Home
Links
Bible Versions
Contact
About us
Impressum
Site Map


WoL AUDIO
WoL CHILDREN


Bible Treasures
Doctrines of Bible
Key Bible Verses


Afrikaans
አማርኛ
عربي
Azərbaycanca
Bahasa Indones.
Basa Jawa
Basa Sunda
Baoulé
বাংলা
Български
Cebuano
Dagbani
Dan
Dioula
Deutsch
Ελληνικά
English
Ewe
Español
فارسی
Français
Gjuha shqipe
հայերեն
한국어
Hausa/هَوُسَا
עברית
हिन्दी
Igbo
ქართული
Kirundi
Kiswahili
Кыргызча
Lingála
മലയാളം
Mëranaw
မြန်မာဘာသာ
नेपाली
日本語
O‘zbek
Peul
Polski
Português
Русский
Srpski/Српски
Soomaaliga
தமிழ்
తెలుగు
ไทย
Tiếng Việt
Türkçe
Twi
Українська
اردو
Uyghur/ئۇيغۇرچه
Wolof
ייִדיש
Yorùbá
中文


ગુજરાતી
Latina
Magyar
Norsk

Home -- Bengali -- The Ten Commandments -- 06 Fourth Commandment: Remember the Sabbath Day, to Keep it Holy
This page in: -- Afrikaans -- Arabic -- Armenian -- Azeri -- Baoule -- BENGALI -- Bulgarian -- Cebuano -- Chinese -- English -- Farsi -- Finnish? -- French -- German -- Gujarati -- Hebrew -- Hindi -- Hungarian? -- Indonesian -- Kiswahili -- Malayalam? -- Norwegian -- Polish -- Russian -- Serbian -- Spanish -- Tamil -- Turkish -- Twi -- Ukrainian? -- Urdu? -- Uzbek -- Yiddish -- Yoruba
ব্যাখ্যা ৬: দশ আজ্ঞা - মানুষকে অপরাধের কবল থেকে রক্ষা করার প্রতিরক্ষা কবজ সম দেয়াল৷ প্রথম খন্ড
সুসমাচারের আলোকে হিজরত পুস্তকের ২০ অধ্যায়ে বর্ণীত দশ শরীয়তের ব্যাখ্যা

০৬ - চতুর্থ আজ্ঞা: বিশ্রামবার পবিত্র রাখবে



হিজরত ২০:৮-১১
বিশ্রামবার পবিাত্র করে রাখবে এবং তা পালন করবে৷ সপ্তাহের ছয় দিন তোমরা পরিশ্রম করবে এবং তোমাদের সমস্ত কাজ করবে, কিন্তু সপ্তম দিনটা হল তোমাদের মাবুদ আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিশ্রামের দিন৷ সেই দিন তোমরা, তোমাদের ছেয়েমেয়ে, তোমাদের গোলাম ও বাঁদী, তোমাদের পশু বা তোমাদের শহর ও গ্রামে বাস কর অন্য জাতির লোক, মোট কথা, কারও কোনো কাজ করা চলবে না৷ মাবুদ ছয় দিনে আসমান, জমীন, সমুদ্র এবং সেগুলোর মধ্যেকার সব কিছু তৈরি করেছিলেন, কিন্তু সপ্তম দিনে সেই কাজ আর করেন নি৷ সেজন্য তিনি এই বিশ্রাম দিনটাকে দোয়া করে পবিত্র করেছিলেন৷


০৬.১ - ইহুদিদের কাছে বিশ্রামবার হলো খোদার সাথে স্থাপিত চুক্তি অন্যতম

প্রার্থনার জন্য নির্ধারিত সময়, নবীদের যুগে এ দিনটি অন্যান্য জাতিদের থেকে তাদের আলাদা করে রেখেছে৷ বর্তমান সময়েও নবীদের নিয়ম মোতাবেক যারা জীবন-যাপন করে তারা সপ্তাহের শেষ দিনটি বিশেষভাবে পালন করে, অন্যান্য দিন যে সকল কাজ কর্ম করে ঐ দিনে তা করে না৷ তারা আগুন জ্বালায় না এবং সুদীর্ঘ পথ ঐদিন পাড়ি দেয় না৷ পরিবর্তে তারা নতুন জামাকাপড় পরিধান করে এবং দিনটিকে উত্‍সব মুখর করে রাখে৷ বিশ্রামবার আনন্দ খুশি প্রকাশ করার দিন এবং ঐদিন তারা একত্রিত হয়ে এবাদত বন্দেগী করে কিতাব থেকে নির্দিষ্ট অংশ অধ্যায়ন করে এবং তা নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা করে, প্রশংসা গুণকীর্তন করে সময় কাটায়৷

প্রভুর দিনে ঈমানদার ভাই-বোনদের খোদার বিষয়ে আলাপ আলোচনা ও শিক্ষা বিস্তারে অধিক সময় ব্যয় করা প্রয়োজন৷ তাদের হৃদয় ও মন-মানসিকতা দিয়ে খোদার বিষয়ে গুরুত্বরোপ করা প্রয়োজন৷ কেননা তিনিই তো তাদের নির্মাতা, নাজাতদাতা, এবং স্বান্ত্বনাদানকারী৷ কিতাবুল মোকাদ্দাস পাঠের জন্য আমাদের একটা অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার, ভালো ধর্মোপদেশ শ্রবন করা, আর প্রার্থনা গানের মধ্যদিয়ে সভায় সমবেত হওয়া, নিজেদের ক্লান্তি দূর করা, অনাগত ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হওয়ার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা, এসবই প্রভুর দিনে আমাদের করা প্রয়োজন৷ তিনি এ দিনটিকে বিশেষভাবে বৈশিষ্ট মন্ডিত করে রেখেছেন, আলাদা করেছেন এবং আশির্বাদ করেছেন৷ প্রভুর দিনটি তাঁর সৃষ্টির জন্য বিশেষ আশির্বাদে কারণ৷

