Home
Links
Bible Versions
Contact
About us
Impressum
Site Map


WoL AUDIO
WoL CHILDREN


Bible Treasures
Doctrines of Bible
Key Bible Verses


Afrikaans
አማርኛ
عربي
Azərbaycanca
Bahasa Indones.
Basa Jawa
Basa Sunda
Baoulé
বাংলা
Български
Cebuano
Dagbani
Dan
Dioula
Deutsch
Ελληνικά
English
Ewe
Español
فارسی
Français
Gjuha shqipe
հայերեն
한국어
Hausa/هَوُسَا
עברית
हिन्दी
Igbo
ქართული
Kirundi
Kiswahili
Кыргызча
Lingála
മലയാളം
Mëranaw
မြန်မာဘာသာ
नेपाली
日本語
O‘zbek
Peul
Polski
Português
Русский
Srpski/Српски
Soomaaliga
தமிழ்
తెలుగు
ไทย
Tiếng Việt
Türkçe
Twi
Українська
اردو
Uyghur/ئۇيغۇرچه
Wolof
ייִדיש
Yorùbá
中文


ગુજરાતી
Latina
Magyar
Norsk

Home -- Bengali -- The Ten Commandments -- 08 Sixth Commandment: Do Not Murder
This page in: -- Afrikaans -- Arabic -- Armenian -- Azeri -- Baoule? -- BENGALI -- Bulgarian -- Cebuano -- Chinese -- English -- Farsi? -- Finnish? -- French -- German -- Gujarati -- Hebrew -- Hindi -- Hungarian? -- Indonesian -- Kiswahili -- Malayalam? -- Norwegian -- Polish -- Russian -- Serbian -- Spanish -- Tamil -- Turkish -- Twi -- Ukrainian? -- Urdu? -- Uzbek -- Yiddish -- Yoruba
ব্যাখ্যা ৬: দশ আজ্ঞা - মানুষকে অপরাধের কবল থেকে রক্ষা করার প্রতিরক্ষা কবজ সম দেয়াল৷ প্রথম খন্ড
সুসমাচারের আলোকে হিজরত পুস্তকের ২০ অধ্যায়ে বর্ণীত দশ শরীয়তের ব্যাখ্যা

০৮ - ষষ্ঠ আজ্ঞাঃ খুন করো না



হিযরত ২০:১৩
তোমরা খুন করবে না


০৮.১ - অবিশ্বাস্য হলেও সত্য

প্রথম জন্মপ্রাপ্ত মহিলার সন্তান, পিতা মাতার বড়ই আদুরে পুত্র হলো ভ্রাতৃঘাতি৷ বিশ্বাসঘাতকতার এই গোপন অপরাধের কথা কিতাবুল মোকাদ্দস বিশ্লেষণ করেছে যে মন্দতা মানুষের হৃদয়ে গ্রোথিত হয়েছে সেই আদি লগ্নে৷ উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া এই জিঘাংসা প্রত্যেক ব্যক্তি হৃদয়ে বহন করে চলছে৷ আদম (আ.) থেকে শুরু করে প্রত্যেক ব্যক্তি খোদা-বিচ্ছিন্ন জীবন নিজ নিজ একগুয়েমি ও চাওয়া পাওয়ার মধ্যে যাপন করে চলছে৷ অবচেতন মনে সে নিজেকে অন্যের অনুসরণ যোগ্য কেন্দ্রীয় ব্যক্তি হিসেবে কল্পনা করে আসছে৷ কেউ যদি শক্তিধর, জ্ঞানি, অধিক ধার্মিক, খুবই সুন্দর বলে মনে করে তবে উক্ত ব্যক্তি ঈর্ষা কাতর হয়ে পড়ে৷ প্রত্যেকে নিজেকে দেবতা ভাবে এবং কামনা করে সকলে তাকে প্রশংসা করবে এমনকি পূজা দিবে৷ কিন্তু অহংবোধ এবং স্বধার্মিকতা মানুষের জন্য ধ্বংসকারি বৈশিষ্ট মাত্র৷

মসিহ শয়তানকে 'শুরু থেকেই খুনি' বলে আখ্যায়িত করেছেন, কেননা খোদার সাথে প্রকৃত ও প্রাণবন্ত সহভাগিতা থেকে সে মানুষকে অপশারিত করে দিয়েছে৷ তখন থেকে 'মৃতু্য' মানুষকে করে চলছে নিয়ন্ত্রণ, কেননা 'পাপের বেতন হলো মৃতু্য'৷ খোদা তাঁর রহমত, প্রেম ও ন্যায়বিচারের কারণে মানুষের মুক্তির জন্য এক বিশেষ ব্যবস্থা স্থাপন করেছেন যাতে তারা খোদার দিকে ফিরতে পারে৷ নাজাত লাভের জন্য যে কেউ এ সুযোগ আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে সে মনের দিক দিয়ে নবীন হয়ে ওঠে, এবং খোদাকে তার জীবনের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ত্বে পরিণত করে, ঠিক তখনই তার লাভ হয় নবজীবন৷ ফলে তার জীবন হয়ে ওঠে অর্থবহ ও যথাযথ৷

