Home
Links
Bible Versions
Contact
About us
Impressum
Site Map


WoL AUDIO
WoL CHILDREN


Bible Treasures
Doctrines of Bible
Key Bible Verses


Afrikaans
አማርኛ
عربي
Azərbaycanca
Bahasa Indones.
Basa Jawa
Basa Sunda
Baoulé
বাংলা
Български
Cebuano
Dagbani
Dan
Dioula
Deutsch
Ελληνικά
English
Ewe
Español
فارسی
Français
Gjuha shqipe
հայերեն
한국어
Hausa/هَوُسَا
עברית
हिन्दी
Igbo
ქართული
Kirundi
Kiswahili
Кыргызча
Lingála
മലയാളം
Mëranaw
မြန်မာဘာသာ
नेपाली
日本語
O‘zbek
Peul
Polski
Português
Русский
Srpski/Српски
Soomaaliga
தமிழ்
తెలుగు
ไทย
Tiếng Việt
Türkçe
Twi
Українська
اردو
Uyghur/ئۇيغۇرچه
Wolof
ייִדיש
Yorùbá
中文


ગુજરાતી
Latina
Magyar
Norsk

Home -- Bengali -- Romans - 050 (The Spiritual Privileges of the Chosen)
This page in: -- Afrikaans -- Arabic -- Armenian-- Azeri-- BENGALI -- Bulgarian -- Cebuano -- Chinese -- English -- French -- Georgian -- Greek -- Hausa -- Hebrew -- Hindi -- Igbo -- Indonesian -- Javanese -- Kiswahili -- Malayalam -- Polish -- Portuguese -- Russian -- Serbian -- Somali -- Spanish -- Tamil -- Telugu -- Turkish -- Urdu? -- Yiddish -- Yoruba

Previous Lesson -- Next Lesson

রোমীয়দের - প্রভুই আমাদের ধার্মিকতা
রোমীয়দের কাছে হযরত পৌলের লেখা পত্রের ওপর পর্যালোচনা
দ্বিতীয় খণ্ড - খোদার বাছাই করা বংশ হযরত ইয়াকুবের সন্তানদের মন কঠিন করা সত্ত্বেও তাঁর ধার্মিকতা সম্পূর্ণ অনড়৷ (রোমীয় ৯:১ - ১১:৩৬)

২. মনোনীত লোকদের জন্য রুহানি অধিকার (রোমীয় ৯:৪-৫)


রোমীয় ৯:৪-৫
তারা তো ইসরাইল জাতির লোক৷ আল্লাহ তাদের পুত্রের অধিকার দিয়েছেন, নিজের মহিমা দেখিয়েছেন, তাদের জন্য ব্যবস্থা স্থাপন করেছেন, শরীয়ত দিয়েছেন, তার এবাদতের উপায় করেছেন এবং অনেক ওয়াদাও করেছেন৷ ৫. আল্লাহর মহান ভক্তেরা ছিলেন তাদেরই পূর্বপুরুষ এবং মানুষ হিসেবে মসিহ তাদেরই বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন৷ তিনিই আল্লাহ, যিনি সব কিছুরই ওপরে; সমস্ত প্রশংসা চিরকাল তাঁরই৷ আমিন৷

পৌলের ইচ্ছা ছিল রোমের জামাতে তাঁর লোকদের স্মরণ করাতে যে তাদের কতকগুলো বিশেষ সুযোগ ও অধিকার রয়েছে৷ তিনি স্বীকার করলেন, সাথে সাথে একথাও প্রকাশ করলেন, সত্যিকার মসিহকে চিনে নিতে অথবা গ্রহণ করতে ও সকল সুযোগ তাঁর অথবা তাঁর লোকদের, কোনো কাজে লাগেনি৷ তাই তারা মসিহকে ঘৃণা করেছে, অস্বীকার করেছে, এতটাই ঈর্ষকাতর হয়েছে যার ফলে তারা তাঁকে ঘৃণ্য লজ্জাজনক সলিবে ঝুলিয়ে হত্যা করার পথ বেছে নিয়েছে, তাছাড়া তাদের হৃদয় কঠোর করে পাকরূহের বিরুদ্ধে পর্যন্ত পদক্ষেপ দিয়েছে৷ অন্ধকার যেমন হঠাত্‍ করে নামে না, ধীরে ধীরে নেমে আসে, তদ্রুপ মানুষের হৃদয় ক্রমে ক্রমে কঠোর থেকে কঠোরতম হতে থাকে৷

পৌলের স্বদেশীয় লোকদের প্রাত আশির্বাদ তাদের অন্যান্য লোকদের থেকে বৈশিষ্ট মন্ডিত করেছে?