বিশ্রামবারকে পবিত্রকরণ বা আলাদাকরণ হল প্রভুকে আমরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি, যিনি বেহেশত ও দুনিয়া নির্মাণ করেছেন, যিনি তাঁর শক্তিশালী কালামের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন তারকারাজি, শুকনো ভূমি, বৃক্ষলতা ইত্যাদি৷ তিনি সৃষ্টি করেছেন জলের মাছ, আকাশের পাখী এবং সকল প্রকার ছো্ট বড় প্রাণী কুল৷ তাঁর সৃষ্টি চুড়ান্ত করেছেন তাঁর নিজের সুরতে মানুষ সৃষ্টি করে৷ এসকল সৃষ্টির মধ্যে প্রত্যকটি সৃষ্টি একটি ভিন্ন ভিন্ন কুদরতের প্রকাশ যা প্রজ্ঞা, শক্তি ও ঐক্যে বেধে রাখা হয়েছে৷ বিজ্ঞানের আবিষ্কার রহস্যের কেবলমাত্র কয়েকটি অংগ ও রূহের সারসত্ত্বা নিয়ে কিছুটা বুঝতে পেরেছে৷ খোদার সৃষ্টি কতই না সুমহান! তাঁর সৃষ্টি যখন এতই সুন্দর, তখন স্রষ্টা নিজে কতই না অধিক প্রজ্ঞাশীল ও সুন্দর হবেন৷ তার মহিমার বর্ণনা মানুষের সৃষ্ট ভাষা ব্যাখ্যা দিতে অপারগ, তার গৌরব ও সার্বভৌমত্ব ধরা ছোয়ার বাইরে৷ তার সকল সৃষ্টির কাছ থেকে তিনি প্রশংসা ও ধন্যবাদ আশা করেন৷

নির্মাণ কাজ ও এর উদ্দেশ্য যখন খোদা সুসম্পন্ন করলেন, তখন তিনি বিশ্রাম নিলেন৷ কাজ করে করে যে তিনি ক্লান্ত হলেন তা নয়, কেননা সর্বশক্তিমান প্রভু কান্ত হন না, তিনি তন্দ্রায় ঝিমুতে থাকেন না, বরং তার সৃষ্টিতে তিনি হন সন্তুষ্ট, আনন্দ করেন, উল্লাসিত হন, অগণিত আশ্চর্য সৃষ্টি তিনি নির্মাণ করেছেন আর সবগুলো উত্তম দেখতে পেলেন৷ আমাদের উচিত নিত্যদিন তাঁর প্রশংসা করা এবং বিশেষ করে প্রভুর দিনে সৃষ্টির মাঝে তাঁর অগণিত কুদরতের প্রকাশের জন্য৷


০৬.২ - বিশ্রামবারে বিশ্রামের প্রয়োজন

বিশ্রামবারে খোদার সাথে আমরাও বিশ্রাম নিতে পারি কেননা খোদা তেমনভাবে ব্যবস্থা করে রেখেছেন৷ তিনি আমাদের জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন প্রার্থনা ও নীরব ধ্যানের জন্য৷ আমাদের প্রবৃদ্ধির জন্য ভিতরে ও বাহিরে এ ধরণের নিরবতা বড়ই জরুরী৷ খোদার এ হুকুম যেই লঙ্ঘন করে সেই হয় দন্ডপ্রাপ্ত৷ প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো জাতি অথবা প্রাশ্চের প্রকাণ্ড বহুজাতিক কোম্পানিগুলো মনের শান্তি হারিয়ে বসেছে প্রভুর দিনকে তুচ্ছজ্ঞান করতে গিয়ে৷ যারাই এ দিনকে এড়িয়ে চলে, দুর্দান্ত গতিতে ছুটে চলে আপন গতিতে, তারা প্রভুর সৃষ্টির গৌরব ও মহিমা বুঝতে হয় অসমর্থ৷ ধ্যান করার ক্ষমতা তারা হারিয়ে বসেছে, আর ফল স্বরূপ গোটা সপ্তাহে সমস্ত কর্মে তারা চরমভাবে ভোগতে থাকে৷ প্রত্যেকের, বিশেষকরে পশুপাখীরও বিশ্রামের প্রয়োজন৷ সৃষ্টি তার শক্তির পুনর্জাত করতে পারে না প্রভুর সাথে নীরব ধ্যান না করে৷ সকলকে জানতে হবে, প্রভু তার দ্বারা কী চান৷ বিশ্রামবারকে প্রার্থনার জন্য আলাদা করার হুকুমকে আমরা অমান্য করতে পারি না৷ আমরা দেখতে পাই, সপ্তাহে ৩৫/৪০ ঘন্টা কাজের কথা তিনি বলছেন না৷ তবে ছয় দিন কঠোর পরিশ্রম করতে হবে৷ সপ্তম দিন সম্পূর্ণভাবে প্রভুর জন্য আলাদা করে রাখতে হবে৷ কিতাবুল মোকাদ্দাস শিক্ষা দেয় অলস জীবন সর্বপ্রকার খারাপ বিষয়ের প্রবেশ দ্বার৷ আর নিত্যদিন কাজ ব্যক্তি জীবনে বড়ই উপকারী৷