হত্যা করার জন্য মানুষের অনেকগুলো লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে৷ মসিহ প্রকাশ করেছেন, প্রথমে খারাপ চিন্তা মানুষের হৃদয়ে থেকে উত্‍সারিত হয় হত্যাযজ্ঞের জন্য (মথি ১৫:১৯)৷ খোদা তাঁর পবিত্রতার স্বার্থে মানুষের খারাপ চিন্তা ও লক্ষ্য নিষেধ করে আসছেন যা তিনি প্রকাশ করেছেন, 'তোমরা খুন করো না' তাই সর্বপ্রকার হত্যা এমনকি আত্মহত্যা পর্যন্ত খোদার ইচ্ছার বিরুদ্ধে, এবং মনে করা হয় খোদার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ ছাড়া আর কিছুই নয়৷ অধিকন্তু, কেউ যদি কারো সাথে দুর্ব্যবহার করে, ক্ষুধাতকে খাদ্য পরিবেশন না করে, করে না সাবধান তাদের যাদের ওপর আগত ধ্বংস নেমে আসতে দেখে, তাকেও খুনির পর্যায়ে ধরা হবে৷ কেউ যদি কারো শরীরে আঘাত করে, তার খাবারে বিষপ্রয়োগ করে, অথবা কাউকে প্ররোচনা দেয় তাকে হত্যা করার জন্য, মহাবিচারের সময় তাকে খুনিদের কাতারে দাঁড় করানো হবে৷ এমনকি কেউ যদি কারো ক্ষতি করে বসে, আর উক্ত ক্ষতির কারণে যদি তার (ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি) আয়ুষ্কাল কমে যায়, তবে কিতাবুল মোকাদ্দসের শিক্ষার আলোকে সেও খুনির পর্যায়ে পড়তে বাধ্য৷ (রোমিয় ১৩:১-৮) খোদা আমাদের ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন আমাদের সহগভাগিদের প্রতি যা এড়িয়ে চলার নয়, যেমন কাবিল এড়িয়ে যাবার কথা বলেছিল, 'আমি কি আমার ভাইয়ের রক্ষক?'


০৮.২ - শাস্তি ও প্রতিশোধ

নবীদের যুগে মৃতু্যদন্ড চালু হয়েছিল প্রত্যেক ঘাতক ও গুপ্তঘাতকদের নিরোধকল্পে, যাতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পায়৷ (যাত্রা পুস্তক ২১:১২, ১৪, ১৮)৷ গোষ্ঠিভিত্তিক জীবন যাপন করতো তখনকার লোকজন, আর এ আইনটি তাদের জন্য জীবন বীমার কাজ করতো৷ রক্তক্ষয়ী গোষ্ঠিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ভয়ে এড়িয়ে যাবার জন্য এ আইনটি ছিল তাদের রক্ষাকবজ৷ আইনে ছিল, 'চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত, যা প্রবর্তণ করা হয়েছিল হত্যাযজ্ঞের প্রবণতা তুলনামূলকভাবে কমানোর জন্য৷ তবে গোষ্ঠি প্রধানকে হত্যা করা হলে শাস্তি বেড়ে যেতো বহুগুণে৷ লেমক তার ঘাতকদের ৭৭ জন হত্যা করার দাবি করেছিল (পয়দায়েশ ৪:২৩-২৪)৷ কোনো কোনো গোষ্ঠি এ প্রথাটি আজ পর্যন্ত চালু রেখেছে তাদের নেতাদের খুনের ক্ষেত্রে৷

সেমিটিয় সংস্কৃতিতে নর হত্যা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ, আর রক্ত না ঝরানো পর্যন্ত নিবৃত করা চলবে না অর্থাত্‍ রক্ত না ঝরিয়ে ক্ষমা করা হবে অবিচার৷ অন্যের বিরুদ্ধে অপরাধ বোধের প্রতিশোধ নেয়ার এটা একটি সুযোগ মাত্র৷ প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত শত্রুর প্রতি ঘৃণাভাব চলতে থাকে সম্পৃক্ত৷ মসিহিদের ক্ষেত্রে তেমন চিন্তা সম্পূর্ণ অজানা, তা প্রশ্চ্যে বা পাশ্চাত্তে, যে স্থানেই মসিহিগণ থাক না কেন৷ প্রত্যেক গুনাহগার বা খুনির গুনাহে প্রায়শ্চিত্ত পরিশোধ করণার্থে রক্ত ক্ষরণের পর থেকে আমাদের ধ্যান ধারণা ও কৃষ্টিতে এসেছে আমূল পরিবর্তন৷