তাদের আসল নাম ছিল 'ইয়াকুবের বংশ' যে ইয়াকুব ছিলেন প্রতারক, ইস্রায়েলের সন্তান ছিলেন না৷ কিন্তু তাদের পিতা পাপের জন্য দন্ডিত হলেন, তখন তাকে মাফ না করা পর্যন্ত প্রভুকে ছাড়লেন না৷ ইয়াকুবের দৃঢ় বিশ্বাসের ফলে প্রভু তার নাম বদল করে দিলেন, রাখলেন ইস্রায়েল যার অর্থ হলো 'যিনি খোদার সাথে মল্লযুদ্ধ করেছে, 'এল' এবং তার বিশ্বাসে জয়ী হলেন৷ ইয়াকুব দৈহিকভাবে শক্তিধর ছিলেন না, তার স্বভাব আচরণও ভালো ছিল না, কিন্তু তার ছিল দৃঢ় বিশ্বাস, যা তাকে খোদার ক্রোধ ও বিচার থেকে রক্ষা করেছে (পয়দায়েশ ৩২:২২-৩২)৷

ইয়াকুব মসিহের পূর্বপুরুষদের মধ্যে একজন৷ মসিহ হলেন খোদার মেষ যিনি জগতের পাপের কাফফারা নিজ স্কন্ধে বহন করলেন৷ আর আমাদের বাঁচাতে খোদার সাথে যুদ্ধ করলেন, আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত শোধ দিতে ও বিচারের হাত থেকে রক্ষা করতে, প্রাণ দিলেন৷ বিশ্বাসে তিনি খোদাকে ধরে রাখলেন আর আমাদের আর্শিবাদ না করা পর্যন্ত তিনি খোদাকে ছাড়লেন না৷ মরিয়মের পুত্র হলেন আমাদের নাজাতদাতা যিনি বিচারের দন্ড থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন৷ তাই খোদার সাথে প্রকৃত মল্লযুদ্ধকারী ইয়াকুব নন বরং মসিহ, যিনি এককভাবে সত্যিকারে ইস্রায়েল, যিনি খোদার ক্রোধ থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন৷

যারা এই মধ্যস্থকারী ইহুদি, মসিহি ও মুসলমান সমপ্রদায়, যাদের নাজাতের জন্য অবিরাম সুপারিশ করে যিনি চলছেন, সেই মধ্যস্থতাকারীকে যারা মানতে নারাজ, তাদের জন্য না আছে তাঁর আশির্বাদ না তারা তাঁর মনোনীত অভিষিক্ত লোকদের মধ্যে হবে গণ্য৷ এ বিষয়ক জ্ঞান পৌলের হৃদয় শোকে মুহ্যমান করে তুললো, কেননা তিনি দেখতে পেলেন, তার অধিকাংশ লোকজন প্রতিজ্ঞাত পাওনা অধিকারের বিষয়ে অজ্ঞ হয়ে আছে, আর অত্যাধিক অহমিকা অজ্ঞতার কারণে দুর্দম্য প্রভাবে প্রতিরোধ করে আসছেন৷

খোদা মুসা নবীকে আজ্ঞা করলেন মিশরে ফেরাউনের কাছে গিয়ে বলতে, ইয়াকুবের সন্তানগণ খোদার প্রথমজাত সন্তান (হিজরত ৪:২২, দ্বিতীয় বিবরণ ১৪:১, ৩২:৬, হোসেয় ১১:১-৩)৷ খোদার তাঁর সন্তানদের একগুয়েমির জন্য কষ্ট পাচ্ছেন, তারা তাঁর সম্মান করে না, যদিও তিনি তাদের দত্তক পুত্রের অধিকার প্রদান করেছেন৷ তারা পুনর্জাত হয় নি তবুও খোদা তাদের প্রথমজাত সন্তান হবার অধিকার দিয়েছিলেন৷