মসিহ আমাদের উত্‍সাহিত করেছেন, যেন মাঝে মধ্যে বনের, মাঠের পুষ্পগুলো নিয়ে চিন্তা করি, বিমোহিত হই, কি করে ওগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ আপনি কি লক্ষ্য করেছেন একটি পুষ্প কতটা সময় নেয় প্রষ্ফুটিত হবার জন্য, পাতাগুলো বৃদ্ধিলাভের জন্য যতক্ষণ না তাতে ফল আসে? একটু দাঁড়ান এবং চোখ খুলুন৷ প্রকৃতির শক্তি ও নিয়ম বুঝতে চেষ্টা করুন৷ তখন বুঝতে পারবেন সবকিছুর পিছনে রয়েছে বিজ্ঞ নির্মাতা এবং পিতৃসুলভ কল্যাণকর চিন্তা৷ মসহি আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন, আমরা যেন ফুলের চমত্‍কার সৌন্দর্য অবলোকন করি, কোনো রাজা বাদশা এমনভাবে নিজেদের সাজাতে পারে না, তারা নিজেদের যতোই চমত্‍কাররূপে সাজাতে চান না কেন, মাঠের যে ঘাসফুল রয়েছে, যা আজ আছে আর কাল তা ঝরে যাবে তা যখন প্রভু এতটা সুন্দর করে সাজান, তার মত কি কেউ সুসজ্জিত হতে পারে? সৃষ্টির মধ্যে, আর তার মুখমন্ডলে প্রকাশ পায় খোদার মহিমা৷ আমরা কেবল আমাদের জীবন প্রণালী বদলাতে থাকি, থামুন, দৌড়ঝাপের প্রয়োজন নেই, ধ্যান করার জন্য একটু সময় নিন৷ মানুষ হলো সর্বোত্তম সৃষ্টি৷ খোদার সকল সৃষ্টি নিয়ে আমরা যখন বিবেচনা করি, তখন আমরা খোদার মনমুগ্ধকর অত্যাশ্চর্য সৌন্দর্য দেখে খোদার গৌরব ও প্রশংসা করতে উত্‍সাহ পাই৷ দুর্ভাগ্যবশত কতগুলো অপছন্দনীয় টেলিভিশন প্রোগ্রাম যা যৌনাচারের ছবি দেখায়, তা থেকে প্রভু চাচ্ছেন আমাদের হৃদয়ের চোখ খুলে যেন দেখতে পাই বসন্ত, গ্রীষ্ম, হেমন্ত এবং শীত কালে নতুন নতুন আশ্চর্য জিনিষ উপহার দিচ্ছে এবং তাতে কতই না জমা আছে৷

বিশ্রামবার পালন করার কথা প্রভু যখন বলেন, তার অর্থ হলো এই দিনটিকে আমরা আলাদা করে রাখি, অন্যান্য দিনের মতো জাগতিক কাজে ব্যয় না করে খোদার সৃষ্টি রহস্য এবং তার মহিমা নিয়ে যেন ধ্যান করতে পারি৷ এই দিনটিকে আলাদা করার অর্থ এই নয় যে, কেবল বিশ্রাম করবো, কিতাব পাঠ করবো বরং আমরা যেন তার দিকে ফিরে আসি, তাকে সুযোগ দেই আমাদের জীবন পরিবর্তন ও তাঁর মহিমায় ভরাট করে দিতে৷ তিনি পবিত্র, আর আমারও যেন পবিত্র হই তাই তিনি চাচ্ছেন৷ আসুন, তার প্রেমে নূরের রাজ্যে পদার্পণ করি, ফলে তাঁর মহিমা ও মহব্বতের প্রতিফলন ঘটে আমাদের মধ্যদিয়ে৷ নীরবতা ছাড়া নবসৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়৷


০৬.৩ - বিশ্রামবার নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা

নবীদের যুগে খোদার পথ থেকে যাতে বিশ্বাসীকুল সরে না যায় সেজন্য বিশ্রামবার দেয়া হয়েছে, তাছাড়া তাদের চারপাশে বহুদেবতার পূজারীদের মধ্য থেকে বিশ্বাসি ভাইদের রক্ষাকল্পে রয়েচে এর ভূমিকা৷ বিশ্রামবারের উপর ধ্যান মননের ফল বিশ্বের নাজাতদাতা মসিহের আগমনের জন্য প্রস্তুতি নেয়াও হচ্ছে, তথাপি বিশ্রামবা নিজে এর পালনকারীদের পরিবর্তন, প্রতিরক্ষা ও নতুন হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষমতা রাখে না৷ খোদার সাথে মানুষ দুর্বল, খারাপ এবং বেজায় ঘাটতিতে পূর্ণ৷ কোনো আইনকানুন মনুষ্যত্বকে পরিবর্তন করতে পারে না, বিশ্রামবারও মানুষের মধ্যে পাপ ও এর প্রবণতা দূর করার ক্ষমতা রাখে না৷ তবে এ ব্যবস্থা অবিশ্বাস থেকে রক্ষা করতে পারে৷ ইঞ্জিল শরীফে বর্ণিত মসিহের মাধ্যমে খোদার সাথে যে চুক্তি স্থাপিত হয়েছে তাতে আমরা খোদার রহমত কামনা করার জন্য বিশ্রামবার পালন করি না বরং তাকে ধন্যবাদ দেবার জন্য; কেননা তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন৷ তিনি মানবরূপ ধারণ করে মসিহের মাধ্যমে আমাদের কাছে নেমে এসেছেন, আর জাগতিক পিতার চেয়ে অনেকগুণে আমাদের যত্ন নিচ্ছেন৷ এ কারণে আমরা তাকে মহব্বত করি ও সম্মান প্রদর্শন করি৷ শরিয়ত আমাদের পাপযুক্ত করার ক্ষমতা রাখে না কিন্তু খোদার রহমতের মধ্যে রয়েছে আমাদের নাজাত ও নতুনভাবে সৃষ্টি করার সকল রহস্য৷ শরিয়ত পালনের মাধ্যমে যে কেউ ন্যায়বান হতে চায়, উক্ত শরিয়ত তাকে দোষী বলে সাব্যস্ত করিবে৷ কিন্তু আপনি যদি আপনার হাত বাড়িয়ে দেন মসিহের প্রসারিত হাতের দিকে, তবে তিনি আপনাকে সুরক্ষা করার ও পরিচালনা করার ক্ষমতা রাখেন আর সকল অভিযোগ থেকে মুক্তি দেবার জন্য৷