খুনিরা অপরাধের ভারে শোকার্ত ও নু্যব্জ হয়ে থাকে৷ যাদের সে খুন করেছে তাদের আত্মা তার (খুনির) চিন্তা জগত ও স্বপ্নের জগতে সর্বদা তাড়না করতে থাকে৷ কোনো এক রাতে একজন গুপ্তঘাতক স্বপ্নে দেখতে পেল, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে যাদেরকে দূর থেকে গুলি করে সে হত্যা করেছে তাদের মাথার খুলি তার দিকে গড়াতে গড়াতে আসছে, আর তাদের শূন্য চক্ষুকোটর যেন তাকেই লক্ষ্য করে চলছে৷ কোনো খুনি যদি নিজ মুসলিম গ্রামে ফিরে যায় আর যাকে খুন করা হয়েছে তার যোগ্য পুত্র বা বংশের উত্তরাধিকার কেউ বেঁচে থাকে, তবে সে বুঝতে পারে, হত ব্যক্তির কেউ না কেউ তাকে (ঘাতককে) হত্যা করবে৷ খুনের কোনো মূল্য পরিশোধ হয় না৷ লোকদের ভয় দেখিয়ে বা হুমকি দিয়ে হত্যার কাজ বন্ধ করা সম্ভব নয়৷ মানুষের হৃদয় থেকে সর্বপ্রকার মন্দ চিন্তার অপসারণ করতে হবে এবং পরিবর্তে ভালো চিন্তার পূণর্বাসন করতে হবে৷ মসিহ মানুষের হৃদয়ের পরিকল্পনা জানেন, সে কারনে পরোক্ষভাবে প্রত্যেককে মৃতু্যদন্ডে দান্ডিত করেছেন, তিনি বলেছেন, কেউই ভাল নয়, কেবলমাত্র একজনই ভালো৷ আর তিনি হলেন খোদা 'ঈসা মসিহ তাকে বললেন, ভালোর বিষয়ে কেন আমাকে জিজ্ঞাসা করছ? ভালো মাত্র একজনই আছেন৷ যদি তুমি অনন্ত জীবন পেতে চাও তবে তাঁর সব হুকুম পালন কর৷' (মথি ১৯:১৭, মার্ক ১০:১৮, লুক ১৮:১৯)৷ তিনি আমাদের পাপের প্রাশ্চিত্ত ঘৃণ্য খুনি হিসেবে বহন করেছেন, বিনিময়ে তার কোমল হৃদয় আমাদের হৃদয়ে করেছেন পুনঃস্থাপন; ফলে আমাদের হৃদয় নতুন হয়ে দেখা দিয়েছে ও পরিবর্তন ঘটেছে খুনের চিন্তা৷ মসিহ আমাদের এক নতুন রূহ দান করেন, ভীতুদের গড়ে তোলে সাহসি ভক্ত হিসেবে, তাঁর আজ্ঞা পালন এবং শত্রুদের মহব্বত করার মনোবল নিয়ে তারা তৈরি হয়৷


০৮.৩ - হত্যা ও পুনর্মিলনের স্বপক্ষে মসিহিয়াতে প্রকৃত অবস্থান

পর্বতে দত্ত উপদেশে মসিহ শিক্ষা দিয়েছেন, দৈহিকভাবে খুন করাটাই কেবল অপরাধ নয়, দূর্ণাম রটনা করাটাও হত্যার পর্যায়ে পড়ে৷ বিষের মতো দীর্ঘ সময়ের প্রভাব ঘটতে থাকে ব্যক্তির মনে৷ যে কোনো ধরণের দুর্ণাম, ঘৃণ্যমিথ্যাচার, উদ্দেশ্যপূর্ণ ভীতিপ্রদর্শণ, তিক্ত বাকবিতন্ডা, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিশাপ, বিশ্বাস ভঙ্গ অথবা তিরষ্কার, রুহানিভাবে মারাত্মক ক্ষতিকারক৷ এগুলো প্রথমে বক্তার হৃদয় বিষিয়ে তোলে, তার পর যাকে উদ্দেশ্য করে ছোঁড়া হয় তার মনকেও বিষিয়ে তোলে৷ মসিহ বলেছেন, বিনা কারণে যে কেহ ভাইয়ের ওপর ক্রুদ্ধ হয় সেই বিচারের ভয়াবহ দন্ডের দায়ে পড়িবে৷ আর যে কেহ তার ভাইকে বলবে, 'অবোধ!' তাকেই মহাসভার সম্মুখে দাঁড়াতে হবে৷ কিন্তু যে কেউ বলে, 'হে নির্বোধ'!' সেও দোযখের আগুনের দায়ে পড়িবে (মথি ৫:২২)৷ এ সকল বর্ণনার মাধ্যমে মসিহ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, আমরা সকলেই মন্দ হৃদয়ের অধিকারি এবং খুনের দন্ডে দন্ডিত হবার যোগ্য৷