মাবুদের মহিমা মহাপবিত্রস্থানে পরিপূর্ণ ছিল, সাক্ষ্য তাম্বুর মধ্যে বিরাজমান থাকা সত্ত্বেও তাঁর মনোনীত লোকজন প্রান্তরে দিশেহারা হয়ে ঘুরে মরছিল৷ বিপদ-আপদের মাধ্যেও খোদা তাদের সুরক্ষা ও পরিচালনা দিয়ে যাচ্ছিলেন, আর অনেক আশ্চর্য কুদরতের কাজ করে তাদের প্রতি অনড় প্রেমের বিষয়ে বুঝাতে চেষ্টা করছিলেন (হিজরত ৪০:৩৪, দ্বিতীয় বিবরণ ৪:৭, ১ রাজাবলী ২:১১, ইশাইয়া ৬:১-৭, যিহিষ্কেল ১:৪-২৮, ইব্রাণী ৯:৫)৷ যাহোক, প্রভু তাঁর মনোনীতদের শাস্তি দিয়েছেন, মৃতু্যর ভয় দেখিয়েছেন তাদের অবিশ্বাসের কারণে, কিন্তু তাদের জন্য মুসা নবী ও হারুনের অনুরোধ উপরোধের কারণে মরণের হাত থেকে খোদা তাদের বাঁচালেন (গণনা পুস্তক ১৪:১-২৫)

পৌল ইহুদিদের স্মরণ করালেন আরও অন্যান্য সুযোগের কথা যা খোদা সময় সময় ঘোষণা করেছেন মহান ও শক্তিধর ব্যবস্থার কথা৷ প্রভু স্রষ্টা ও ন্যায় বিচারক, নিজেকে সাধারণ লোকদের সাথে চিরকালের জন্য যুক্ত করে নিয়েছেন৷ কিতাবুল মোকাদ্দস নিন্মবতর্ী ব্যবস্থার কথা বর্ণনা দেয়;

নূহ নবীর সাথে খোদার কৃত ব্যবস্থা (পয়দায়েশ ৬:১৮, ৯:৯-১৪)

ইব্রহীম নবীর সাথে খোদার ব্যবস্থা (পয়দায়েশ ১৫:১৮, ১৭:৪-১৪)

ইসহাক ও ইয়াকুবের সাথে খোদার ব্যবস্থা (পয়দায়েশ ২৬:৩, ২৮:১৩-১৯, যাত্রা ২:২৪)

মুসা নবীর সাথে খোদার ব্যবস্থা (যাত্রা ২:২৪, ৬:৪, ২৪:৭-৮, ৩৪:১০,২৮)

কিন্তু, পরিতাপের সাথে বলতে হয়, নবীদের যুগে লোকজন ঐসকল ব্যবস্থা সমূহ বার বার প্রত্যাখ্যান করেছে, তাই নবী যিরিমিয় বলেছেন, প্রভু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের সাথে এক নতুন ব্যবস্থা সম্পাদন করার বিষয়ে, যা কার্যকর হবে অবাধ্য লোকদের নতুন জন্মের মাধ্যমে (যেরোমিয় ৩১:৩১-৩৪)

খোদার ব্যবস্থার ভিত্তিমূল হলো শরীয়ত যা তিনি মুসা নবীর মাধ্যমে তাঁর লোকদের কাছে প্রেরণ করেছেন৷ ব্যবস্থার এ পুস্তক ৬১৩টি আজ্ঞার সমাহার যা শুরু হয়েছে দশ আজ্ঞার দ্বারা, যার মধ্যে রয়েছে ৩৬৫টি নিষেধাজ্ঞা আর ২৪৮টি অনুজ্ঞা যা ধরা হয় মাইমোনাইড মোতাবেক৷

এ আজ্ঞা সমূহের প্রথমে আমরা দেখতে পাই প্রত্যক্ষ বাক্য, 'আমিই আল্লাহ তোমাদের মাবুদ৷ আমার জায়গায় কোনো দেবতাকে দাঁড় করাবে না' (হিজরত ২০:১-৩)