সপ্তদিনে খোদা তাঁর সকল নির্মিত সৃষ্টির দিকে নজর দিলেন আর বিশ্রাম নিলেন৷ তিনি দেখতে পেলেন সবকিছু বড়ই সুন্দর হয়েছে৷ মানুষের অবাধ্যতা, পাপ ও পতনের ফলে খোদার বিশ্রাম খতম হয়ে গেল৷ খোদা বিশ্রাম বন্ধ করে দিবানিশি কাজ করে চললেন, যেন তার বিনষ্ট বিভ্রান্ত সৃষ্টি রক্ষা করে চলতে পারেন৷ তিনি বলেছেন, 'তোমরা তোমাদের পাপের কারণে আমাকে ক্লান্ত করে দিয়েছে' (ইশাইয়া ৪৩:২৪)৷ মসিহ এ বক্তব্য সমর্থন করলেন, 'আমার পিতা সব সময় কাজ করছেন, তাই আমিও করছি' (ইউহোন্না ৫:১৭)৷ খোদা গভীরভাবে উপলব্ধি করেন আমাদের অবস্থা এবং পাপের সংশ্লিষ্টতা, কিন্তু আমরা খোদাকে ধন্যবাদ দেই, তিনি আমাদের বিকল্প মসিহের কোরবানির দ্বারা সকল গুনাহগারদের মুক্ত করেছেন৷ যে কেউ খোদার মেষের উপর বিশ্বাস রাখে, তাকে আর বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে না, বরং মসিহের বেগুনাহ রক্তের মূল্যে সম্পূর্ন বেগুনাহ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে৷ বিশ্রামবারের ঠিক পূর্বমুহুর্তে মসিহকে দেয়া হয়েছে কোরবানি ও কবর দেয়া হয়েছে তিনি কবরে বিশ্রাম নিলেন যে দিন খোদা অর্থাত্‍ তাঁর পিতা বিশ্রাম নেন৷ সপ্তাহের প্রথম দিনে মৃতু্য থেকে তিনি পুনরায় জীবিত হয়ে ওঠলেন৷ এভাবে খোদা বিশ্রামবারের শর্ত পুরন করলেন৷ মসিহের পুনরুত্থানের মধ্য দিয়ে তিনি একটা নতুন নিয়মের সুচনা করলেন যা নতুন সৃষ্টির দৃষ্টান্ত স্বরূপ, যা কেবল রহমত ও পাক রূহের শক্তিতে হয়ে থাকে অর্জিত, শরিয়তের দ্বারা অর্থাত্‍ শরিয়ত পালনের দ্বারা তা আদৌ সম্ভব নয়৷


০৬.৪ - শনিবারের পরিবর্তে রবিবার বিজয় উত্‍সব করার অধিকার মসিহিদের কি রয়েছে?

ইহুদি ও সেভেন্টডে এডভেন্টিস্ট সমপ্রদায় মসিহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এ বলে যে তারা চতুর্থ আজ্ঞা লঙ্ঘন করে চলে, আর এ কারণে তাদের ওপর শাস্তি বর্ষিত হবে৷ তারা শনিবারের পরিবর্তে রবিবার প্রভুর দিন বলে উদযাপন করে৷ আমাদের পক্ষ হয়ে মনুষ্যপুত্র (ঈসা মসিহ) বিশ্রামবারের দাবি দাওয়া পূর্ণ করেছেন৷ তিনি বিশ্রামবারকে পূর্ণতা দিয়েছেন এবং নিখুঁতভাবে পরিপূর্ণ করেছেন৷ বিশেষ মাস, বছর বা দিনকে পবিত্র করার জন্য মসিহ কোনো আইন বা আজ্ঞা দান করেন নি৷ তিনি তার অনুসারীদের পবিত্র করেছেন, নাজাত দিয়েছেন৷ কেবল মাত্র বিশ্রামবারে বা বিশেষ বিশেষ দিনেই খোদার এবাদত বা উপসনা করা উচিত্‍ নয় বরং প্রত্যেকদিন, প্রতিটি মুহুর্তে তার প্রশংসায় থাকতে হবে মশগুল, ধন্যবাদ প্রাথর্ী৷ এ কারণে মসিহ, ব্যক্তিকে নাজাত ও আলাদা করেছেন, কোনো দিনকে নয়৷ 'তোমরা যা কিছু বল বা কর না কেন তা হযরত ঈসা মসিহের নামে কোরো এবং তাঁর মধ্য দিয়েই পিতা আল্লাহকে শুকরিয়া জানাও৷' পাকরূহের পরিচালনায় আমরা যেকোনো কাজ করি না কেন তাই খোদার এবাদত সেবা বলে গণ্য৷ কোনো এক দিন অন্য দিনের চেয়ে কম গুরুত্ববহ নয়৷ মসিহ আমাদের ন্যায়বান করেছেন তাঁর পূতপবিত্র মহামুল্যবান রক্তের মূল্যে, আর পাকরূহের দ্বারা করেছেন নতুনভাবে সৃষ্টি৷ তিনি পবিত্র লোক সৃষ্টি করেছেন পবিত্র দিন-ক্ষণ নয়৷ ধরাপৃষ্টে তাঁর আগমনের কারণ হলো নতুন মানুষ সৃষ্টি করা, দুষ্ট পাপাত্মা পরিবর্তন করে সাধুসন্তে তাঁর যোগ্য অনুসারী হিসেবে গড়ে তোলা এবং স্বার্থান্ধদের নিঃস্বার্থ সেবক হিসেবে গড়ে তোলা যা বিশ্রামবার পালনের দ্বারা আদৌ সম্ভবপর ছিল না, না সম্ভব হয়েছে শরিয়তের দ্বারা৷