আমাদের তওবা বা অনুতপ্ত হওয়া এবং স্বীকার করা প্রয়োজন যে অন্তরে খুন বা জিঘাংসার মনোভাব নিয়ে আমরা চলছি৷ ক্রোধ, হিংসা, ঘৃণ্য আচরণে সংশ্লিষ্ট থাকা, প্রতিশোধের মনোভাব, হিংস্রতা ও পাশবিকতা এমন প্রবণতা যা মারাত্মক ও প্রচণ্ডভাবে আঘাত করে, বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রেও বিরুপ৷ ইউহোন্না বলেছেন, 'যে কেহ ভাইকে ঘৃণা করে, সে খুনি' (১ইউহোন্না ৩:১৫)৷ আন্তরিকতার সাথে আমাদের নিজেদের পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন, আমাদরে হৃদয়ে ভাইয়ের প্রতি কোনো ঘৃণা জমে আছে কিনা, আর যদি তা থেকে থাকে তবে খোদার কাছে অনুরোধ করতে হবে তা ধুয়ে ছাপ করে দেবার জন্য ও উক্ত প্রবণতা হৃদয় থেকে সম্পূর্ণভাবে দূর করার জন্য৷ নতুবা এ ধরণের মন্দ চিন্তা হৃদয়ের মধ্যে প্রসারিত হয়ে আমাদের অনৈতিক করে তুলবে৷ মসিহের প্রত্যাশা হলো, যারাই প্রভুর প্রার্থনা আওড়াতে থাকে তারা সকলেই যেন প্রত্যেককে ক্ষমা করেন যেমন পিতা আমাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ ও পাপ ক্ষমা করেছেন৷ খোদা চাচ্ছেন ক্ষমা করতে৷ আমাদের ক্ষমা করার ইচ্ছা, বিজয় লাভে আমাদের সাহায্য করে এবং ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত খোদার কাছে সাহায্য কামনা, ও শত্রুর ওপর বিজয় লাভে সাহায্য করে৷ আপনি হয়তো আপনার শত্রুদের ক্ষমা করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন, তথাপি তারা কৃত অপরাধ ভুলতে পারছেন না, সাবধান হোন! এমন ক্ষেত্রে প্রভুর কাছে প্রার্থনা রাখতে হবে, আমাদের সকল পাপ ক্ষমা করে দেয়ার জন্য৷ অথবা আমরা বলতে পারি 'আমার বিরুদ্ধে ঘটানো সকল ক্ষতিকারক কাজ যারা করেছে তাদের ভুলে যেতে বা মাফ করতে পারি তবে তাদের আর কখনো দেখতে চাই না!' আপনি খোদার সম্মুখে হাজির হতে চান কিন্তু কখনোই তাকে দেখতেও চান না অথবা মোলাকাত করতেও চান না? আপনি আপনার শত্রুদের সাথে যে আচরণ করেন সে একই প্রকারের আচরণ আপনার প্রতি খোদা করুক তা কি আপনি প্রত্যাশা করেন না?

মসিহ আমাদের কেবল একটি পরামর্শ দিয়েছেন, শান্তি অর্জনের জন্য, আর তা হলো 'কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের শত্রুদেরও মহব্বত কোরো৷ যারা তোমাদের প্রতি জুলুম করে তাদের জন্য মুনাজাত কোরো, যেন লোকে দেখতে পায় তোমরা সত্যিই তোমাদের বেহেশতি পিতার সন্তান হয়েছে৷ তিনি তো ভালো-মন্দ সকলের ওপরে তাঁর সূর্য উঠান এবং সত্‍ ও অসত্‍ লোকদের ওপরে বৃষ্টি দেন৷' (মথি ৫:৪৪-৪৫)৷ খোদার রুহানি ক্ষমতা ব্যতিরেকে আমরা আমাদের অন্তনির্হিত ঘৃণার ওপর জয় লাভ করতে পারি না, তাঁকেই ঐশি প্রেমের পরশে ও উপস্থিতিতে আমাদের ভগ্নান্তকরণ বেধে দিতে হবে৷ তাই মসিহ দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছেন, সাবধান করেছেন, 'কিন্তু তোমরা যদি অন্যদের দোষ মাফ না কর তবে তোমাদের পিতা তোমাদেরও মাফ করবেন না' (মথি ৬:১৫)৷

যেক্ষেত্রে প্রত্যেক পাপীর শাস্তি পাওয়া প্রয়োজন, সে ক্ষেত্রে মসিহি সমপ্রদায় তাদের শত্রুদের কেন নিরষ্কুশভাবে ক্ষমা করেছেন এবং সকল ক্ষতির কথা ভুলে যায়? এসকল অবিচার খোদার কাছে ফরিয়াদ জানাবে না? অবশ্যই সত্য! খোদা পাপের বিচার না করে ছেড়ে দিতে পারেন না, যেমন লেখা আছে, 'রক্তক্ষরণ ব্যতিত পাপের ক্ষমা নেই৷' এ কারণেই মসিহ আমাদের পাপভার নিজস্কন্ধে বহন করে শাস্তি ভোগ করলেন আমাদের পক্ষে৷ পাককালামে উল্লেখ আছে, 'ঈসা মসিহ আমাদের ব্যক্তিগত পাপের দায় তুলে নিয়েছেন এবং যতপ্রকার বিদ্রুাকারী ও খুনি রয়েছে তাদের পাপগুলোর জন্যও তিনি প্রাশ্চিত্ত পরিশোধ করেছেন৷ সে কারণেই আমাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ব্যতিক্রমহীনভাবে আমাদের শত্রুদের ক্ষমা করে দেবার জন্য৷ আমাদের আর কোনো অধিকার বা কর্তব্য বাকী নেই বিচার চাওয়ার বা পাল্টা দুর্ব্যবহার করার৷ তাঁর মৃতু্য ও নির্যাতন ভোগের মাধ্যমে আমাদের বিকল্প তিনি ঐশি বিচারের সকল দাবি দাওয়ার পূর্ণতা দিয়েছেন৷ তিনি হলেন আমাদের শান্তি৷ যে কেউ অদ্যাবধি তার সাথে করা দুর্ব্যবহারের বিচার চায় অথবা প্রতিশোধ নিতে চায় তবে তার তেমন আচরণ মসিহের অবমাননার সামিল হবে৷ কেবল মহব্বতই হলো শরিয়তের পরিপূর্ণতা৷ মহব্বত থেকে দূরে সরে থাকার অর্থ শরীয়ত ও বিচারাজ্ঞা ও তার ভয়াবহতার মধ্যে জীবন যাপন করা৷ মসিহ এককভাবে আমাদের মধ্যে নতুন মন ও ইচ্ছাশক্তি সৃষ্টি করে দিয়েছেন, ফলে আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে অন্যদের ক্ষমা করা যেমন খোদা নিরুষ্কুশভাবে আমাদের ক্ষমা করেন৷


