ঞা ভঙ্গ করেছো৷ তোমরা খোদার নামে নিন্দা করেছো, এ বলে যে তিনজন খোদার অস্তিত্বে বিশ্বাস করো, আর তাদের মধ্যে একজন সলিবে প্রাণ দিয়েছে৷ ইহুদি ও মুসলমানগণ মসিহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে, তারা খোদার নিন্দা করে, কেননা তারা ত্রিত্ত্বপাকে বিশ্বাস করে৷

এ অভিযোগের বিরুদ্ধে মসিহ নিজে কী জবাব দিয়েছেন? মসিহ নিত্যদিন কঠিন হৃদয়ধারিদের কাছ থেকে এমন প্রশ্নের মোকাবেলা করেছেন৷ মসিহ বিষদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন খোদার সাথে তাঁর একাত্মতার বিষয়ে৷ 'আমি আর পিতা এক' (ইউহোন্না ১০:৩০) 'আমি আর পিতা দুই' এমন কথা কখনোই তিনি বলেন নাই৷ সর্বদা বলেছেন এক৷ 'আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতা আছেন আমার মধ্যে' তাঁকে বন্দি করার পূর্বে তিনি সাহাবিদের জন্য প্রার্থনা করেছেন 'তারাও যেন এক হতে পারে যেমন আমরা ঐকে আছি' (ইউহোন্না ১৭:২২)৷ এ আয়াতগুলো প্রমাণ করে ত্রিত্বপাকের মাঝে আল্লাহর ঐক্য৷ বহুবচন যা আছে তা এক বচনে অর্থ প্রকাশ করে৷ মসিহ পিতার সাথে পরিপূর্ণ ঐক্যে থেকেই সাখ্য বহন করেছেন৷ পাটিগণিতের সাহায্যে এ সত্যকে আবিষ্কার করা সম্ভব নয়৷ 'কেউই বলতে পারে না পাকরূহকে বাদ দিয়ে মসিহ প্রভুর স্থানে আছেন দাঁড়িয়ে' (১ করিন্থীয় ১২:৩)৷ এ সত্যটি চিরন্তন রুহানি সত্য৷ খোদার রুহের কাছে যদি আমাদের সংযোগ না থাকে তবে রুহানি বিষয়গুলো আমরা বুঝতে পারবো না৷

মসিহ বলেছেন, 'যদি কেউ আমাকে মহব্বত করে তবে সে আমার কথার বাধ্য হয়ে চলবে৷ আমার পিতা তাকে মহব্বত করবেন এবং আমরা তার কাছে আসব আর তার সঙ্গে বাস করব (ইউহোন্না ১৪:২৩)৷ মসিহ তাঁর সাহাবিদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন, পাকরূহ তাদের মধ্যে বসবাস করবেন৷ একই সাথে আরও বলেছেন, নিশ্চয়তার সাথে বলেছেন, তার একাত্মতা বেহেশতি পিতার সাথে আর পিতা ও পুত্র একত্রে সাহাবিদের সাথে বসবাস করবেন৷

মসিহিগণ তিনজন ভিন্ন ভিন্ন খোদার অস্তিত্ত্বে বিশ্বাস করে না৷ একজনই মাত্র খোদা আছেন, যিনি নিজেকে পিতা, পুত্র ও পাকরূহের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন৷ ত্রিত্ত্বপাকের মধ্যে আল্লাহর ঐক্যে এটা প্রমান হয় না যে আমরা প্রথম আজ্ঞা লঙ্ঘন করেছি বরং পরিপূর্ণতা প্রকাশ পেয়েছে৷ আল্লাহপাকের রূহ আমাদের মধ্যে অর্থাত্‍ হৃদয়ে প্রেরণ করেছেন বিধায় মসিহের আত্মকোরবানির ফলে খোদার সাথে আমাদের মিলন সম্ভব হয়েছে৷ বিশ্বস্ত রূহ আমাদের সাহস যোগান খোদাকে আমাদের পিতা বলে সম্বোধন করতে আর পিতার নাম গৌরবান্বিত করতে চেতনা দিয়ে চলছে৷ আমরা মসিহকে সমভাবে বিশ্বাস করি এবং সর্বান্তকরণে ভালোবাসি কেননা, 'খোদার মহব্বত মসিহের মধ্য দিয়ে পরিপূর্ণভাবে আমাদের অন্তরে ঢেলে দেযা হয়েছে৷ আর তা করা হয়েছে পাকরূহের দ্বারা যিনি সহায় হিসেবে সর্বদা আমাদের সাথে বসবাস করেন (রোমীয় ৫:৫)৷ আমাদের বোঝা উচিত, পাকরূহের দ্বারা নতুন করে জন্মলাভ যারা করে নি তাদের কাছে এ মহান সত্যটি লুপ্ত রয়েছে, আর তারা এ সত্যকে চেনেও না বোঝেও না৷