মসিহ আমাদের রুহানি জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছেন৷ শুকরিয়া, আনন্দ, ধন্যবাদ ও প্রার্থনার জন্য মসিহিগণ রোববারকে বেছে নিয়েছেন, কেননা মসিহ হয়েছেন এদিনে পুনরুত্থিত, করেছেন প্রবর্তন এক নতুন চুক্তির, যা কেবল রহমতের দ্বারা লভ্য হয় নাজাত, কর্মে সম্ভব নয়৷ মসিহ কিন্তু তাঁর সাহাবিদের বিশ্রামের বিষয়ও ভেবেছেন, যেন সপ্তাহে তারা একদিন বিশ্রামের জন্য আলাদা করে রাখে, ঐদিন তাদের প্রতি যে সুযোগ, রহমত অধিকার প্রদান করা হয়েছে গোটা সৃষ্টির সাথে ঐশি সত্ত্বার একিভুত হবার, তা নিয়ে যেন তারা ভাবতে পারেন৷ রোববার পালনের জন্য তিনি কোনো আজ্ঞা আমাদের উপর চাপিয়ে দেন নি৷ তিনি বিশ্রামবার পালনের বিরুদ্ধেও কোনো হুকুম দেন নি৷ কোনো দিন বা বিশেষ কোনো উত্‍সব থেকে তিনি আমাদের বিরত থাকতে আজ্ঞা বা নিষেধ করেন নি বরং গুনাহগারদের নাজাত করার জন্য তিনি এসেছেন৷ মসিহের পুনরুত্থানের দিনটি বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে এ কারণে, ঐ পুনরুত্থানের মাধ্যমে গুনাহগারদের দেয়া হয়েছে মুক্তি, যাতে আর তারা ভারি বোঝার মত শরীয়তের চাপে পিষ্ট না হয়ে খোদার রহমতের মধ্যে স্বাধীন জীবন যাপন করতে পারে৷ তার অর্থ এ হবে না যে মসিহিগণ বেআইনি জীবন যাপন করে৷ পাকরূহ আমাদের মধ্যে বসবাস করেন এবং তিনি আমাদের আমাদের মধ্যে বসবাস করেন, পাকরূহ হলেন নিয়ম-কানুনের মালিক বা প্রণেতা এবং রুহানি জীবন পূর্ণভাবে যাপন করার জন্য এ রূহ আমাদের মধ্যে শক্তি সমর্থ যোগান দেন৷ পুরাতন চুক্তিতে বিশ্রামবার যেমন একটি বিশেষ ধার্যকরা দিন ছিল, রোববার তদ্রুপ মসিহের বিজয়, পুনরুত্থান ও নতুন চুক্তির দিন হিসেবে দেদীপ্যমান৷

ইসলামিক দেশ সমূহে মসিহিগণ রোববার বিশ্রামের দিন হিসেবে পালন করতে পারে না৷ তাই শুক্রবার তারা একত্রিত হয় এ ভেবে যে প্রভু সদাসর্বদা তাদের সাথে উপস্থিত রয়েছেন৷ তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, 'কারণ যেখানে দুই বা তিনজন আমার নামে জমায়েত হয় সেখানে আমি তাদের মধ্যে উপস্থিত থাকি৷' এবাদত বন্দেগির জন্য মসিহ একটি বিশেষ দিনকে আলাদাভাবে নির্ধারিত করেন নাই বরং ঈমানদারদের পূতপবিত্র করেছেন সর্বত্র, সর্বপরিস্থিতিতে এবং সবসময়৷


০৬.৫ - রোববার উদযাপন

মসিহিগণ কী করে প্রভুর দিনটি উদযাপন করেব? মহব্বতই তাদের অনুপ্রানীত করে সহভাগিতায় একত্রিত হবার জন্য, কিতাবপাঠ ও সাধুসন্ত মিলে গুণগানে মুখরিত থাকার জন্য৷ আমাদের শিশুরা, মেহমানগণ, সহকমর্ীবৃন্দ এমনকি আস্তাবলের প্রাণীকুল মনে হয় বিশ্রামের দিনে উদযাপনরত অবস্থায় আছে, ঐশি পুনরুত্থানের আনন্দে আনন্দরত এবং একই আনন্দ আমাদের প্রত্যেকের জীবনে বাস্তবরূপ লাভ করে আমাদের করে তুলছে উত্‍ফুল্ল৷ ইহুদিদের আনন্দ উত্‍সের চেয়ে মসিহিদের আনন্দের উত্‍স সম্পূর্ণ ভিন্ন৷ মসিহ বলেছেন, 'এইসব কথা আমি তোমাদের বললাম যেন আমার আনন্দ তোমাদের অন্তরে থাকে ও তোমাদের আনন্দ পূর্ণ হয়৷' 'এখন আমি তোমার কাছে আসছি, আর আমার আনন্দে যেন তাদের দিল পূর্ণ হয় সেই জন্য দুনিয়াতে থাকতেই এই সব কথা বলছি৷' হযরত পৌল অবশ্য লিখেছেন, 'প্রভুর সঙ্গে যুক্ত হয়েছ বলে তোমরা সব সময় আনন্দিত থাক৷ আমি আবার বলি, তোমরা আনন্দিত থাক৷' 'কিন্তু পাক-রূহের ফল হল- মহব্বত, আনন্দ, শান্তি, সহ্যগুণ, দয়ার স্বভাব, ভাল স্বভাব, বিশ্বস্ততা, নম্রতা ও নিজেকে দমন৷' এসকল আয়াতগুলো উত্‍কষ্ট প্রেষণা যোগায় রোববারের সহভাগিতার সভায়৷ ঐ দিনে পুরো সপ্তাহের কাজকর্ম চিন্তা চেতনার প্রতিফলন ঘটায়৷ মসি িপরিবারে জীবন যাপন কেমন হওয়া উচিত তা প্রকাশ করে৷