এ সকল আজ্ঞা জারি করার প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে যদি কেউ গবেষণা করে, তবে সে খুঁজে পাবে এ আজ্ঞা, 'তোমাকে পবিত্র হতে হবে, কেননা আমি প্রভু পবিত্র' (লেবীয় ১৯:২) এ সকল আজ্ঞার সার কথা হলো, 'তোমার প্রভু খোদাকে ভালোবাসতে হবে সর্বান্ত করণে, সমস্ত শক্তি দিয়ে ও সমস্ত মন-প্রাণ দিয়ে' (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৫) এবং 'তোমার প্রতিবেশিকে আত্মবত্‍ প্রেম করতে হবে' (লেবীয় ১৯:১৮)

প্রকৃতার্থে আমরা দেখতে পাই মসিহ ব্যতীত সকল ব্যক্তিই এ আজ্ঞাগুলো পালন করতে হয়েছে সম্পূর্ণ ব্যর্থ (জবুর ১৪:৩, রোমীয় ৩:১০-১২)

সাক্ষ্য সিন্দুকের সামনে উপাষণা আর জেরুজালেমের এবাদতগৃহের মধ্যে যে এবাদত হতো, তার জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন ছিল পাপীদের সম্পূর্ণ পবিত্র করণ, আর তার জন্য প্রচুর রক্তক্ষয়ী কোরবানি দেয়া হতো যেন ব্যক্তি পবিত্রভাবে খোদার সামনে গিয়ে এবাদত করতে প্রস্তুত হতে পারে৷ এ পদ্ধতি করা হতো যবুরের আয়াত উচ্চারণের মাধ্যমে, গীতের সমন্বয়ে, আর পাপ স্বীকারে মধ্য দিয়ে, নানা ধরণের অনুষ্ঠানের প্রচলন ছিল, আর প্রচুর উপাষণা করা হতো৷ পুরাতন ব্যবস্থার যুগে কেউ যদি গভীরভাবে উক্ত যবুরের পুস্তকের উপর ধ্যান গবেষণা করে, তবে পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারবে রূহের উপস্থিতি এবং জীবনে বাস্তবায়নের আবশ্যকতা৷ উপষণার সকল কর্মযজ্ঞের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কোরবানির দ্রব্য না দিয়ে আশির্বাদ লাভ করা৷

এ সকল কোরবানির ও উপাষণার চূড়ান্ত স্তর হলো মহাভোজের মধ্য দিয়ে, বিশেষভাবে নিস্তার পর্বের ভোজ, পঞ্চসত্তমির দিনে, তাবারনাকেল ও ইয়োম কাপুর বা অভিষেকের দিন৷

জেরুজালেমের এবাদতখানায় খোদার উপস্থিতির প্রতি সকলের মনোযোগের সুফল ছিল তাদের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ঐক্য ধরে রাখার উপায়৷ কিন্তু রুহানি কেন্দ্র থাকা সত্ত্বেও আসেপাশের গ্রামগুলোতে ভালো দেবতার অনেক মন্ডপ ছিল, যেগুলোতে অন্যান্য দেবতাদের সম্মুখে বলি উত্‍সর্গ করা হতো, তাদের নাম মহিমান্বিত করা ও গুনাবলি তুলে ধরা হতো যা ছিল পরিষ্কার খোদাদ্রোহীতার প্রধান কারণ এবং তাদের বিরুদ্ধে খোদার বিরাগের বিষয়৷

পুরাতন ব্যবস্থাটি হলো খোদার নানাবিধ প্রতিজ্ঞায় পরিপূর্ণ, তাদের মধ্য থেকে তিনটি বিষয় তুলে ধরলাম:

ক) খোদার উপস্থিতি, ক্ষমা, প্রতিরক্ষা ও সান্ত্বনা প্রভু খোদার তরফ থেকে (যাত্রাপুস্তক ৩৪:৯-১১)
খ) ঈসা মসিহের আগমণের ভবিষ্যদ্বানী যিনি হলেন শান্তিরাজ, খোদার বিনম্র মেষ শিশু (দ্বিতীয় বিবরণ ১৮:১৫, ২শমুয়েল ৭:১২-১৪, ইশাইয়া ৯:৫-৬, ৫৩:৪-১২)
গ) মনোনীত লোকদের উপর পাকরূহের অভিষেক এবং সমস্ত লোকদের তদ্রুপ অভিষেক দান (ইয়ারমিয়া ৩১:৩১-৩৪, যিহিষ্কেল ৩৬:২৬-২৭, যোয়েল ৩:১-৫)