কোরান কিন্তু এ ত্রিত্ত্বপাকের ওপর আক্রমণ করে না যা মসিহিগণ বিশ্বাস করেন৷ বরং গোষ্টিগত ত্রিত্ত্ববাদে আপত্তি করে, যা মসিহিগণও আপত্তি করে থাকে ও প্রতিবাদ জানায়৷ কোরান ঐ ত্রিত্ত্ববাদের বিরুদ্ধে কথা বলে যেখানে দেখানো হয়েছে, 'পিতা, মাতা ও পুত্রের ত্রিত্ত্ববাদ (সুরাহ আল মায়েদা ৫:১১৬) অথবা তিনজনের মধ্যে তৃতীয় জন (৫:৭৩)৷ ত্রিত্ত্বপাকের ওপর সারসংক্ষেপ আলোচনা হলো যা বাইবেলে বণর্ীত রয়েছে তা হলো খোদা মসিহ ও পাকরূহ একই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং অনন্তকালীন অবস্থান রয়েছে তাদের মধ্যে৷ অনন্তকালীন স্থায়ী খোদা সর্বদা কালামের মধ্য দিয়ে কথা বলেছেন এবং তার রূহের সাহায্যে কাজ করে আসছেন৷ ভৌতিক বা দৈহিক ত্রিত্ত্ববাদে আমরা বিশ্বাস করি না, যেখানে দেখানো হয়েছে পিতা মাতা ও পুত্র এই তিন মিলে ত্রিত্ত্ববাদ৷ আমরা বিশ্বাস করি খোদা হলেন পিতা, পুত্র খোদা এবং পাকরূহ খোদা তিনি মিলে একজন মাত্র খোদা যা রুহানি বিশ্লেষণ৷


০৩.৫ - নবীদের গ্রন্থে ত্রিত্ত্বপাকের বিষয়ে কি কোনো বর্ণনা আছে?

নবীদের গ্রন্থে যথাযথ বর্ণনার উল্লেখ রয়েছে ত্রিত্ত্বের মধ্যে খোদার ঐক্যের বিষয়ে৷ এ বিষয়গুলো কোরান অস্বীকার করতে পারে নি৷

যবুর ২:৭ ও ১২ আয়াতে আমরা পাঠ করি, মসিহের জন্মের হাজার হাজার বত্‍সর পূর্বে খোদা তাঁর বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছেন৷ তুমি আমার পুত্র, অদ্যই আমি তোমাকে জন্ম দিয়েছে৷ তিনি জনগণকে সাবধান করে দিয়েছেন এ বলে, 'পুত্রকে চুম্বন করো যেন সে ক্রুদ্ধ না হয়, আর পথি মধ্যে তোমরা ধ্বংস হয়ে না যাও৷'

যিশাইয়া ৭:১৪ পদে মসিহের জন্মের ৭০০ বত্‍সর পূর্বে ঘোষণা এসেছে 'দিন দুনিয়ার মালিক নিজেই তোমাদের কাছে একটা চিহ্ন দেখাবেন৷ তা হলো, একজন অববিাহিতা সতী মেয়ে গভীবতী হবে, আ তাঁর একটি ছেলে হবে; তাঁর নাম রাখা হবে ইম্মানূয়েল৷