রোববার কি আমাদের কাজকর্ম করা উচিত? অন্যান্য লোকের মত মসিহিগণ সাধারন মানুষ৷ তাদের ক্লান্ত হবার মত শরীর রয়েছে৷ সে কারণে তাদের প্রয়োজন রয়েছে বিশ্রামের ও আরামের৷ তারা সাধারণ সৃষ্টি কিন্তু রুহানিস্তরে তারা খোদার সন্তান৷ পৃথিবীতে তারা মাংসিক জীবন যাপন করেন, আর মসিহের সাথে থাকেন বেহেশতে সমাসীন৷ প্রভুর দিনে তারা বিশ্রামবারকে অস্বীকার করে না৷ রোববার আসলে ঘুমের মধ্যে কাটিয়ে দেবার জন্য দেয়া হয় নি, বরং ঐ দিন প্রভুর গুণকীর্তন, প্রশংসা ও প্রার্থনার জন্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে৷ এ দিনটি প্রভুর দিন তাই আমরা নিষপ্রয়োজনে দৌড়ঝাপ, কাজকর্ম করতে পারি না৷ তবে এও ঠিক, কাওকে সাহায্য করা, বিপন্ন অবস্থা থেকে রক্ষা করা ও মানুষের কল্যাণজনক কাজকে অস্বীকারও করা উচিত্‍ হবে না৷ আমাদের ধার্মিকতা শরিয়ত পালনের দ্বারা বা পরিপূর্ণতার ফলে অর্জিত নয়৷ তা নির্ভর করে কাফফারা সাধনকারী মসিহের আত্মকোরবানির ফলে, যিনি প্রতিনিয়ত আমাদের হৃদয়ে ঢেলে চলছেন ত্যাগ ও মহিমার প্রেরণা৷ জনসভায় হাজির হওয়া ও প্রার্থনা সভায় মিলিত হওয়া মসিহিদের জন্য অপূর্ব সুযোগ তবে শুধু রোববারই যে রুহানি খোরাক গ্রহণ করবে তাই নয়, নিত্যদিন তাদের খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন, নতুবা বিশ্বাস, আশা ও মহব্বত দুর্বল হয়ে পড়বে৷ রোববার সমাজে একসঙ্গে সকলের সাথে মিলেমিশে প্রার্থনা করা তথা সকল সদস্য-সদস্যাদের সাথে জানাশোনা উত্‍সাহ উদ্দীপনা দান ও মসিহি ভ্রাতৃত্বের বাধনে নিবেদিত থাকার এক অপূর্ব সুযোগ বয়ে আনে এই দিন৷ সকল ইমানদার ভাই-বোন একত্রে মিলে মসিহের দেহে হয় পরিণত৷ ব্যক্তিগতভাবে নবজন্ম লাভ একমাত্র মসিহের উদ্দেশ্য নয় বরং নবজন্মপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে একটা সহভাগিতা সৃষ্টি করাই হলো এর প্রধান লক্ষ্য৷ সমস্ত বিশ্বাসিকুল মিলেমিশে হলো মসিহের পরিবার৷ ইমানদারদের মিলন ও ভ্রাতৃত্বের মধ্য দিয়ে ঐক্য দৃষ্ট হয়ে থাকে রোববারে৷

তারা আশির্বাদপ্রাপ্ত যারা রোগী, পঙ্গু ও গরীবদের দেখাশুনা করে রোববারে৷ ঐ ইমানদার ব্যক্তিরা তাদের গাড়ির গ্যাসের মাপ পরীক্ষা করে না শত কিলোমিটার যাবার জন্য৷

পাকরূহ আমাদের প্রেরণা যোগায়, পাপেমৃত ব্যক্তিদের নিয়মিত তদারকি করার জন্য৷ আমাদের উপর দায়িত্ব রয়েছে, পরিচালনা করে তাদের মসিহের কাছে পৌছে দেবার, অনুতপ্ত হবার, যাতে তারা পাপের কবলে মৃতাবস্থা থেকে জীবিত হবার, আর হৃদয়ের কঠোরাবস্থার পরিবর্তে কোমল হৃদয়ে হতে পারে পরিণত৷ মসিহের স্বার্থে অবিস্বাসিদের সংগ না দেয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না৷ দাতব্য সেবা প্রদানের জন্য আমাদের ডাকা হয়েছে৷ প্রভুর দিনে আমরা যেন বঞ্চিত, হতভাগ্য, অভাবি লোকদের কল্যানকর কাজে আসতে পারি৷ রোববার আমাদের হাতে যথেষ্ঠ সময় থাকে প্রভুর সাথে সংগ দেবার জন্য, আমাদের জীবনের ঘাটতি পুরনের জন্য তথা অন্যের জন্য সুপারিশ করার লক্ষ্যে৷ যদি আমাদের সন্তান সন্তুতি থাকে তবে তাদের নিয়ে প্রার্থনা, ধমর্ীয় গান, বাক্যের আলোচনা করে সময় কাটানো হবে সঠিক পদক্ষেপ৷ প্রভুর কাছে আমাদের জানতে হবে, প্রভুর প্রার্থনার প্রথম তিনটি বিষয় কি করে পূর্ণ করতে হবে৷

আমরা যদি রোববার উদযাপন করি তবে আমরা হবো আশির্বাদপ্রাপ্ত৷ প্রত্যেকে মসিহের পুনরুত্থানের দিনে অর্থাত্‍ রোববারে পুনরুত্থিত হতে চায় নিজ নিজ বিষন্নতা থেকে৷