০৮.৪ - তরবারীর শক্তিতে প্রতিষ্ঠা করা ধর্ম

যে কেউ দেখতে পান রহমতের মাধ্যমে মসিহ গুনাহগারদের ক্ষমা করেন, সে ক্ষেত্রে ব্যক্তি আশ্চর্য হয়ে ওঠে ইসলামের মধ্যে রক্তক্ষয়ী প্রতিশোধের প্রচলন দেখে৷ জেহাদে স্বপ্রণোদিত হয়ে মানুষ খুন করা নাকি খোদার হুকুম৷ ধর্মের খাতিরে ইসলাম খুন-খারাবি সমর্থন করে আর তা অবশ্যই করণীয় বা ফরজ করে দিয়েছে প্রত্যেকটি মুসলমানের ওপর৷ কোরানে মুহাম্মদ লিখেছেন, 'তাদের ধর এবং হত্যা করো যেখানেই তোমরা তাদের দেখতে পাও৷' এবং তাদের মধ্য থেকে কাউকে বন্ধু বা সাহায্যকারী হিসেবে গ্রহণ করো না' (সুরাহ আন নিসা ৪:৮৯, ৯১ অথবা সুরাহ বাকারা ২:১৯১)৷ মসিহের রূহ এ সকল বাক্যের মাধ্যমে কথা বলেন না, কিন্তু খুনির আত্মা প্রথম থেকেই এ ধরণের কথা বলে আসছে৷

মুহম্মদ তার নিজের শত্রুদের একের পর এক হত্যা করেছেন, এবং ব্যক্তিগতভাবে ২৭টি যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন৷ বাস্তবে খন্দকের যুদ্ধের সময় মদিনার ইহুদিদের দ্বারা অগণিত কবর খুড়িয়েছেন, পরবতর্ী সময় বিশ্বাসঘাতকতার অপবাদে তাদের হত্যা করেছেন৷

বদরের যুদ্ধের পরবতর্ী সময় থেকে, মুসলমানগণ তাদের শত্রুদের যখন হত্যা করেছে, তাদের নির্দোষ প্রতিপন্ন করার জন্য মুহাম্মদ বলেছেন, 'তোমরা তাদের হত্যা করো নি বরং আল্লাহ করেছেন' (সুরাহ আল আনফাল ৮:১৭)৷ সংযত মুসলমানগণ উক্ত আয়াতের তেমন ব্যাখ্যা মেনে নেন না, কিন্তু ধমর্ীয় সন্ত্রাসীরাই নিজেদের সঠিক অবস্থানে রাখার জন্য এ ব্যাখ্যা সমর্থন করে৷ জেহাদে যতলোক তারা হত্যা করেছে ঐ সকল হত্যাযজ্ঞের সমর্থনে মুহাম্মদ একটা প্রত্যাদেশ পেয়েছে বলে দাবি করেছেন৷ এছাড়া যে কেউ অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে আহুত যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে গিয়ে হত হয় তারা সোজা সুজি বেহেশতে চলে যাবে, যেখানে রয়েছে অবর্ণনীয় মাংসিক সুখভোগের আয়োজন, আর তা কেবল খুনিদের অপেক্ষাতে প্রস্তুত৷ অন্যদিকে কোনো মুসলমান ইচ্ছা করে অন্য মুসলমানকে হত্যা করতে পারে না, কেননা তেমন হত্যা ক্ষমার অযোগ্য পাপ যা হলো শরীয়তে মন্তব্য৷ কিন্তু পৌত্তলিক বা অমুসলিমদের এমন কোনো হেফাজত বা রক্ষাকবজ দেয়া হয় নি৷ প্রাকৃতিক পূজা এবং জীব-জানোয়ারের পূজারীদের হত্যা করায় ভালো কাজ বলে গণ্য হয়, ফলে ঘাতক বেহেশতি পুরষ্কারে হবে ভূষিত৷