যিশাইয়া ৯:৬ এক বিশেষ প্রতিজ্ঞা রেখেছেন 'এই সমস্ত হবে, কারণ একটি ছেলে আমাদের জন্য জন্মগ্রহণ করবেন, একটি পুত্র আমাদের দেওয়া হবে৷ শাসন করবার ভার তাঁর কাঁধের ওপর থাকবে, আর তাঁর নাম হবে আশ্চর্য পরামর্শদাতা, শক্তিশালী আল্লাহ, চিরস্থায়ী পিতা, শান্তির বাদশাহ৷

২ শামুয়েল ৭:১২-১৪ রাজা দাউদ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তার পুত্রদের একজন নিজে মসিহের এক নাম হলো খোদার পুত্র আর এক নাম হরো মনুষ্যপুত্র আর এক নাম হলো দাউদেয়র পুত্র৷

যবুরের ১১০:১ আয়াতে রয়েছে, 'মাবুদ আমার প্রভুকে বললেন, যতক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পায়ের তলায় রাখি, ততক্ষণ তুমি আমার ডান দিকে বস৷' সেখানে কি দুইজন প্রভুর উপস্থিতি রয়েছে? কখনোই নয়, এই আয়াতেও দেখানো হয়েছে পিতা খোদা, পুত্র খোদা এবং পবিত্র আত্মা খোদা যাদের মধ্যে ঐক্য রয়েছে তিনে মিলে এক৷

প্রথম থেকেই খোদা বহুবচনে কথা বলেছেন 'তারপর আল্লাহ বললেন, আমরা আমাদের মত করে এবং আমাদের সংগে মিল রেখে এখন মানুষ তৈরি করি৷ তারা সমুদ্রের মাছ, আকাশের পাখী, পশু, বুকে-হাঁটা প্রাণী এবং সমস্ত দুনিয়ার ওপর রাজত্ব করুক' (আদি ১:২৬)৷

উপরোলি্লখিত প্রতিজ্ঞাত আয়াত সমূহে পরিষ্কার দেখা যায় ত্রিত্ত্ববাদ মসিহিদের মনগড়া কিছু সৃষ্টি নয়, বরং এ সত্যটি খোদা নিজেই প্রকাশ করেছেন মসিহের জন্মের হাজার বত্‍সর পূর্বে৷ খোদা যা প্রকাশ করেছেন কে এমন শক্তিধর রয়েছে যে কিনা তা ঠেকাতে বা অস্বীকার করতে পারে?


০৩.৬ - মসিহের রুহানি সত্ত্বার উপর কোরানে উল্লেখ

কেবল কিতাবুল মোকাদ্দাসেই যে ত্রিত্ত্বপাকের বিষয়ে বর্ণনা রয়েছে তাই নয়, অর্থাত্‍ পিতা, পুত্র এবং পাকরূহের ঐক্যের বিসয়ে বর্ণনা রয়েছে কিন্তু কোরানে এ বিষয়ে অনেকগুলো আয়াত রয়েছে যাতে ত্রিত্ত্বপাকের প্রসঙ্গে জোরালো সমর্থন রয়েছে৷ পিতা পুত্র পাকরূহের ঐক্যের বিষয় কিতাবুল মোকাদ্দাসে পয়দায়েশ গ্রন্থ থেকে শুরু করে মুসা নবীর গ্রন্থ, যুবর এবং নবীদের সকল গ্রন্থে বিশদ বর্ণনা ও ব্যাখ্যা রয়েছে, ঠিক কোরানে অনেক আয়াত এ প্রসঙ্গে সমর্থনকল্পে মসিহিদের পক্ষে৷ প্রত্যেক মুসলমান যদি খোলা মনে ব্যক্তিগতভাবে কোরান পাঠ করতেন তবে তিনি দেখতে পেতেন এবং ঐক্যমত্যে আসতেন পারতেন ঈসা মসিহের জন্ম যেভাবে কুমারি মরিয়মের মাধ্যমে হয়েছিল, মসিহ হলেন খোদার কালাম, মরিয়মের মাধ্যমে মানবরূপ ধারণ করেন, যার পিছনে কোনো মানুষের হাত ছিল না৷ আল্লাহ তাঁর রূহ ফুঁকে দিলেন মরিয়মের মধ্যে যার ফলে মসিহের জন্ম হলো (সুরাহ আল আম্বিয়া ২১:৯১ এবং আত তাহরীম ৬৬:১২)৷