০৬.৬ - রোববার কলুষিত করন

দুঃখজনক হলেও সত্য, সপ্তাহের অন্যান্য দিনের চেয়ে সপ্তাহের শেষ দিন পাপ কর্ম সংঘটিত হয় সবচেয়ে বেশি৷ রোববার গাড়ি নিয়ে শহরতলিতে চলে যায়৷ প্রভুর বাক্য প্রচারে খুব অল্প সময় ধার্য করে টেলিভিশনে, আর অধিক সময় দেয় ভীতিকর ছবিতে ও আপত্তিজনক যৌনচারের ছবিতে, তাছাড়া মিথ্যা দেবতাদের নিয়ে ছবির জন্যও সময় দেয়৷ রোববারে কেউবা নিজগৃহে বসে কাজকর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়ে৷ বাগান বাড়িতে, খোয়াড়ে, যা সপ্তাহের অন্যান্য দিন করতে পারে৷ নবীদের সময়, বিশ্রামবারে কাজকর্ম করার সময় যদি কেউ ধরা পড়ত, তবে তার হতো মৃতু্যদন্ড৷ সপ্তাহের শেষ দিনে যে সকল পাপের কাজে মানুষ জড়িয়ে পড়ে, কোনো এক বিশেষ শহরে, জনসমক্ষে ও গোপনে, তা যদি দেখতে পেতাম , তাহলে আমাদের হৃদয় ভেঙ্গে যেতো অথবা আমরা পাগল হয়ে পড়তাম৷ কেবল খোদার মহব্বত অসীম ধৈর্যের অধিকারী বিধায়, দীর্ঘসহিষ্ণুতার সাথে পাপীর মন পরিবর্তনের অপেক্ষায় আছেন৷

আপনি কি ভুলে গেছেন যারা তার বিশ্রামের দিনকে কলুষিত করে, তাদের বিষয়ে মাবুদ কি বলেছেন? হিযতর পুস্তক পাঠ করলে দেখা যাবে, (হিযরত ৩১:১৪-১৭) আমরা বুঝতে পারি কতই না গুরুত্ববহ খোদার সামনে নীরব হওয়া৷ গণনা ১৫:৩২-৩৬ তাঁর দিনেকে পবিত্র রাখার গুরুত্ব কতোটা৷ সম্ভবত: আমাদের জীবন প্রণালী পরিবর্তন করা আবশ্যক এবং আমাদের ছাত্রদের বলে দেয়া প্রয়োজন রোববারে বাড়ির কাজ না করা৷ বিশ্রামবার পালন না করার কারণে খোদা শহর ও গ্রাম জ্বালিয়ে ছেড়েছেন (জেরোমিয়া ১৭:২২)৷ এ সকল হুশিয়ারীতে আত্মতুষ্ট হবার প্রয়োজন নেই৷ কে জানে বিশ্ব বিরোধ করে ফিরছে এবং মারাত্মক দৈব দুর্যোগগুলো এ বিরোধীতার প্রতিফল কি না? কিতাবুল মোকাদ্দস বলছে, 'তোমরা ভুল কোরো না, আল্লাহর সংগে তামাশা চলে না; কারণ যে যা বুনবে সে তা-ই কাটবে৷' খোদার হুকুম লঙ্ঘন করে কেউ বাঁচতে পারে না৷

মসিহ আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত বহন করে সলিবে যদি প্রাণ কোরবানি না দিতেন তবে আমাদের কোনই আশা থাকতো না৷ কিন্তু তাঁর কোরবানি আমাদের জন্য কোনো অযুহাত হতে পারে না তার পবিত্র দিনটিকে কলুষিত করার জন্য৷ মসিহ এবং তাঁর সাহাবিগণ সদা-সর্বদা প্রভুর দিনকে পূতপবিত্র রেখেছেন, তার জীবন-যাপন ছিল পিতার মহিমা প্রকাশ করা৷ সপ্তাহের প্রথম দিন তার পুনরুত্থানের পরে সাহাবিদের সাথে পুনরুত্থানের ভোজের উদযাপন করার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন৷


০৬.৭ - শরীয়ত বিষয়ে একটি নতুন ধারণা

বিশ্রামবার অন্যায়ভাবে উদযাপন করার বিষয়ের চেয়ে আমরা দেখব, কীভাবে কত সহজে খোদার এ শরিয়তের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়৷ বিশ্রামবারে মসিহ রোগীদের সুস্থ করে তোলার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে মৃতু্যদন্ড দেয়া হলো, তাছাড়া তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন যে তিনি খোদার পুত্র৷ তদানিন্তন ধর্মনেতারা তাকে আক্রমন করেছিল মুসা নবীর শরীয়তের অনুরাগী হিসেবে, যারা ইতোপূর্বে খুইয়ে বসেছিল খোদা ও মানুষের প্রতি প্রেম অনুরাগ৷ বাহ্যত তারা নিজেদের ধার্মিক হিসেবে প্রচার করতো, আসলে তারা ছিল ভন্ডামিতে পূর্ন, অনুতাপ করে খোদার পথে ফেরার দিকে তাদের কোনো আগ্রহ ছিল না৷ তারা প্রত্যাখ্যান করেছিল পিতা, পুত্র ও পাকরূহকে৷ রোগীদের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ থাকতো না বিশ্রামবার উপলক্ষে৷ তাই ভন্ডামিপূণ কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য বিশ্রামবার উদযাপন ছিল একটা অযুহাতমাত্র৷ মসিহ যেভাবে তাদের বলেছেন তাতে আশ্চর্য হবার কিছুই নেই, 'এই লোকেরা মুখেই আমাকে সম্মান করে, কিন্তু তাদের দিল আমার কাছ থেকে দূরে থাকে৷ তারা মিথ্যাই আমার এবাদত করে, তাদের দেওয়া শিক্ষা মানুষের তৈরি কতগুলো নিয়মমাত্র৷ (মথি ১৮:৮, ৯)