ইসলামিক শরিয়তে ন্যায় বিচারের মতবাদ দেখে আশ্চর্য লাগে৷ সর্বোচ্চ মূল্যের রক্ত ক্ষরিত হতে হবে, 'আল দাইয়া' প্রতিশোধের দ্বারা পরিবর্তন করা সম্ভব৷ এমনকি গাড়িতে দুর্ঘটনা জনিত মৃতু্য বা পথে মৃতু্যতেও 'দাঁতের বদলা দাঁত', 'চোখের বদলে চোখ' বেআইন বা আইনানুগভাবে প্রযোজ্য হতে পারে ঐ সকল দেশে যেখানে সরকারীভাবে শরীয়তের আইন থাকে কার্যকর৷ মিমাংসার সুযোগ খুবই কম থাকে, কেননা ইসলামিক ন্যায়বিচার নিজস্ব গতিতে চলে থাকে, নিজস্ব প্রায়শ্চিত্ত ব্যবস্থায় চলে, যা হলো সত্য ও ন্যায় পরিচালিত হয় রহমত ব্যতিরেকে৷ মুসলমানদের জন্য গুনাহগারদের বিকল্প ব্যবস্থা, ঐশি মেষের কোরবানির মাধ্যমে অনন্ত মুক্তির উপায় দেয়া নেই৷ তারা জানে না যে খোদার রহমত সত্য ও ন্যায়বিচারের দাবি পরিপূর্ণ করেছে৷ তাই তারা বাধ্য, রহমত ব্যতিত তাদের শরীয়ত পালন করে চলতেই হবে৷


০৮.৫ - মসিহের পর্বতেদত্ত খোত্‍বা জেহাদের প্রয়োজনীয়তা খন্ডন

নবীদের আমলে জীবন যাপন করা হতো আইনের প্রয়োগের ওপর ভিত্তি করে৷ মুসা নবীর কাছে প্রদত্ত শরীয়ত কেবল নাগরিক অধিকারের ওপরই কার্যকর ছিল না বরং তা জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে তথা ধমর্ীয় ক্ষেত্রে হতো প্রযোজ্য৷ তাই ধমর্ীয় নেতাগণ আইনের শাসনের ওপর ভিত্তি করে আইন অনুযায়ী অপরাধীদের শাস্তি বিধান করতো৷ নবীদের জামানায় ধর্ম যুদ্ধ একটি অপরিহার্য বিষয় ছিল. যেমন ইসলামিক ধ্যান ধারণা মোতাবেক বর্তমানে শরীয়তের প্রয়োগ করা হয়৷ কিন্তু ঈসা মসিহ সদাসর্বদা প্রচার করে আসছেন, শত্রুদের মহব্বত করতে, আর তা বাস্তবায়ন করার জন্য তাগিদ দিয়ে আসছেন, সর্বপ্রকার ধর্মযুদ্ধ এ প্রচারের ফলে হারিয়ে ফেলছে ঐশি প্রাধিকার৷ ধর্মযুদ্ধ (ত্রুশেড) হলো একটা পাপ, আর এর ফলে ধর্ম রাজনীতিতে মিশ্রিত হয়ে একধাপ পিছিয়ে পড়লো, ধর্মনীতি ও রাজনীতির ক্ষেত্রে৷ মসিহ তাঁর সাহাবিদের তরবারী-নির্ভর করে সুসমাচার প্রচারে দিকে দিকে পাঠান নাই, বিপরীত পক্ষে তিনি পিতরকে বললেন, 'তখন ঈসা মসিহ তাঁকে বললেন, তোমর ছোরা খাপে রাখ৷ ছোরা যারা ধরে তারা ছোরার আঘাতেই মরে৷' (মথি ২৬:৫২)৷ মসিহ স্বেচ্ছায় সলিব বহন করে মৃতু্য বরণ করলেন, যদিও তিনি ছিলেন নিরপরাধ, তিনি কোনো মতেই হাজার হাজার ফেরেশতাদের ডেকে তাঁর শত্রুদের হত্যা বিনাশ করতে রাজী ছিলেন না৷ মসিহের রূহ মোহাম্মদের রূহ থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত চরিত্রের৷ মসিহ পাহাড়ে যে খুত্‍বা পাঠ করেছেন বা উপদেশ দিয়েছেন, তা হলো, 'তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছে, চোখের বদলে চোখ এবং দাঁতের বদলে দাঁত৷ কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের সঙ্গে যে কেউ খারাপ ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে কিছুই করো না; বরং যে কেউ তোমার ডান গালে চড় মারে তাকে অন্য গালেও চড় মারতে দিয়ো৷' (মথি ৫:৩৮, ৩৯)৷ তাই মসিহ পুরাতন যুগের অকার্যকর ব্যবস্থা অর্থাত্‍ স্বধার্মিকতা দিয়ে পার পাওয়া জয় করে, প্রবর্তন করলেন এ রহমতের ব্যবস্থা৷ শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল দেহে সলিব বহন অসম্ভব হয়ে পড়েছিল, কিন্তু রুহানি শক্তি প্রেম বিশ্বাস এবং প্রত্যাশার জোরে তিনি শয়তানের সকল প্রচেষ্টা ভেঙ্গে দিলেন, আর পূর্ণতা দিলেন শরীয়তের সকল দাবি দাওয়ার ও আইনের চাহিদা পালন করে৷