সুরাহ আল ইমরান ৩:৪৫, আল নিসা ৪:১৭১ এবং সুরাহ মরিয়ম ১৯:৪৩ বিশেষভাবে গুরুত্বের সাথে বর্ণনা দিয়েছে, মসিহ হলেন খোদার কালাম এবং তিনি আল্লাহর রূহ যা মানবরূপে প্রকাশ হয়েছেন৷ এই আয়াত সমূহ ইউহোন্না বর্ণিত সুসমাচারের প্রতিধ্বনি প্রকাশ করে৷ 'ইউহোন্না ১:১৪ সেই কালামই মানুষ হয়ে জন্মগ্রহণ করলেন এবং আমাদের মধ্যে বাস করলেন, পিতার একমাত্র পুত্র হিসেবে তাঁর যে মহিমা সেই মহিমা আমরা দেখেছি, তিনি রহমত ও সত্যেপূর্ণ৷'

সুরাহ বাকারা ২:৮৭, ৩৫২ এবং মায়েদা ৫:১১০ রয়েছে মসিহ পাকরূহের দ্বারা শক্তি প্রাপ্ত হয়েছেন যাতে করে তিনি মাটি দিয়ে পাখী তৈরি করে তাকে ফুঁকে দিয়ে জীবন্ত পাখী বানাতে পারতেন৷ অন্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে খোদার হুকুমে তিনি সুস্থ করতে পারতেন৷ খোদা মসিহ এবং পাকরূহের সমন্বয় শক্তির ফলে এ কাজগুলো সম্পাদিত হতো৷ আর এ নিগূঢ় সত্যটি কোরানে উল্লেখিত হয়েছে৷ মুসলমানগণ কেনো খামখা খোদা ও তাঁর মসিহের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে?

সুরাহ মরিয়মের ১৯:২১ আয়াতে পরিষ্কার বর্ণনা রয়েছে, আমরা তাকে লোকদের জন্য নিদর্শন (আয়াত) হিসেবে সৃষ্টি করেছি আর তিনি হলেন মানবজাতির প্রতি এক বিশেষ রহমত৷ আশ্চর্যের বিষয় হলো কোরানে আল্লাহ বহুবচনে কথা বলেছেন এবং মসিহকে এক রহমতের পারাবার থেকে এক রহমত হিসেবে দেখানো হয়েছে৷ তাই ঐশি প্রকৃতি বা বস্তু থেকে বেরিয়ে আসা ঐশি প্রকৃতি৷ রুহানি সত্ত্বা থেকে রুহানি সত্ত্বা৷

কিতাবুল মোকাদ্দসের কতিপয় আয়াত এবং কোরানের কতিপয় আয়াত ত্রিত্ত্বপাকের স্বপক্ষে সাখ্য বহন করে৷ ফেরেশতাদের সাথে একযোগে আমরাও খোদার মহিমা প্রকাশ করি৷ আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র৷ তার মহিমায় গোঠা দুনিয়া পরিপূর্ণ৷ (ইশাইয় ৬:৩) 'পবিত্র' শব্দের তিনবার পুনরাবৃত্তি করার অর্থ হলো পিতা পবিত্র, পুত্র পবিত্র এবং পাকরূহ পবিত্র এবং তারা পবিত্রতায় ঐক্যে বাস করেন৷


০৩.৭ - মসিহের ঐশিসত্ত্বার বিষয়ে মসিহিয়াতের বিশ্বাস

মসিহের ঐশিসত্ত্বার বিষয়ে মসিহিয়াতের বিশ্বাস ঘোষণা দিয়েছেন তখন তা অতিরঞ্জিত বলবো না৷ মৃতু্যর ঝুকি সত্ত্বেও পৌল প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, 'মসিহ হলেন অদৃশ্য আল্লাহপাকের হুবহু প্রতিকৃতি' (কলসীয় ১:১৫)৷ ইউহোন্না স্বীকার করেছেন, 'সেই কালামই মানুষ হয়ে জন্মগ্রহণ করলেন এবং আমাদের মধ্রে বাস করলেন পিতার একমাত্র পুত্র হিসেবে তাঁর যে মহিমা সেই মহিমা আমরা দেখেছি৷ তিনি রহমত ও সত্যে পূর্ণ' (ইউহোন্না ১:১৪)৷ হযরত পিতর সাখ্য দিয়েছেন, 'শিমোন-পিতর বললেন, আপনি সেই মসিহ, জীবন্ত আল্লাহর পুত্র' (মথি ১৬:১৬)