প্রভুর দিনকে সঠিকভাবে পালন করার প্রকৃত শিক্ষা দেবার জন্য তিনি যে কৃচ্ছ্রতা প্রদর্শন করেছেন তা দেখা যায় বিশ্রামবারে কাজ করা বা না করার উপরে যতোটা গুরুত্বারোপ করেছেন তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন খোদার প্রতি হৃদয়ের সঠিক অবস্থানের দিকে অর্থাত্‍ সম্পূর্ণ হৃদয় মন দিয়ে আমরা খোদাকে মহব্বত করি কিনা৷ হযরত পৌল এ ধারণাকে আরো বেগবান ও পরিষ্কার করেছেন এই বলে, মসিহের মনোভাব নিয়ে শরিয়ত পালন করতে হবে৷ তবুও তাকে এ শিক্ষার জন্য অভিশাপ দেয়া হয়েছে ও পাথর মারা হয়েছে, তিনি বলেছিলে অইহুদিরা পুরাতন চুক্তি অর্থাত্‍ শরিয়ত থেকে মুক্ত৷ তিনি আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে, শরিয়তের অধিনস্থ আর আমরা নই, কেননা শরীয়তের কাছে মৃত হয়েছি আমরা৷ তাই শরিয়তের আর কোনো অধিকার নেই আমাদের উপর৷ পাকরূহ মসিহের প্রেমের দ্বারা আমাদের নিয়ন্ত্রন করে চলছেন৷ এই রুহানি নিয়ম আমাদের হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, হৃদয়কে পূতপবিত্র করেছে যা আমাদের কায়-মন-বাক্যে ও চিন্তা চেতনায় পিতা, পুত্র ও পাকরূহের প্রতি ভক্তিশ্রদ্ধা প্রকাশ করে৷ তাই আমরা আর শরিয়তের চাপে নু্যব্জ হয়ে পড়ছি না, শরিয়ত আমাদের অনুতপ্ত হতে সাহায্য করে এবং অনুতপ্ত চিত্তে পাকরূহের শক্তি কার্যকরী হয়ে থাকে৷ আমাদের মনে রাখতে হবে, পাকরূহ মানুষকেই পবিত্র করেছেন, কোন দিন তারিখ নয়৷ তাই নতুন চুক্তি ও পুরাতন চুক্তির মধ্যে মৌলিক পার্থক্য বুঝতে পারি, চতুর্থ আজ্ঞার বিষয় বস্তুর মাধ্যমে৷


০৬.৮ - মুসলমানদের জন্য শুক্রবার

মুসলিম সমপ্রদায় চতুর্থ আজ্ঞার প্রকৃত অর্থ বোঝে না বলে দাবি করে, শুক্রবার তারা প্রধান এবাদতের জন্য দিন নির্ধারণ করে রেখেছে, তবে ৪র্থ আজ্ঞার মুল বিষয় থেকে রয়েছে তারা বহু দূরে৷ ইহুদি ও মসিহিগণ মুহম্মদের 'নবুয়ত' যখন অস্বীকার করলো, তখন তিনি আর এক ধাপ এগিয়ে গেলেন, আর তিনি তাদের মুসলমান হবার দাওয়াত দিলেন৷ তিনি ইহুদিদের সাথে শনিবার বিশেষ এবাদতের দিনের সাথে যুক্ত হতে পারলেন না, না পারলেন মসিহিদের সাথে রোববার বিশেষ দিন এবাদতের জন্য মেনে নিতে৷ তার নিজের বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি পুরাতন চুক্তি ও নতুন চুক্তি দুটোই অস্বীকার করলেন, পরিবর্তে মুসলমানদের জন্য শুক্রবারকে প্রধান এবাদতের দিন বলে ধার্য করলেন৷ পাককালামে এ দিনটির বিষয়ে কোনো সমর্থন নেই, তাছাড়া নাজাতের সাথেও নয় সম্পৃক্ত এ দিনটি৷ বাস্তবে খোদার পরিকল্পনা তথা তাঁর মসিহের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ছাড়া আর কিছুই নয়৷ কিতাবুল মোকাদ্দসে শুক্রবারের সাথে কোনো সম্পর্ক দেখা যায় না৷

শুক্রবারের এবাদতের ঠিক পরক্ষণে মুসলমানগন আপন আপন কাজে ফিরে যায়৷ মসজিদের খুতবা প্রায়শই থাকে রাজনৈতিক বক্তব্যেপূর্ণ৷ বিরল ঘটনা নয়, তারা যে মাঝে মধ্যে বিদ্রোহ প্রদর্শন করে ঘৃণ্য ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের মধ্যদিয়ে৷ মুসলমি এবাদতকারীদের অদ্যাবধি অজানা রয়েছে যে বিষয়টি তা হলো খোদা কি এবাদতকারী ব্যক্তিকে পবিত্র করেন না একটি দিন পবিত্র করেন৷ আল্লাহ সম্বন্ধে তাদের ধারণা, তিনি এতই বিশাল যা তাঁর গুনাবলির বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা অসম্ভব, কেবলমাত্র তাঁর কতিপয় নামই জানতে পারে তারা৷ এ কারণেই ইসলাম পুরাতন চুক্তির স্তর থেকে অনেক নীচে অবস্থান করে৷ যতটা ঐ নিয়মগুলোর আলোকে নতুন জন্ম ও নাজাতের বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা জন্মায় নি, যা নতুন নিয়মে সহজলভ্য৷

আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই যিনি আমাদের জন্য মৃতু্য তেকে জীবিত হয়ে ওঠেছেন, তিনি আমাদের জন্য বিশ্রামবার ও অন্যান্য দিনের জন্য কুদরত প্রকাশ করেছেন৷ সপ্তাহের প্রথম দিনে তিনি জীবিত হয়ে ওঠেছেন এবং উক্ত দিনের পূর্ণ তাত্‍পর্য বিশ্লেষণ করেছেন৷ কতইনা মজাদায়ক, প্রত্যেক রোববার আমাদের জন্য মসিহের পুনরুত্থানের দিন 'একটা নতুন হুকুম.......বুঝতে পারবে তোমরা আমার সাহাবি, 'একটা নতুন হুকুম আমি তোমাদের দিচ্ছি- তোমরা একে অন্যকে মহব্বত করো৷ আমি যেমন তোমাদের মহব্বত করেছি তেমনি তোমরাও একে অন্যকে মহব্বত করো৷ যদি তোমরা একে অন্যকে মহব্বত কর তবে সবাই বুঝতে পারবে তোমরা আমার সাহাবি'৷

www.Waters-of-Life.net

Page last modified on September 25, 2013, at 08:09 AM | powered by PmWiki (pmwiki-2.3.3)