মসিহিদের জটিল প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়৷ আমি যদি সেনাবাহিনীতে যোগ দেই, আর অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র ব্যবহার শিখতে হয় এবং পরিশেষে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে হয় তখন আমার ভূমিকা কি হবে? মসিহিদের সংখ্যাঘরিষ্টদের মধ্যে আমার দায়িত্ব কি হবে, আর অন্য দেশে যেখানে মসিহিগণ সংখ্যালঘু তেমন ক্ষেত্রেই বা আমার কি দায়িত্ব হবে? বিভিন্ন প্রশ্নের বিভিন্ন জবাব খুঁজে পাই ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে এ সকল জটিল প্রশ্নের৷ মসিহের স্বার্থরক্ষার্থে কোনো কোনো ঈমানদার ভ্রাতা জেলেও যেতে প্রস্তুত, এমনকি শহীদ হতেও রাজী ছিলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার কারণে৷ অন্যরা তাদের ওপর অধিকর্তাদের বাধ্য ছিলেন খোদার ইচ্ছা অনুযায়ী৷ তারা মনে করতো খুনের বিরুদ্ধে যে আইন প্রয়োগ হয়েছে তা ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য৷ তাদের দাবি হলো, ব্যক্তিগতভাবে তারা কাওকে ঘৃণা করতো না তবে দেশ রক্ষার জন্য তারা প্রস্তুত ছিলেন৷ তারা তাদের সাধ্যমতো তাদের শত্রুদের প্রেম করতে চেষ্টা করতেন, আর সরকারের প্রতিও বিশ্বস্ত থাকতেন৷ তাদের প্রত্যাশা ছিল খোদার রাজ্যের প্রতিষ্ঠার বিসয়ে যা হবে অনন্তকালীন রুহানি রাজ্য, তবে তারা বর্তমান রাজ্যও অপিরহার্য হিসেবে স্বীকার করতেন৷ বর্তমান ব্যবস্থায় যতকিছু সমস্যার মোকাবিলা তারা করতো, সাথে সাথে আন্তরিকভাবে খোদার নির্দেশনা খুঁজে নিতেন৷ খোদাই সঠিক জবাব দিতেন, তিনিই তা জানেন৷ তবে তেমন ক্ষেত্রে বিশ্বাসী ভাই-বোনের সজাগ থাকতে হবে তাদের বিষয়ে যারা বিপরীত মন্ত্রণা নিয়ে চলে৷ পরিবার ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য যেমন তেমন শত্রুকে মহব্বত করাও ঐশি হুকুম৷


০৮.৬ - বর্তমানকার ঘাতক

পর্বতেদত্ত উপদেশে নতুন চুক্তি বা ব্যবস্থায় যে রাজ্যের বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে তা বর্তমানকার প্রেক্ষাপটে কেবল ব্যক্তিগত পর্যায়ে প্রযুক্ত হতে পারে৷ মনে হচ্ছে রাজনৈতিকভাবে এ নিয়মগুলো প্রয়োগ করার সময় ও ব্যবস্থা এখানো হয়ে ওঠে নি৷ প্রচণ্ডভাবে কেউ যখন শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ খুঁজে নেয়, তাতে বোঝা যায় তিনি পর্বতে দত্ত উপদেশের ভুল ব্যাখ্যা করে বসেছে৷ যারা ম্যাকি মানবতাবাদী মতবাদের জন্য বিশ্বজুড়ে গর্ভপাত সমর্থন করে, তাদের মতোই এরাও হিস্রতার আশ্রয় খুঁজে৷ ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর অপরাধ এটা৷ লক্ষ্যকোটি জীবিত ভ্রুণ মায়ের গর্ভে হত্যা করা হচ্ছে৷ পিতা মাতা, তাদের বিবেকে বয়ে চলছে খুনি চেতনা৷ আমরা খুনিদের প্রজন্মে বসবাস করছি এবং আমরাও তাদের অংশ৷

পথে ঘাটে যাতায়াতের কালে লক্ষ লক্ষ লোক হত হচ্ছে দুর্ঘটনায়, যা আকস্মিক ঘটনা নয় অথবা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কারণে নয় বরং মাদকদ্রব্য সেবনে বেসামাল ও বেখায়াল হয়ে মাত্রারিক্ত গতিতে চালানোর ফলে ঘটে৷ আমরা যদি ৬ষ্ঠ আজ্ঞা পালন করতে সচেষ্ট হই তবে পথে ঘাটের দুর্ঘটনাগুলোকে মানব হত্যার সাথে জুড়ে দিতে পারি৷ তাই নিয়ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধের জন্য৷ খোদার প্রতিরক্ষা কামনা এবং তাঁর থেকে ধৈর্য্য নিয়ে বিনম্রভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রেখে আমাদের গাড়ি চালানো প্রয়োজন৷