নাইসেয়ান মতবাদে মসিহিয়াতের সারসংক্ষেপ এভাবে টেনেছেন, মসিহ হলেন খোদা থেকে আগত খোদা, আলো থেকে আগত আলো, একমাত্র খোদা থেকে আগত একমাত্র খোদা, উত্‍পন্ন, তৈরী নয়, পিতার একই সত্ত্বা থেকে উত্‍পন্ন৷

মুসলমান ও ইহুদি সমপ্রদায় ভিষণ কঠিন মতবাদ দিয়ে খোদার সর্বশক্তি ও সার্বভৌম ক্ষমতা সীমাবদ্ধতা করে রেখেছে৷ কে পারে খোদার আত্মপ্রকাশ বাধাদান করতে? তিনি যেমন খুশি তেমনভাবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন গুনাহগারদের নাজাত করার নিমিত্তে৷ ঐশি মেষসম মানবজাতিকে একটি পুত্র করে পাঠালেন উক্ত বেগুনাহ মেষ কোরবানি দিয়ে মানবের পাপের কাফফারা শোধ দিবেন বলে যে মনস্থ করেছেন তা বাধা দেবার ক্ষমতা কার বাহুতে রয়েছে? খোদা হলেন স্বাধীন সার্বভৌম! সকল সৃষ্টির পূর্বেই মসিহের অবস্থান ছিল অস্তিত্ত্বমান৷ মসিহ মানুষ হয়ে মানুষের মধ্যে নেমে আসলেন যাতে মানবজাতিকে খোদার সাথে যুক্ত করে দিতে পারেন এবং ঐশি শান্তি পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়৷ জগতকে রক্ষা করার জন্য মসিহ মানুষ হলেন৷ তিনি সম্পূর্ণ বেগুনাহ রইলেন যাতে করে জগতের গুনাহ তিনি নিজের স্কন্ধে বহন করতে পারেন৷ ইউহোন্না এই ঐশি আহবানের বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে, 'যখন ইহুদি নেতারা জেরুজালেম শহর থেকে কয়েকজন ইমাম ও লেবীয়কে ইয়াহিয়ার কাছে পাঠালেন তখন ইয়াহিয়া তাঁদের কাছে সাক্ষ্য দিলেন৷ তাঁরা জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কে?' (ইউহোন্না ১:২৯)৷ যার ফলে আমরা খোদার দত্তক পুত্রের অধিকার পেয়েছি তাই খোদা হলেন আমাদের বেহেশতি পিতা; যেহেতু আমাদের পাপ সকল সম্পূর্ণ মাফ করা হয়েছে, আমরা হতে পেরেছি বেগুনাহ অর্থাত্‍ মুক্তপাপ৷ কেবলমাত্র মসিহিদের জন্যই নয়, মসিহ গোটা বিশ্ববাসির জন্যই নাজাতের পর্ব সুম্পন্ন করেছেন৷ তাঁর প্রস্তুতকৃত নাজাত হিন্দুদের জন্য, ইহুদিদের জন্য, মুসলমানদের জন্য এবং অবিশ্বাসীদেরও জন্য৷ সকলের জন্যই তিনি অনন্তজীবনের ব্যবস্থা করেছেন, যে কেউ তাকে বিশ্বাস করে, আস্থা রাখে সম্পূর্ণভাবে এবং নাজাতদাতা ও প্রভু হিসেবে গ্রহণ করে সেই হয়ে ওঠে মসিহের প্রস্তুতকৃত নাজাতের আইনানুগ অধিকারী৷ পুত্র আমাদের পেঁৗছে দেন পিতার কাছে আর পিতা তুলে দেন পুত্রের হাতে৷ খোদা নিজেকে মসিহের জর্দান নদীতে অবগাহনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছেন, 'তাদের বিষয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলছেন, আমার নির্দিষ্ট করা দিনে তারা আমার নিজের বিশেষ সম্পত্তি হবে; তারা আমারই হবে৷ একজন লোক যেমন তার সেবাকারী ছেলেকে মমতা করে শাস্তি থেকে রেহাই দেয় তেমনি করে আমি তাদের রেহাই দেব' (মথি ৩:১৭)৷ বেহেশতি ঘোষণা কে ঠেকাতে পারে?