আপশোসের বিষয় হলো, অধিকাংশ ইহুদি লোক খোদার মেষ, যিনি হবে তাদের রাজা তাঁর উপস্থিতি বুঝতে পারে নি ৷ পাকরূহের অভিষেক না পাওয়া পর্যন্ত তারা ঘৃণাভরে তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে৷ তার কারণ ছিল শক্তিশালী রাজনৈতিক রাষ্ট্রের জন্য তারা অপেক্ষা করছিল৷ তাই তারা না বুঝতে পেরেছে নিজেদের পাপ না আগ্রহ প্রকাশ করেছে রুহানিভাবে সম্পূর্ণ নতুনভাবে জন্ম লাভ করার৷ অনেকগুলো প্রতিজ্ঞার পরিপূর্ণতা ইতোপূর্বে লাভ করেছে মসিহের নেতৃত্বে এবং সাহাবিদের ওপর রূহের অভিষেকের ফলে, তবে মনোনীত লোকজন অদ্যাবধি তাদের জন্য যে সকল প্রতিজ্ঞার হয়েছে পুরণ তা না করেছে স্বীকার না করেছে গ্রহণ৷

মনোনীত লোকদের পিতা, পিতামহ কোনো দার্শনিক লোক ছিলেন না, কিন্তু তারা ছিলেন অন্যের জন্য রাখাল এবং পুরোহিত৷ তারা ইব্রাহিম, ইশহাক, এবং ইয়াকুবের প্রতিনিধি ছিলেন, কেননা তাদের আন্তরিক বিশ্বাস তাদের দুর্বলতাকে জয় করেছিল৷ ব্যবস্থার প্রভুকে স্মরণ করা হতো ইব্রাহীমের, ইশহাকের ও ইয়াকুবের খোদা হিসেবে (পয়দায়েশ ৩৫:৯-১২, হিজরত ৩:৬, মথি ২২:৩২)

মুসা, দাউদ, ইলিয়াস অথবা পুরাতন ব্যবস্থার অন্যকোনো ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ বা চালু করেন নি, তবে তাঁরা পুনঃপুনঃ মাবুদের সত্য ও পরাক্রম উপলব্ধি তথা অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন তদানীন্তন লোকদের দুষ্ট পরিকল্পনা ও প্রতিরোধ সত্ত্বেও৷ তারা তাদের বিশ্বাসের নিশ্চয়তা নিয়েই বসবাস করেছেন, আর তাদের লোকজনদের কাছে উত্তম দৃষ্টান্ত হিসেবে হয়েছেন বিবেচিত, তথা প্রজন্মের জন্য আশির্বাদের ঝর্ণাধারায় হয়েছেন পরিণত৷

যাহোক, ইস্রায়েল জাতির সবচেয়ে মহান সুযোগ ও সম্মান হলো প্রত্যাশিত মসিহ যিনি হলেন রাজাদের রাজা, প্রকৃত মহা ইমাম, মানবরুপি খোদার জীবন্ত কালাম, যার ওপর রয়েছে মানব জাতির জন্য সকল প্রাধিকার পরাক্রম ও খোদার প্রেমের উপহার৷ তিনি বলেছেন, 'আমিই দুনিয়ার নূর' কেননা খোদার প্রেম তাঁর মধ্যে করেন বসবাস, আর পাকরূহ তার গৌরব সাধন করেন৷ তিনি এবং খোদা একই সত্ত্বা যেমন তিনি সাক্ষ্য বহন করেছেন, 'আমি আর আমার পিতা একই' (ইউহোন্না ১০:৩০) এ সত্যের আলোকে প্রচারক পৌল তাকে 'খোদা' বলে অভিহিত করেছেন৷ তিনি বলেন নি 'একজন খোদা', কিন্তু তিনি বলেছেন সত্যিকারের 'খোদা', যেমন সকল জামাত স্বীকার করে যে, মসিহ হলেন খোদা থেকে আগত খোদা৷ আলো থেকে আগত আলো৷ সত্যিকারের খোদার পক্ষ থেকে সত্যিকারের খোদা, জাত, সৃষ্ট নয়, পিতার তরফ থেকে মূল সত্ত্বা৷