পরিবেশ দুষণের রাজ্যে আমরা বাস করছি, যেখানে বায়ু দুষিত, পানি দুষিত, খাদ্য দ্রব্য বিষাক্ত৷ সম্ভবতঃ ঐশি বালাই হ্রাস করা সম্ভব যদি আমরা পরিবেশ উন্নত করতে পারি এবং খোদার কাছ থেকে জীবন পথের সঠিক দিক-নির্দেশনা চেয়ে নিতে পারি৷ এভাবে আমাদের বিশ্বাসটাকে ধ্বংসের কবল থেকে রক্ষা করতে পারি যাতে আমাদের কারণে তা বিনাশ না পায়৷

অতিরিক্ত ভোজন আত্মহননের একটি গুপ্তব্যবস্থা যাতে আমাদের বিলাসপূর্ণ সমাজে বহুজন ডুবে আছে, ফলে ধীরে ধীরে নিজেদের মৃতু্যর কোলে ঠেলে দিচ্ছে৷ অন্যেরা অবৈধ যৌনাচারে রয়েছে ডুবে, ফলে তারা ধ্বংস করে চলছে তাদের দেহ, মন ও আত্মা৷ যারা হিংসুটে ও স্বার্থপর তারা নিন্ম রক্তচাপে ভোগে, ভোগে একাকীত্তে, ফলে তাও তাদের দীর্ঘায়ু কমিয়ে দেয়৷ অবশ্য অতিরিক্ত শ্রম, বিশ্রামহীনতা এবং নিজের ক্ষতি নিজে করাও নিজেকে ধ্বংস করার সামিল৷ ঘুমে অনিয়ম ও অযত্ন অবহেলায় জীবন যাপন এক ধরনের পাপ যা ঘটে তার নিজের দেহের বিরুদ্ধে, কেননা আমরা খোদার সম্পদ, আমাদের দেহের মালিক আমরা নই৷

আত্মত্যাগের কথা মসিহ আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, আত্ম উন্নয়ন নয়, তিনি বলেছেন, 'যে কেউ তাঁর নিজের জন্য বেঁচে থাকতে চায় সে তার সত্যিকারের জীবন হারাবে; কিন্তু যে কেউ আমার জন্য তার প্রণ হারায় সে তার সত্যিকারের জীবন রক্ষা করবে' (মথি ১৬:২৫)৷ হযরত পৌল জোর দিয়ে বলেছেন, 'আল্লাহর রাজ্যে খাওয়া-দাওয়া বড় কথা নয়; বড় কথা হল, পাকরূহের মধ্য দিয়ে সত্‍ পথে চলা আর শান্তি ও আনন্দ' (রোমীয় ১৪:১৭)৷ রুহানি জীবনে নিয়মনীতি পালন করে চললে শারীরিক ভাবে উন্নতি ঘটে আর তার সাথে প্রতিষ্ঠা পায় হৃদয়-মনে শান্তি৷

৬ষ্ঠ আজ্ঞা সর্বপ্রকার খুনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং সেই সাথে সদাসর্বদা প্রেমের কাজ ও ভালো কাজ চালিয়ে যেতে উত্‍সাহ যুগিয়েছে৷ এ আজ্ঞা আমাদের হৃদয়ে সহমর্মীতা জাগ্রত করেছে তাদের প্রতি যারা দুর্দশাগ্রস্থ জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে৷ কোনো অভাবি লোকদের দেখেও না দেখার ভান করে পাশ কাঠিয়ে চলে যাওয়া উচিত্‍ হবে না৷ তার জন্য সময় দেয়া, এবং যতোটা সম্ভব তাকে সাহায্য করা প্রয়োজন৷ খোদার মূর্তমান মহব্বত ঈসা মসিহ শিক্ষা দিয়েছেন, কী করে ৬ষ্ঠ আজ্ঞা বাস্তবায়ন সম্ভব৷ যদি আমরা প্রজ্ঞা কামনা করি তবে তার পাকরূহ আমাদের প্রচুর পরিমানে তা দান করবেন৷ কেবলমাত্র তিনিই পারেন একজন খুনিকে মহব্বতেপূর্ণ সাহায্যকারী ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে, যারা পরবতর্ী সময়ে রুহানিভাবে বিপন্ন ব্যক্তিদের সাহায্য করতে সক্ষম হয়, সঠিকভাবে গড়ে ওঠে৷ সমস্ত চিকিত্‍সকের বড় চিকিত্‍সক মসিহের দিকে আমরা যখন নজর দেই ঠিক তখনই এমনটা ঘটে থাকে, যিনি নতুনভাবে গঠন দেন, পবিত্র করে তোলেন ভিতরে বাহিরে উভয় ক্ষেত্রে এবং খুনি চিন্তার পরিবর্তে সেবা দান ও গঠনের চিন্তা গড়ে ওঠে মহব্বতে৷

www.Waters-of-Life.net

Page last modified on September 25, 2013, at 08:15 AM | powered by PmWiki (pmwiki-2.3.3)