০৩.৮ - প্রথম আজ্ঞার উদ্দেশ্য কী?

প্রথম আজ্ঞার উদ্দেশ্য বড়ই সহজ আর তা হলো খোদার প্রতি মহব্বত৷ মুসা নবী এ সুযোগকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আজ্ঞা হিসেবে দেখিয়েছেন, 'তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের সমস্ত দিল, সমস্ত প্রাণ ও সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমাদের দিচ্ছি তা যেন তোমাদের অন্তরে থাকে' (দ্বিতীয় বিবরণী ৬:৫)৷ হয় আমরা খোদাকে মহব্বত করব ও তাঁর রূহের সাথের ঐক্যে জীবন যাপন করব নতুবা তাকে ঘৃণা করবো এবং তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে চলবো৷ যদি আমরা খোদাকে মহব্বতই করে থাকি তবে তাঁর বিষয়ে ভাববো, তাঁর কালামে মনোযোগ দেব, তিনি যাতে সন্তুষ্ট হন তা আমরা করবো, তার পথে জীবন কাটাবো এবং তাঁর প্রতি আমাদের আকাঙ্খা থাকবে; যেমন কণে তার বরের জন্য আকাঙ্খা করে আর তার পত্র পুনঃপুনঃ পাঠ করে চলে৷ কিন্তু যারা নিজেদের দাম্ভিকতায় থাকে অন্ধ, নিজেদের দেবচরিত্রভাবে, প্রকৃত খোদার কাছ থেকে দূরে সরে যায়, তারা অবশ্যই তাঁর কালাম ভুলে যাবে এবং তাদের কঠিন হৃদয়ের কারণে পরিশেষে খোদার গজবে হবে পরিণত৷

যারা মসিহকে মহব্বত করে তারা পাকরূহের অর্থাত্‍ খোদার রূহের দ্বারা বেষ্টিত থাকে৷ তারা লাভ করে তাদের সকল পাপের ক্ষমা, আর পাকরূহের শক্তিতে জীবন যাপন করে থাকে৷ তারা তাদের পিতার আদলে রূপান্তরিত হয়ে ওঠে, কেননা তাদের প্রার্থনা হলো তাদের পরিবার ও জীবন দিয়ে পিতার মহিমা প্রকাশ পাক আর তাঁর গৌরব হোক সাধিত৷ আমরা যদি সত্যিকারার্থে খোদাকে মহব্বত করি তবে অবশ্যই আমরা তাঁর দিকে ফিরব, ফলস্বরূপ মহিমা থেকে অধিক মহিমা লাভ করব৷ আমাদের বিবেকের বিশোধন অনুভব করতে থাকবো, খোদার স্বাধীন সন্তান হিসেবে জীবন যাপন করবো আর তাঁর রুহানি পরিচর্যার কাজে নিয়োজিত থাকবো৷ যারা সত্যিকারার্থে খোদাকে মহব্বত করে, তারা তাদের জীবন থেকে পৌত্তলিকতার নির্বাশন ঘটায় আর নতুন চুক্তির আলোকে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে৷ আমাদের জীবন ও বিশ্বাস দিয়ে এ চুক্তির রহস্য প্রকাশ পেয়ে থাকে, 'খোদা নিজেই মহব্বত, যে কেউ মহব্বতে জীবন-যাপন করে সে খোদার মধ্যে থাকে আর খোদাও তার মধ্যে থাকেন' (১ইউহোন্না ৪:১৬)৷

www.Waters-of-Life.net

Page last modified on September 25, 2013, at 07:57 AM | powered by PmWiki (pmwiki-2.3.3)