পৌল তার পত্রে বিষয় ভিত্তিক যে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন রোমের জামাতের কাছে সে জন্য, ইহুদিগণ অতীব ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠলো, গোলমাল বাধিয়ে বসলো, মসিহিদের অভিশাপ দিলো৷ অধিকাংশ ইহুদি পৌলকে ভুল শিক্ষক খোদাদ্রোহী খোদার নিন্দাকারী ভাবলো আর তাই তারা তাঁকে রোমীয়দের হাতে তুলে দিল, যারা তাদের ওপর শোষণ করতো, তাদের হাতে, তাকে সলিবে হত্যা করার জন্য৷ তারা তাদের হৃদয় কঠিন করে রেখেছিল সেই পুরাতন যুগ ইশাইয়া নবীর সময় থেকে (ইশাইয়া ৬:৯-১৩, মথি ১৩:১১-১৫, ইউহোন্না ১১:৪০, প্রেরিত ২৮:২৬-২৭)

উক্ত আয়াতগুলোর মধ্য দিয়ে তাদের হৃদয়ের কঠিন অবস্থা সুষ্পষ্ট ও দানাবাধা অবস্থায় আমরা দেখতে পাই৷ তারা তাদের পাপের জন্য অনুতপ্ত হয় নি, উপরন্তু, নিজেদের ধার্মিক বলে ঘোষণা দিয়েছে, কেননা তাদের কাছে রয়েছে শরীয়ত যা মুসা নবীর মাধ্যমে দত্ত হয়েছে, তাই তারা অন্য সকল লোকদের সমাজচু্যত বলে ঘৃণা করেছে৷

তাদের হৃদয় যখন বড়ই কঠিন তখন পাপ থেকে মন পরিবর্তনের জন্য তরীকাবন্দি দাতা ইয়াহিয়া তাদের মধ্যে প্রচার করলেন মসিহের আগমণি বার্তা, তার পথ প্রস্তুত করার জন্য৷ আর তার হাতে তাদের পবিত্র গোসল দেবার জন্য তিনি সুযোগ করে দিলেন৷ তার মারফত তারা জানতে পারলেন মসিহ হলেন খোদার মেষ শিশু, আর বুঝতে পারলেন যে, মসিহ এসে তাদের পাকরূহের দ্বারা তরীকাবন্দি দিবেন, একটি রুহানি সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে, আর যারাই প্রান্তরে ঘোষণাকারীর হাতে তরীকাবন্দি নিলেন তারা সকলে মসিহের ওপর বিশ্বাস করলেন৷ মসিহ কোনো আইন বিশেষজ্ঞদের ডাকেন নাই, না ডেকেছেন ধার্মিকদের অথবা উচ্চমাপের পন্ডিতদেরও ডাকেন নি তাকে অনুসরণ করার জন্য, তবে তিনি তাদেরই ডেকেছেন যারা নিজ নিজ পাপ স্বীকার করেছেন তরীকাবন্দি ইয়াহিয়ার কাছে আর তারাই তাঁর সাহাবি হিসেবে দায়িত্ব পেলেন, ফলে তারা পরিপূর্ণতা পেলেন পাকরূহে৷ উক্ত মনোনীত লোকদের রহস্য এটা ছিল না যে তারা জ্ঞানী ছিলেন, না ছিলেন ধ্বনি, না ছিল তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, না তারা ছিলেন মহান কিন্তু তারা তাদের পাপ স্বীকার করেছেন এবং আত্মায় ছিলেন ভগ্নচূর্ণ৷ যারা তাদের পাপ স্বীকার করে, ধীরে ধীরে তারা লাভ করে মসিহের নাজাত এবং তার সাথে অনন্ত জীবন৷

আইনানুগ অধিকার ইস্রায়েলের লোকজন উপভোগ করতো, তাদের মধ্যে খোদার উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ ইহুদিদের মধ্যে একটা নেতিবাচক প্রভাব কাজ করতো৷ তারা অহংকারী হয়ে ওঠলো, আর অন্যান্য জাতির ওপর শাসন-শোষণ করতে শুরু করলো, আর তারা নিজেদের ধার্মিক বলে বিবেচনা করতে শুরু করলো৷ তাই তাদের আর প্রয়োজন রইলো না অনুতাপের৷ তারা নিজেদের পাপের খবর আর জানলো না, আর যুগ যুগ ধরে খোদার বিরুদ্ধে, মসিহের রিবুদ্ধে এবং পূতপবিত্র রূহের বিরুদ্ধে নিজেদের মন, অর্থ ও অধিকারে তারা ধনবান হওয়া সত্ত্বেও রূহে তারা ছিল সম্পূর্ণ অসহায়৷

পৌল প্রথম জীবনে অর্থাত্‍ মসিহের ওপর তাঁর ইমান স্থাপনের পূর্বে তাদের মতো ধর্মান্ধ ও অহংকারী ছিলেন৷ তিনি মসিহের অনুসারীদের ওপর অত্যাচার করতেন, কাউকে কাউকে জোর করে উক্ত পথ থেকে ফিরিয়ে আনতেন, আর যারা মসিহের বিশ্বাসে দৃঢ় প্রত্যয়ী চিলেন তাদের হত্যাও করতেন৷ কিন্তু মহোজ্জ্বল নূরের প্রভায় দামেস্কের পথে ঈসা মসিহের সাথে সাক্ষাতের পর তার কল্পনা, গর্ব ও সকল স্বপ্ন খানখান হয়ে পড়ে, আন্তরিকভাবে তার সকল কৃত পাপ অপরাধের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন৷ খোদার অশেষ রহমতে আপন গর্ব সম্পূর্ণ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়ে, পাকরূহের দ্বারা নতুন জন্মের অভিজ্ঞতা আর মসিহের সাহাবি হবার সুযোগ লাভ করেন৷

প্রকৃত নাজাত কার মধ্য দিয়ে আসে পৌল বুঝতে পেরেছিলেন, ইব্রাহিমের বংশ থেকে জাত হবার কারণে আসে না, খত্‍না করানোর ফলে তা আসতে পারে না, তা মসিহের কাফফারা সাধনকারী আত্মকোরবানির ফলে হয়ে থাকে, আর পাকরূহের পূর্ণতা তখন লাভ হয়৷ ফলে মানুষ মসিহের রুহানি দেহে অন্তভর্ুক্ত হয়ে পড়ে, আর উক্ত পরিবারের সদস্য হয়ে যায়৷ ইব্রাহীমের বংশধরদের কাছে সুসমাচার প্রচারে ফলে পৌল বুঝতে পেরেছিলেন যে খোদার রাজ্য কখনোই ইস্রায়েলের রাষ্ট্রিয় ব্যবস্থার সাথে তুল্য হবার নয়৷ দুঃখের সাথে বলতে হয়, মসিহের রুহানি পরিবারের সদস্যগণ বর্তমানে ইস্রায়েল সরকারের হাতে দারুণভাবে নির্যাতিত হচ্ছে৷ পৌল কোনো পাথির্ব রাজনৈতিক রাষ্ট্রের বিষয় বর্ণনা দেন নি, কিন্তু তিনি মসিহের রাজ্যের কথা বলেছেন৷ যে রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হবে সুন্দর আচরণের মাধ্যমে, সত্যবাদিতার দ্বারা এবং জগতের সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত থাকবে সত্য, পবিত্রতা৷

প্রার্থনা: হে বেহেশতি পিতা, তোমার সাবধানবাণী ও শাস্তির হুশিয়ারী দেয়া সত্ত্বেও বিদ্রোহী অথচ তোমার মনোনীত সন্তানদের প্রতি ধৈর্য ধারণ করার জন্য ও নিজেকে মহিমান্বিত করার জন্য৷ আমাদের ও আমাদের লোকজন ক্ষমা করো, যদি আমরা তোমার মহান প্রেম বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততার সাথে আদান-প্রদান করে না থাকি, আর ইব্রাহীমের লোকজন সুরক্ষা করো, তাদের মন নবীন করো আর তাদের হৃদয় জীবন্ত মসিহের দ্বারা পূতপবিত্র করো৷

প্রশ্ন:

৫৫. পৌল কতটা প্রতিজ্ঞার বর্ণনা দিয়েছেন যা খোদা পুরাতন ব্যবস্থানুসারে তাঁর লোকদের সাথে প্রতিজ্ঞা করেছেন
৫৬. কোন কারণে খোদার রহমত অধিকাংশ মনোনীত লোকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে, কারা এক বিচার থেকে অন্য বিচারের সম্মুখীন হয়েছে?

www.Waters-of-Life.net

Page last modified on February 25, 2014, at 01:30 PM | powered by PmWiki (pmwiki-2.3.3)